ঢাকা, রবিবার, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ১২ মে ২০২৪, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

আইসিসিবিতে ট্রান্সজেন্ডার-পথশিশুদের নিয়ে মেলা শুরু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০২২
আইসিসিবিতে ট্রান্সজেন্ডার-পথশিশুদের নিয়ে মেলা শুরু আইসিসিবিতে চার দিনব্যাপী বাংলাদেশ উইমেন ওয়ারিয়র্স অ্যাওয়ার্ড অ্যান্ড এক্সপোর স্টল ঘুরে দেখছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। ছবি: জি এম মুজিবুর

ঢাকা: আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে সামনে রেখে প্রথমবারের মতো রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) দেশের ট্রান্সজেন্ডার, পথশিশু ও বিশেষ শিশুদের নিয়ে চার দিনব্যাপী বাংলাদেশ উইমেন ওয়ারিয়র্স অ্যাওয়ার্ড অ্যান্ড এক্সপো শুরু হয়েছে। মেলা চলবে আগামী মঙ্গলবার (০৮ মার্চ) পর্যন্ত।

শনিবার (০৫ মার্চ) বিকেলে আইসিসিবিতে প্রধান অতিথি হিসেবে এ মেলার উদ্বোধন করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ।  
রিয়েল হিরোজ এক্সপো অ্যান্ড কমিনিউকেশনের প্রতিষ্ঠাতা মালা খন্দকারের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আইসিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম জসিম উদ্দিন, বিটিএল হাউস লিমিটেডের সিইও মিলন বিশ্বাস প্রমুখ।  

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, ট্রান্সজেন্ডার, পথশিশু ও বিশেষ শিশুদের নিয়ে বছরে একটি বা দুটি মেলা করলে চলবে না। তাদের নিয়ে একটি ফাউন্ডেশন করতে হবে। একটি কাঠামোতে আনতে হবে। আমরা শুধু কথা বা অনুষ্ঠানের মধ্যে সীমাবদ্ধ করলেই হবে না। এজন্য আজকেই আমাদের উদ্যোগ নেওয়া উচিত। এ মাসের মধ্যেই এটাকে একটি ফরমালাইজ করা দরকার। এটা যদি একটি প্রতিষ্ঠান রূপে না থাকে তাহলে এর কর্মকাণ্ড ঠিক মতো হবে না। ফান্ডও কেউ দেবে না। বসুন্ধরা গ্রুপ সব সময় মানুষকে সাহায্য সহযোগিতা করেছে উল্লেখ করে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান বলেন, একটি ফাউন্ডেশন তৈরি করতে যে কারিগরি সহায়তাসহ কাগজপত্র লাগে সেখানে বসুন্ধরা গ্রুপ সহায়তা অব্যাহত রাখবে। ফান্ড তৈরিতে আমিও সহায়তা করতে চাই। এজন্য প্রথমেই একটি ফান্ড তৈরির ব্যবস্থা করতে হবে। এরপর বিভিন্ন অনুষ্ঠান সেট করতে হবে। প্রতিবছর একটি দিন নির্ধারণ করে এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করা যেতে পারে।

এ ধরনের উদ্যোগের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পেরে আমি আনন্দিত জানিয়ে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, ফাউন্ডেশন করলে শুধু ট্রান্সজেন্ডার, পথশিশু ও বিশেষ শিশুদের নিয়ে নয় সব নারীদের সম্পৃক্ততা রাখতে হবে যারা সমাজকে এগিয়ে নিতে কাজ করছে। এসব অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য থাকতে হয়। যেমন, যাদের পা নেই তাদের জন্য হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করা, অন্যান্য ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ আমি সব ধরনের সহযোগিতার চেষ্টা করবো বলে জানান তিনি। আইসিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন বলেন, আজ একটি শুভ কাজের সূচনা হতে যাচ্ছে, সেজন্য আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। তবে আমরা কোনো কিছুর মূল বিষয়কে যদি কনফিউজড করে ফেলি তাহলে বড় বা মহৎ উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়। এজন্য আজকে এখান থেকেই একটি ফাউন্ডেশনের সূচনা করার পরামর্শ দেন তিনি। কারণ আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ট্রান্সজেন্ডার, পথশিশু ও বিশেষ শিশুরা যাতে উপকৃত হয়। এজন্য এমন কিছু করতে হবে যাতে তারা দেশের অর্থনীতিতে বোঝা না হয়ে চালিকা শক্তিতে রূপান্তরিত হবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বলতে পারি আপনারা যদি উদ্যোগ নেন তাহলে আমরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবো। তবে মূল উদ্দেশ্য থেকে সরে আসা যাবে না।

