ঢাকা, বুধবার, ৩১ চৈত্র ১৪৩১, ১৫ মে ২০২৪, ০৬ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

আনসার ব্যাটালিয়ন আইনের খসড়া অনুমোদন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩২ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২২
আনসার ব্যাটালিয়ন আইনের খসড়া অনুমোদন

ঢাকা: বাহিনীর মধ্যে সংঘটিত অপরাধের জন্য দুটি আদালত গঠনের বিধান রেখে আনসার ব্যাটালিয়ন আইন-২০২২ এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সোমবার (২৮ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে  শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভা শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ কথা জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বাহিনীর সদস্যরা অপরাধ করলে দুটি আদালত থাকবে- একটি সংক্ষিপ্ত আনসার ব্যাটালিয়ান আদালত, আরেকটি বিশেষ আনসার ব্যাটালিয়ান আদালত। সাধারণ অপরাধের বিচার হবে সংক্ষিপ্ত আনসার ব্যাটালিয়ান আদালতে। এসব অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। আর শৃঙ্খলা সংক্রান্ত অপরাধ বা বিদ্রোহের বিচার হবে বিশেষ আনসার আদালতে। এ আদালত সংঘটিত অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন বা ন্যূনতম ৫ বছরের জেল দিতে পারবে।

এই দুই আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য একটি আপিল ট্রাইব্যুনালও থাকবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি বলেন, ১৯৯৫ সালে একটা আনসার ব্যাটালিয়ান আইন ছিল। বর্তমান প্রয়োজনে সে আইনটি যখন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়, তখন দেখা গেল অনেক বেশি পরিবর্তন করতে হয়। সেজন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেয় এটা আর পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই, নতুন করে আনসার ব্যাটালিয়ান আইন-২০২২ প্রণোয়ন করার। এ প্রেক্ষিতেই ওনারা এটি নিয়ে এসেছেন। এখানে ৩৩টি ধারা আছে। এখানে কতগুলো বিষয় রাখা হয়েছে, যেমন মহাপরিচালক থাকবেন, সরকারের নিয়ন্ত্রণে ব্যাটালিয়ন পরিচালনা করবেন। মহাপরিচালক আইনের বিধি প্রবিধি এবং সরকারের নির্দেশনা সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আদেশ জারি করবেন। সরকার এর সাংগঠনিক কাঠামো ও পদ নির্ধারণ করে দেবে। নিয়োগ ও চাকরির শর্তও নির্ধারণ করে দেবে।

ব্যাটালিয়ানের কোনো সদস্য রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক কোনো সংগঠনের সদস্য হতে পারবেন না উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যথাযথ কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি ছাড়া কোনো ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া বা কোনো সংবাদ পত্র বা কোথাও তথ্য প্রকাশ করতে পারবেন না। আমাদের ডিসিপ্লিনারি আপিল বা অসদাচারণের জন্য যেমন দু’ ধরনের দণ্ড আছে- লঘুদণ্ড ও গুরুদণ্ড তাদের ক্ষেত্রেও সেটা হবে। বিভাগীয় মামলায় গুরুদণ্ডের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় বা বিভাগীয় সচিবের কাছে এবং লঘুদণ্ডের বিরুদ্ধে মহাপরিচালকের কাছে আপিল করা যাবে।

এছাড়া এখানে একটি বিশেষ জিনিস রয়েছে। সেটা হলো ব্যাটালিয়ানের কোনো সদস্য কর্তৃক অপরাধ সংঘটনের জন্য বিচারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এখানে দুটি আনসার ব্যাটালিয়ান আদালত থাকবে। একটি সংক্ষিপ্ত আনসার ব্যাটালিয়ান আদালত, আরেকটি বিশেষ আনসার ব্যাটালিয়ান আদালত। এটা ১৮ ধারাতে রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, সাধারণ অপরাধের বিচার হবে সংক্ষিপ্ত আনসার ব্যাটালিয়ান আদালতে। বাহিনীর অস্ত্র, গোলাবারুদ, পোষাক বা যানবাহনের যন্ত্রাংশ ইত্যাদি পরিকল্পিত ভাবে বিনষ্ট করার জন্য সংক্ষিপ্ত আদালতে সর্বোচ্চ ৩ বছরের কারাদণ্ড ও আর্থিক ক্ষতির ক্ষেত্রে সম পরিমাণ অর্থদণ্ড করা যাবে। অন্যান্য অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ৯০ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া যাবে। এটা হলো জেনারেল ক্রাইমের জন্য যেমন চুরি করা বা নষ্ট করার জন্য। আর যদি শৃঙ্খলা সম্পৃক্ত অপরাধ করে বা বিদ্রোহের চেষ্টা করে বা প্ররোচণা ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকলে মৃত্যুদণ্ড,  বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড বা কমপক্ষে ৫ বছরের জেল হবে। এটা হলো বিশেষ আনসার আদালতে। যেগুলো বড় অপরাধ সেগুলোর বিচার এখানে হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এই আইনে দুই আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগও রাখা হয়েছে। আনসার ব্যাটালিয়ন আদালত যে রায় দিবে তার বিরুদ্ধে আনসার ব্যাটালিয়ন আপিল ট্রাইব্যুনাল থাকবে। এখানে তারা আপিল করতে পারবে। এগুলো অনেকটা আর্মির কোর্ট মার্শালের মতো। তাদের বাহিনীর ভেতরে যে অপরাধ সেগুলোর জন্য। আনসারের লোক বাইরে গিয়ে মারামারি করলে বা অন্য কিছু করলে সেগুলো কিন্তু নরমাল কোর্টে বিচার হবে।

মহাপরিচালক সরকারের অনুমোদনক্রমে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর অন্যান্য পরিচালক মর্যাদার তিনজন কর্মকর্তার সমন্বয়ে সংক্ষিপ্ত আনসার কোর্ট করবে জানিয়ে তিনি বলেন, এটা মাইনর অফেন্সের জন্য। আর সরকার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের একজন, আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের একজন, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর একজন কর্মকর্তার সমন্বয়ে বিশেষ আনসার আদালত করবে। এটা গুরুতর অপরাধের জন্য।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩২ ঘণ্টা, মার্চ ২৮,২০২২
জিসিজি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।