ঢাকা, বুধবার, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২২ মে ২০২৪, ১৩ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

চিড়িয়াখানায় গরমে অতিষ্ঠ প্রাণীকুল

জি এম মুজিবুর, সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০২২
চিড়িয়াখানায় গরমে অতিষ্ঠ প্রাণীকুল

ঢাকা: চৈত্র মাসের শেষের দিকে এসে সারা দেশে তাপদাহে জনজীবন হাঁসফাঁস অবস্থা। ভ্যাপসা এই গরমে কেবল মানুষের প্রাণই ওষ্ঠাগত নয়, পশু-পাখিরাও অতিষ্ঠ।

চলমান তাপদাহে পশু-পাখিরা অসুস্থ ও মারা না গেলেও, গরমে ছটফট করছে। স্বাভাবিক চলাফেরা বাদ দিয়ে ওরা নেমে পড়ছে পাানিতে, আশ্রয় নিচ্ছে ছায়ায়।  পশু-পাখিরা গরমে বেশ ক্লান্ত হয়ে পড়েছে এখানে। একটু প্রশান্তি পেতে ঘন ঘন গা ভেজাচ্ছে পানিতে। তবে পানির অবস্থা মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। ছুটির দিন শুক্রবার (৮ এপ্রিল) ঢাকা চিড়িয়াখানা ঘুরে এমন দৃশ্যই চোখে পড়ে। এ অবস্থায় পশু-পাখিদের সুস্থ রাখতে নিয়মিত স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা চিড়িয়াখানার কর্মচারীরা।

জাতীয় চিড়িয়াখানায় পরিচালকের দায়িত্বে আছেন মো. মাহফুজুল হক। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, বাঘের শরীর অনেক গরম থাকে, ওরা প্রতিদিনই দু-একবার পানিতে নেমে শরীর ঠাণ্ডা করে থাকে। সে জন্য আমরা ওই পানি তিন-চার দিন পর পর  পরিবর্তন করে দেই। কিন্তু শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় পানির রং খানিকটা হলুদ আকার ধারণ করেছে এবং প্রচুর পরিমাণে গাছের পাতাসহ নানা রকমের ময়লা ভাসছে। যাতে ধারণা হয় অনেক দিন যাবত এই পানি পরিবর্তন করা হয়নি। তাই তীব্র গরম থেকে রেহাই পেতে ময়লা পানিতেই নেমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাঁটাচলা করছে, শুয়ে থাকছে বিশ্বখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার। -ছবি: জি এম মুজিবুর

চিড়িখানায় বেলা ১১টা ৩০ মিনিটের মধ্যে পশু-পাখিদের সকালের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। তারপর পশুপাখি খাবার খেয়ে এই গরম থেকে বাঁচার জন্য ছায়া জায়গায় অবস্থান নেয়, বিশেষ করে হরিণের খাঁচায় গিয়ে দেখা মেলে ভিন্ন চিত্র। শতশত হরিণের একটিও সেটের বাইরে নেই। একটু গাছের ছায়া পেলে সেখানেই দলবদ্ধ ভাবে তারা অবস্থান নিচ্ছে গরম থেকে মুক্তির জন্য।

কর্তৃপক্ষ জানান, ৭৫ শতাংশ এলাকাই বনভূমি হওয়ায় বাইরের থেকে ২-৩ ডিগ্রি তাপমাত্রা কম থাকে ঢাকা চিড়িয়াখানায়। কিন্তু এবার উষ্ণতা মাত্রারিক্ত বেড়ে যাওয়ায় প্রচণ্ড গরমের মধ্যে প্রাণীদের প্রাণবন্ত রাখতে কিছু অতিরিক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। শুধু বাঘ নয়, সব সময় চঞ্চলভাবে চলাফেরা করা মায়াবী চিত্রল হরিণগুলো রোদের তাপ সহ্য করতে না পেরে বিশ্রাম নিচ্ছে গাছের ছায়ায়। ছবি: জি এম মুজিবুর

তীব্র গরমে স্বস্তিতে নেই পাখিরাও। তারাও নেমে পড়েছে পানিতে পায়চারি করতে। ছবি: জি এম মুজিবুর

চৈত্রের গরমে চুপ মেরে আছে মিরপুর চিড়িখানার বৃহৎ আকারের মদনটাকও।  ছবি: জি এম মুজিবুর

শুক্রবার সাতক্ষীরা থেকে চিড়িয়াখানায় পশুপাখির দেখতে আসেন মোহাম্মদ আবুল কাশেম। তিনি বাংলানিউজকে জানান, বহুদিন আগে একবার এসেছিলাম, আজ আবার বাচ্চাদের নিয়ে আসলাম। কিন্তু এমন একটা সময় এসেছি আসলে কোনো পশু-পাখি ঠিকমতো দেখতে পারছি না। কারণ প্রচণ্ড গরমে পশু-পাখি সব খাঁচার ভেতর ছায়ায় বসে আছে। সামান্য কয়েকটা পশুপাখি দেখতে পেরেছি। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এরপর আর গরমের মধ্যে আসব না। কারণ নিজেদের কষ্ট হচ্ছে, অথচ জীবজন্তু ঠিকমতো দেখতে পেলাম না। সব কষ্টই বৃথা হয়ে গেল, হাজার হাজার টাকাও নষ্ট করলাম।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, ৮ এপ্রিল, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।