ঢাকা: ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, শুধু পাহারা দিয়ে অপরাধ দমন করা যায় না। অপরাধীদের শনাক্ত করে তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে অপরাধ প্রতিরোধ করতে হবে, এটাই আসল পদ্ধতি।

রোববার (২০ মার্চ) রাজধানীর রাজারবাগ বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়ামে ফেব্রুয়ারি-২০২২ মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

আসন্ন রমজান মাসে ঢাকার চাকা সচল রাখতে শফিকুল ইসলাম বলেন, সামনে রমজান মাস আসছে, এবার রমজান মাসে স্কুল খোলা থাকবে। যা ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। এটা ডিএমপির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। থানার টহল পার্টিগুলোকে প্রত্যেক বড় বড় মোড়গুলোতে ট্রাফিক পুলিশকে সহায়তা করতে হবে।

যে যেখানেই চাকরি করি না কেন, কারো দৃষ্টিতে কোনো অনিয়ম বা ট্রাফিক বিশৃঙ্খলা চোখে পড়লে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে অবগত করতে হবে।

ব্যাংক থেকে বড় অংকের টাকা উত্তোলন কিংবা গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিবহনের ক্ষেত্রে তাদের নিরাপত্তা দেওয়ার পাশাপাশি ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরি করে তাদের গ্রেফতারের নির্দেশনা দেন তিনি।

গত কয়েক মাসে ঢাকা মহানগরীর কোথাও কোনো বড় ধরনের অঘটন না ঘটায় সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে সবাইকে আরও সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের সবাইকে শতভাগ উজার করে দিতে হবে। সবার চলাচলের নিরাপত্তা বিধান করতে পারলেই আমরা সফল হিসেবে গণ্য হবো।

ফেব্রুয়ারিতে সেরা যারা
ফেব্রুয়ারি ২০২২ মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের আটটি ক্রাইম বিভাগের মধ্যে প্রথম হয়েছে তেজগাঁও বিভাগ ও শ্রেষ্ঠ থানা হয়েছে মোহাম্মদপুর থানা। তবে ওয়ারেন্ট নিষ্পত্তি করে প্রথম হয়েছে উত্তরা বিভাগ।

ডিএমপির ক্রাইম বিভাগের সহকারী কমিশনারদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনার মুজিব আহম্মেদ পাটওয়ারী। পুলিশ পরিদর্শক তদন্তদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন ধানমন্ডি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাইফুল ইসলাম আর পুলিশ পরিদর্শক অপারেশন্সদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন্স) মো. তোফাজ্জল হোসেন।

শ্রেষ্ঠ উপ-পরিদর্শক (এসআই) যৌথভাবে নির্বাচিত হয়েছেন পল্লবী থানার এসআই মো. আনোয়ারুল ইসলাম ও লালবাগ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মামুন হোসেন। শ্রেষ্ঠ সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) যৌথভাবে নির্বাচিত হয়েছেন চকবাজার মডেল থানার এএসআই রুহুল আমিন ও মতিঝিল থানার এএসআই মো. হেলাল উদ্দিন।

শ্রেষ্ঠ ওয়ারেন্ট তামিলকারী অফিসার হয়েছেন চকবাজার মডেল থানার এএসআই রুহুল আমিন। অস্ত্র উদ্ধার করে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন দারুসসালাম জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মিজানুর রহমান। বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করে প্রথম হয়েছেন পল্লবী থানার এসআই জহির উদ্দীন আহমেদ।

মাদক উদ্ধার করে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন পল্টন মডেল থানার এসআই সুজন কুমার তালুকদার ও চোরাই গাড়ি উদ্ধার করে প্রথম হয়েছেন মোহাম্মদপুর থানার এসআই মো. শরিফুল ইসলাম।

৯টি গোয়েন্দা বিভাগের মধ্যে প্রথম হয়েছে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ। শ্রেষ্ঠ টিম লিডার নির্বাচিত হয়েছেন একই বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিমের সহকারী কমিশনার মধুসূদন দাস।

অস্ত্র উদ্ধারে শ্রেষ্ঠ টিম লিডার নির্বাচিত হয়েছেন গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগের খিলগাঁও জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. শাহিদুর রহমান। মাদকদ্রব্য উদ্ধার করে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিমের সহকারী কমিশনার মধুসূদন দাস।

৮টি ট্রাফিক বিভাগের মধ্যে প্রথম হয়েছে ট্রাফিক লালবাগ বিভাগ। শ্রেষ্ঠ সহকারী কমিশনার নির্বাচিত হয়েছেন রমনা ট্রাফিক জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. রেফাতুল ইসলাম। শ্রেষ্ঠ ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) হয়েছেন একই জোনের টিআই সরদার মোহাম্মদ তরিকুল আলম।

শ্রেষ্ঠ সার্জেন্ট/টিএসআই যৌথভাবে নির্বাচিত হয়েছেন রমনা ট্রাফিক জোনের পুলিশ সার্জেন্ট মফিজুর রহমান ও মোহাম্মদপুর ট্রাফিক জোনের পুলিশ সার্জেন্ট মো. ইমরান নাজির।

এছাড়া ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগসহ ১৫টি বিভাগ ও ১০২ জন অফিসার এবং ফোর্সকে বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হয়।

প্রতি মাসে ঘটে যাওয়া অপরাধ বিশ্লেষণ, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পরবর্তী কর্মপন্থা ও কর্মকৌশল সম্পর্কিত নির্দেশনার পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তাদের কর্মোদ্দীপনা বাড়াতে প্রতিমাসের কার্যক্রম পয়েন্ট আকারে যোগ করে পরবর্তী মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় পুরস্কৃত করে থাকেন ডিএমপি কমিশনার।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২২
পিএম/আরবি