ঢাকা, রবিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ মে ২০২৪, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নোয়াপাড়া গ্রুপকে নির্দোষ দাবি ‘সেই’ ভিকটিমের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২২
নোয়াপাড়া গ্রুপকে নির্দোষ দাবি ‘সেই’ ভিকটিমের ওবায়দুল্লাহ

যশোর: যশোরের শিল্পনগরী নওয়াপাড়ায় এক যুবককে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হলেও তিনি ফেসবুক লাইভে এসে নোয়াপাড়া গ্রুপকে নির্দোষ দাবি করেছেন। এমনকি, বিভিন্ন মহল থেকে তাকে মিথ্যা বক্তব্য শিখিয়ে ক্যামেরার সামনে বলানো এবং উস্কানি দিয়ে থানায় মামলা করতে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

এতে নিজেই বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন বলে দাবি ওই যুবকের।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই যুবককে ভিডিও এবং লাইভে বলতে শোনা যায়, 'কিছু লোকজন আমাকে নিয়ে ফেসবুকে ভাইরাল করছেন, কেউ কেউ জোর করে বক্তব্য নিচ্ছেন, আবার কেউ থানায় মামলা করতে উৎসাহ দিচ্ছেন-চাপ দিচ্ছেন।   আসলে ভাই আমাকে নির্যাতনের ভিডিও যদি করেই থাকেন তাহলে দুই বছর পরে এসে কেন ভাইরাল করছেন? অন্যায় আমি করেছি, তার জন্য শাস্তি পেয়েছি, মামলাও চলছে! তারপরও পুরাতন সবকিছু ভুলে আমি অন্য একটা চাকরি করে ভালোই চলছি। হঠাৎ করে আমার পেছনে কেন লাগলেন? আমাকে দিয়ে কেন জজ মিয়া নাটক বানাচ্ছেন? ভাইয়েরা দয়া করে আমাকে নিয়ে খেলবেন না। আমি ওই ঘটনায় নিজেই অনুতপ্ত।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া অপর এক ভিডিওতে দেখা গেছে, ওই যুবক বলছেন দুই বছর আগের ওই ভিডিওটি ভাইরালের ব্যাপারে তিনি কিছুই জানতেন না। তবে কয়েকজন তাকে বিষয়টি জানিয়ে ভিডিও, বক্তব্য নিয়েছেন। এমনকি স্থানীয় কয়েকজন তাকে চাপ সৃষ্টি করে ঘটনার বর্ণনার পরিবর্তন করে তাদের শেখানো বক্তব্য দিতে বাধ্য করেছেন।

ভিকটিম ওবায়দুল্লাহ এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়া ওই যুবক নোয়াপাড়া গ্রুপের স্কেলম্যান (পরিমাপ নির্ণয়ের ওয়েব্রিজ) হিসেবে ফরিদপুর সিএন্ডবি ঘাটে চাকরি করতেন। ২০২০ সালের ১ মার্চ স্কেলে পরিমাপ কম দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানের গম চুরির ঘটনায় ধরা পড়লে উপস্থিত উৎসুক কয়েকজন তাকে মারপিট করেন। এ ঘটনায় তার নামে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়। ওই মামলায় আড়াই মাস কারাভোগ করে তিনি জামিনে আছেন। পরে অন্য একটি কোম্পানিতে চাকরি নিয়েছেন তিনি।

নোয়াপাড়া গ্রুপের হেড অব মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস্ মিজানুর রহমান জনি বলেন, ‘গত কয়েকমাস ধরে স্থানীয় একটি চাঁদাবাজ চক্র কোম্পানির কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা আদায়ের জন্য নানাভাবে হয়রানি করে যাচ্ছেন। এমনকি ওই চক্রটি কয়েকমাস আগে প্রতিষ্ঠানের সামনে এসে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়। দুইমাসে ওই চক্রটি জাল কাগজের মাধ্যমে দুই ট্রাক বিএডিসির টিএসপি সার গায়েবের ঘটনায় জড়িত বলে ধারণা করছি। উভয় ঘটনায় আমরা থানায় অভিযোগ করেছি।

তিনি আরও বলেন, 'দুই বছর আগের এই ঘটনা সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বর্তন কর্তৃপক্ষ অবগত ছিলেন না। তবে, ভিডিও ভাইরালের পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা সোহেব খান নামের ওই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে. এম শামীম বলেন, ‘ভাইরাল ভিডিও দেখে ভিকটিম ওই যুবককে থানায় ডেকে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছি এবং অভিযোগ করলে মামলা নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করি। তবে, ওই যুবক কোনভাবেই মামলা করতে রাজি হয়নি। ফলে এ ব্যাপারে আমাদের কিছু করণীয় দেখছি না।

বাংলাদেশ সময়: ২৩২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২২
ইউজি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।