ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

জেলা পরিষদে প্রশাসক নিয়োগের বিপক্ষে বিরোধী এমপিরা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০২২
জেলা পরিষদে প্রশাসক নিয়োগের বিপক্ষে বিরোধী এমপিরা -ফাইল ছবি

ঢাকা: জেলা পরিষদে অনির্বাচিত প্রশাসক নিয়োগের বিরোধিতা করেছেন বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা। পাশাপাশি প্রশাসকের মেয়াদ উল্লেখ না থাকায় তার সমালোচনাও করেন তারা।

বুধবার (৬ এপ্রিল) জাতীয় সংসদে জেলা পরিষদ সংশোধন বিল-২০২২ এর ওপর আলোচনা সময় বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যরা এর বিরোধিতা ও সমালোচনা করেন। এ সময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন।

পরে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম একটি সংশোধনী গ্রহণ করে প্রশাসকের মেয়াদ ১৮০ দিনের বেশি হবে না বলে বিলে সংযুক্ত করেন। পরে বিলটি কণ্ঠ ভোটে পাস হয়।

আলোচনায় বিরোধী দল জাতীয় পার্টির (জাপা) সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, সংবিধানে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা পরিচালিত হওয়ার কথা বলা আছে। আমার মনে হয় এই বিল পাস হওয়ার আগেই বাতিল হয়ে যেতে পারে। সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদ যদি আমলে নেওয়া হয় তাহলে এটা বাতিল হয়ে যাবে।

রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা পারিচালিত হয়। যথা সময়ে নির্বাচন দিলেই হয়ে যায়, অনির্বাচিত প্রতিনিধির দায়িত্ব দেওয়ার তো প্রয়োজন হয় না। নির্বাচন সময় মতো করলেই হয়। আমার মনে হয় নির্বাচনের দিকেই যাওয়া উচিত।

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানদের কাজ কী। তাদের কোনো কিছু করার নেই। কাজগুলো নির্দিষ্ট করে দেওয়া দরকার। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানদের কোনো মর্যাদা থাকবে না, এটা তো হতে পারে না।

জাপার পীর ফজলুর রহমান বলেন, প্রশাসক নিয়োগের কথা বলা হয়েছে, প্রশাসক কেন? প্রশাসক নিয়োগের বিধান সংবিধানের মূল চেতনার সঙ্গে বিরোধী। প্রশাসক কত দিন থাকবেন বলা নেই। পৌরসভায় নির্দিষ্ট করে দেওয়া আছে, কিন্তু এখানে কত দিন থাকবেন তা উল্লেখ নেই। একজন অনির্বাচিত প্রতিনিধিকে বসানো সংবিধানের চেতনা বিরোধী। একটি নির্বাচিত বডিকে অনির্বাচিত প্রতিনিধি দ্বারা কত দিন পরিচালিত করা হবে? এটা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে।

শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, নির্বাচন না করে কেন প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হবে? পৌরসভায় মামলার বিষয় আছে সেই কারণে প্রশাসকের বিষয়টি হয়তো আসে। কিন্তু জেলা পরিষদের তো কোনো মামলা হয়নি বা হবে না।

বিএনপির হারুনুর রশীদ বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্রশাসকের বিধান রাখা হয়েছে। উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ আছে। জেলা পরিষদের কাজ কী? এটা দুর্নীতির আখড়া। এর কাজ কী? সরকার মনে করছে এখানে নির্বাচিত বডির দরকার নেই। সরকার বুঝেই এটা করেছে। এই আইনটি ত্রুটিপূর্ণ। যারা সদস্য হবেন তাদের কাজ কী? সরকার জেলা পরিষদকে কার্যকর প্রতিষ্ঠান করতে চাইলে নতুন করে আইন আনতে হবে।

এরপর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, সরকার গণতন্ত্রের প্রতি সম্মান জানাতে সবসময় জনপ্রতিনিধিদের গুরুত্ব দেয়। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করতে সরকার কাজ করছে। এই আইনের মাধ্যমে জেলা পরিষদের সঙ্গে পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদের সংযোগ ও কাজের সমন্বয় ঘটবে।

মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, পৌরসভা বিল পাসের সময় বলেছিলাম, সব পৌরসভায় প্রশাসক নিয়োগ হয় না। অনেকে মেয়াদ শেষ করার পরে একটা মামলা করেন। ২০ বছর ধরে বসে থাকেন। সেটা যাতে না হয়, সেজন্য প্রশাসক নিয়োগ। এটা থাকলে কারও মামলা করার ইনটেনশন হবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘন্টা, এপ্রিল ৬, ২০২২
এসকে/এমএমজেড

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।