ঢাকা, সোমবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ মে ২০২৪, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

হুইল চেয়ারে স্বাধীনতা

সাগর ফরাজী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০২২
হুইল চেয়ারে স্বাধীনতা

সাভার (ঢাকা): ৫১ তম স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবসে বাঙালীর বীর শহীদদের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা জানিয়ে চলে যাওয়ার পর থেকে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ।

এই জনসাধারণের পাশাপাশি প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে শহীদ বেদিতে ফুল দিতে এসেছেন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের এই দলটি।

শনিবার (২৬ মার্চ) সকাল ৭টার দিকে জাতীয় স্মৃতিসৌধ সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার পরই হুইল চেয়ারে করে নারী ও শিশুসহ ১৩ জন শহীদ বেদিতে এসে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

জাতীয় স্মৃতিসৌধে আসতে পেরে তাদের মুখে হাস্যজ্জ্বল প্রশান্তির ছাপ লক্ষ্য করা গেছে। যেন এক মুহূর্তের জন্য তারা ভুলে গিয়েছিলেন হুইল চেয়ার তাদের পরাধীন করে রেখেছে। মনে হয়েছে তারা স্বাধীন।

প্রতি বছর পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রের উদ্যোগে তার প্রতিষ্ঠানেই থাকা কিছু বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জাতীয় স্মৃতিসৌধ আনা হয়। এবারও প্রতিষ্ঠানটি তাদের নিয়ে এসেছেন।

১৩ জনের সঙ্গে ফুল দিতে আসা শারীরিক প্রতিবন্ধী তনন কুন্ড জয় বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য বীর শহীদরা নিজেদের উজাড় করে দিয়েছিল। অনেকে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ হাত-পা কিংবা সম্ভ্রম হারিয়েছে। আমাদের শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধকতা আছে। সুধু এই প্রতিবন্ধকতার কারণে যদি আমরা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে কার্পণ্য করি তাহলে সেটা শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করা হবে।

হুইল চেয়ারে বসে থাকা আরেকজন রুবেল তালুকদার বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবছর আমাদের মত প্রতিবন্ধী কেউ না কেউ এই স্মৃতি সৌধে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে আসেন। এবার আমিও এসেছি। অনেকদিনের ইচ্ছা ছিল এখানে আসার। দেশের বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পেরে আমি প্রশান্তি অনুভব করছি। তাদের হাজারও সালাম রইলো।

সিআরপির সমাজ কল্যাণ বিভাগের প্রধান মো. শফিউল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন আপনারা অনেকেই জানেন আমাদের প্রতিষ্ঠান প্রতিবন্ধীদের নিয়েই কাজ করে। প্রতিবন্ধীদের মধ্যে অনেকেই জাতীয় স্মৃতিসৌধে আসতে চায়। আর প্রতিবছর কিছু সংখ্যক ব্যক্তিকেই এখানে আনা হয়। আমরা অনেক শিশুকেও এখানে এনে থাকি যেন তারা মুক্তিযুদ্ধের আসল ইতিহাস যানতে পারে।

তিনি বলেন, অন্য আট/দশ জন মানুষের মত স্মৃতিসৌধে এসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য প্রতিবছর অনেক শারীরিক প্রতিবন্ধী আমাদের সঙ্গে আসার আগ্রহ প্রকাশ করে। তারা জানতে চায় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও শহীদদের বীরত্বগাঁথা।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০২২
এসএফ/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।