তিনি বলেন, এবছর প্রথমবার দেশে এধরনের অনুষ্ঠান করা হচ্ছে। এটা যাতে প্রতিবছর হয়। পাশাপাশি যাদের জন্য করা হচ্ছে তাদের জন্য ছোট আকারে হলেও যেন একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়। যেহেতু শুরু হয়েছে আগামীতে আরও ত্বরান্বিত হবে। আর আত্মমানবতার সেবায় কাজ করে যাচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপ। এখানে আমরা কাজ করতে পেরে আনন্দিত। ভবিষ্যতেও সহযোগিতা চাইলে আমরা আপনাদের পাশে থাকবো। আত্মমানবতার সেবায় বসুন্ধরা গ্রুপ মানুষের পাশে আছে এবং থাকবে।

মালা খন্দকার বলেন, ট্রান্সজেন্ডার, পথশিশু ও বিশেষ শিশুদের নিয়ে আজ আমরা মেলা শুরু করছি। মেলায় ট্রান্সজেন্ডার, পথশিশুদের নিয়ে যারা কাজ করে তাদের স্টল রয়েছে। স্টলগুলোতে তাদের হাতে তৈরি পণ্য প্রদর্শন করা হচ্ছে। এখানে যারা অংশ গ্রহণ করেছে তাদের নিজস্ব কোনো স্টল নেই। অনলাইনে ব্যবসা করছেন তাদের নিয়েই এ মেলা সাজানো হয়েছে।

তিনি বলেন, গত আট মাস ধরে আমরা এ এক্সপো করার চেষ্টা করেছি। বসুন্ধরা গ্রুপ আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। আইসিসিবি আমাদের টাইটেল স্পন্সর হয়েছে এজন্য আমরা বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশের ট্রান্সজেন্ডার, পথশিশু ও বিশেষ শিশুদের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা। এজন্য একটি মেলার আয়োজন করেছি।

রিয়েল হিরোজ এক্সপো অ্যান্ড কমিনিউকেশনের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, আমরা সমাজের সমস্ত সত্যিকারের নারী যোদ্ধাদের লুকানো গল্প জানার সুযোগ তৈরি করতে চেয়েছি মাত্র। আমরা সব নারীকে সত্যিকারের যোদ্ধা হতে উৎসাহিত করতে চাই। আমরা নারীর ভেতরের প্রতিভা প্রদর্শনের জন্য একটি মেলার আয়োজন করেছি। এ ইভেন্টে সমাজের প্রতিবন্ধী নারীরাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করতে চাই যে, কোনো কিছুই অসম্ভব নয় এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে তাদের স্বপ্ন অর্জন থেকে আটকাতে পারে না। এ ইভেন্টটি তৃতীয় সম্প্রদায়কেও জড়িত করেছি যারা সমাজে অবহেলিত। পথশিশুরাও আজ বসে নেই, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণ করে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে, সমাজকে আলোকিত করছে। এ প্ল্যাটফর্মটি অনুপ্রেরণার পথ তৈরি করবে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আইসিসিবিবিতে আজ (৫ মার্চ) থেকে আগামী চার দিন চলবে মেলা ও প্রদশর্নী, ৬ মার্চ প্রদর্শনী, মেলা ও কনসার্ট, ৭ মার্চ প্রতিবন্ধী শিশুদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ৮ মার্চ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিশু ও ট্রান্সজেন্ডার অংশগ্রহণ এবং পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।  

পুরস্কারের ক্ষেত্রে দেখা হবে যেসব নারী দেশে প্রথম কাজ করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তাদের।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০২২
আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।