ঢাকা, রবিবার, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ১২ মে ২০২৪, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

সুস্থ হয়ে দেশে ফিরলেন মানসিক ভারসাম্যহীন পাঁচ বাংলাদেশি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০২২
সুস্থ হয়ে দেশে ফিরলেন মানসিক ভারসাম্যহীন পাঁচ বাংলাদেশি ফেরত আসা বাংলাদেশিরা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় বিভিন্ন সময়ে ভারতে আটক হওয়া তিন নারীসহ পাঁচজন বাংলাদেশি সুস্থ হয়ে দেশে ফিরেছেন।

শুক্রবার দুপুরে (১ এপ্রিল) ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে তারা বাংলাদেশ প্রবেশ করেন।

দেশে ফেরত আসা বাংলাদেশিরা হলেন- চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপেজলার সন্তোষ দেব, নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপেজলার বিজয় চুন্নু, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপেজলার ময়না বেগম, পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপেজলার রোজিনা বেগম এবং কুমিল্লার চান্দিনা উপেজলার কুলসুম বেগম।

ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সহযোগিতায় তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এসময় আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের পক্ষ থেকে তাদের জরুরি সহায়তা হিসেবে খাবার, কাউন্সেলিং সেবা ও নগদ ১০ হাজার টাকা করে অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়।  

ব্র্যাক মাইগ্রেশন কর্মসূচি প্রধান শরিফুল হাসান ও আখাউড়া উপেজলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার এসব তাদের হাতে তুলে দেন।  

ভারত থেকে ফিরে আসা ব্যক্তিদের নথিপত্র সূত্রে জানা গেছে, এই পাঁচ বাংলাদেশি মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে বিভিন্ন সময়ে আটক হন। এরপর আদালতের নির্দেশে আগরতলার নরসিঙ্গর এলাকার মডার্ন সাইকিয়াট্রিক হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। সুস্থ হওয়ার পর তাদের নাগরিকত্ব যাচাই করা হয়। এরপর স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী যোগাযোগ করে তাদের দেশে ফেরার জন্য ভারত সরকারের অনাপত্তি সংগ্রহ করে আগরতলার সহকারী হাইকিমশন।  

ভারত ফেরত বাংলাদেশিদের হস্তান্তরের সময় ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের কর্মকর্তাবৃন্দ, আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার, বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের কর্মসূচি প্রধান শরিফুল হাসান, স্বেচ্ছাসেবক সৈয়দ খায়রুল আলম এবং পাচার হওয়াদের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।  

আগরতলা-আখাউড়া স্থলবন্দরে তাদের ভারত থেকে গ্রহণ করার সময় ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদ, প্রথম সচিব আসাদুজ্জামান ও রেজাউল হক, আখাউড়া উপেজলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম, ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু বকর, বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের কর্মসূচি প্রধান
শরিফুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।  

সরেজমিন আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন পর তাদের পেয়ে পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। হারানো বাবাকে পেয়ে ছেলে বুকে জুড়িয়ে ধরে অঝরে কাঁধছেন। নয় বছর পর হারানো মাকে পেয়ে ছেলের সব কষ্ট যেন মুহূর্তেই চলে গেছে।  

ভারত থেকে ফেরত আসা ময়না বেগমের ছেলে মনির হোসেন বলেন, প্রায় নয় বছর আগে আমার মা বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। এরপর আর ফিরে আসেনি। আত্মীয় স্বজন ও বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধ্যান পাইনি। এরপর থেকেই আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। সপ্তাহখানেক আগে সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পারি আমার মা ভারতে ত্রিপুরা রাজ্যে একটি হাসপাতালে আছেন। পরে যোগাযোগ করে আজকে মাকে নিতে এসেছি।

পটুয়াখালী জেলা থেকে আসা থেকে রোজিনা বেগমের ভাই বলেন, আমার বোন এক যুগ আগে হারিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করে আমরা আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম হয়তো জীবিত নেই। কয়েকদিন আগে পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারলাম আমার বোন ভারতের আগরতলায় আছে। পরে যোগাযোগ করে আখাউড়া স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশনে এসে আমার বোনকে ফিরে পেয়েছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।