ঢাকা, শনিবার, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ১১ মে ২০২৪, ০২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

কুমিল্লায় যুবলীগ কর্মী হত্যা

অভিযোগ চেয়ারম্যান-ভাতিজার দিকে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২২
অভিযোগ চেয়ারম্যান-ভাতিজার দিকে মো. সালাহ উদ্দিন প্রকাশ জহির

কুমিল্লা: কুমিল্লার হোমনায় মো. সালাহ উদ্দিন প্রকাশ জহির (২৬) নামে এক ইন্টারনেট ব্যবসায়ী ও যুবলীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। উপজেলার কলাগাছিয়া স্টিল ব্রিজের ওপর এই ঘটনা ঘটে।

তার মরদেহ শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) থেকে ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তাকে হত্যা করা হয়। খুনের ঘটনায় বর্তমান চেয়ারম্যান জালাল পাঠান ও তার ভাতিজাসহ আরও অনেককেই অভিযুক্ত করছেন নিহতের বোন পারুল আক্তার।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ভাই সালাহ উদ্দিন প্রকাশ জহির ওয়াইফাই লাইনের সংস্কার কাজের জন্য উপজেলার দুলালপুর যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। এরপর রাত ৮টার দিকে তারা খবর পান- তাকে দুর্বৃত্তরা হত্যা করে উপজেলার কলাগাছিয়া স্টিল ব্রিজের ওপর ফেলে রেখেছে। পরে বড় ভাই আরশাদ মিয়া বাড়ির লোকজন নিয়ে জহিরকে উদ্ধার করতে কলাগাছিয়া স্টিল ব্রিজের দিকে রওনা হন। সেখানে দেশীয় অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা তাদেরকেও ধাওয়া করে। এরপর তারা থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে প্রায় ৪০ মিনিট পর মুমূর্ষু অবস্থায় তারা জহিরকে সেখান থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

পারুল আক্তার আরও জানান, একই গ্রামের মোকবল পাঠান, জালাল পাঠান, বাছির, ইয়াছিন, সেলিম, রিফাত, শেখ ফরিদ, সুমন, বায়েজিদ, ছাব্বির সৈকতসহ ৩০ জন মিলে কুপিয়ে ও হাতুড়িপেটা করে তার ভাইকে মৃত ভেবে ফেলে গেছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর মৃত্যুর আগে জহিরকে সব বলে গেছেন। সে কথা মোবাইল ফোনে রেকর্ড করা হয়েছে। খুনিরা ভাইকে হত্যা করে রাতে এলাকায় এসে আতশবাজি ফুটিয়ে আনন্দ করেছে।

বড় ভাই আরশাদ মিয়া অভিযোগ করেন, গত ইউপি নির্বাচনে আছাদপুর ইউনিয়নে তারা আওয়ামী লীগ প্রার্থী ছিদ্দিকুর রহমানের নির্বাচন করার কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান জালাল পাঠান ও তার ভাতিজা আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী মোকবল পাঠানদের সঙ্গে তাদের শত্রুতা হয়। এ কারণেই তার ভাইকে খুন করা হয়েছে।

এ ঘটনায় বর্তমান চেয়ারম্যান জালাল পাঠানের মোবাইল ফোন নম্বরে কল দিলে আরেক ব্যক্তি রিসিভ করে রং নম্বর বলে কটে দেন। অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী মোকবল পাঠান বলেন, এই খুনের সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের উপযুক্ত বিচার হোক। তারা আইনের আওতায় আসুক।

হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. সাহিদা সিকদার জানান, রাত ৯টার দিকে মো. সালাহ উদ্দিন প্রকাশ জহির নামে এক রোগীকে মুমূর্ষু অবস্থায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন স্বজনরা। রোগীর শরীরের বেশিরভাগ অংশেই জখম ছিল। বলা যায়, দুই পা ও দুই হাত প্রায় বিচ্ছিন্ন ছিল, ঘাড়েও ধারালো অস্ত্রের আঘাত এবং হাতের তিনটি আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন ছিল।

হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কায়েস আকন্দ বলেন, মরদেহ ঢামেক থেকে ময়নাতদন্তের জন্য নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা প্রক্রিয়াধীন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ খুনের সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক তাদেরকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৬ ঘণ্টা, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।