ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ফরিদ হত্যাকাণ্ড: ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে জড়িত ৩টি গ্রুপ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২২
ফরিদ হত্যাকাণ্ড: ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে জড়িত ৩টি গ্রুপ ...

সিলেট: সিলেটের কানাইঘাটে চাঞ্চল্যকর ফরিদ উদ্দিন হত্যাকাণ্ডে জড়িত ইউপি সদস্যসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে করা হয়েছে। সেইসঙ্গে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনের দাবি করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-৯)।

গ্রেফতাররা হলেন- নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিন, কাওছার আহমদ ও মোস্তাক আহমদ। বৃহস্পতিবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাতে ও শুক্রবার ভোর ৫টা পর্যন্ত অভিযানে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী নাজিম উদ্দিনকে মৌলভীবাজারের শেরপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার তথ্যমতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত কাওছার আহমদকে সিলেটে দক্ষিণ সুরমা থেকে এবং মস্তাক আহমদকে নগরের বন্দরবাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়।

এ নিয়ে শুক্রবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে মিলিত হন র‍্যাব-৯’র অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ আবদুর রহমান।

তিনি বলেন, নিহত ফরিদ ও গ্রেফতার তিন আসামিরা পরস্পরের আত্মীয়। স্থানীয়ভাবে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে আগে থেকে চলে আসা বিরোধের জেরে ফরিদকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

লে. কর্নেল মোহাম্মদ আবদুর রহমান বলেন, নাজিম উদ্দিন সর্বশেষ ইউপি নির্বাচনে সাধারণ সদস্য পদে নির্বাচিত হন। এরপর থেকে বিরোধ আরও চাঙ্গা হয়ে উঠে। নাজিম ও তার অনুসারীরা ফরিদকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল। ঘটনার ২ দিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ফরিদ একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে নাজিমের ভাই এনাম ফরিদকে শায়েস্তা করতে হুমকি দিয়ে মন্তব্য (কমেন্ট) করে। এরই ধারাবাহিকতায় ৩১ জানুয়ারি বিকেলে ফরিদ তার আত্মীয় শাহিনকে নিয়ে মমতাজগঞ্জ বাজার থেকে মোটরসাইকেলে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথে এফআইভিডিবি স্কুলের সামনে যাওয়ামাত্র পার্শ্ববর্তী টিলা থেকে বড় ধারালো দেশীয় অস্ত্র হাতে দুইজন মুখোশধারী ফরিদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।

এ সময় দুর্বৃত্তরা ফরিদের একটি পা কেটে নিয়ে পালিয়ে যায়। ফরিদের দুই পায়ে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই ফরিদ মারা যান। ফরিদের আত্মীয় শাহীনও হামলার শিকার হন। তবে তিনি ঘটনাস্থল থেকে দৌড়ে পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন এবং স্বজনদের খবর দেন।

গ্রেফতার হওয়া আসামিদের জিজ্ঞাবাবাদে দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যাব অধিনায়ক বলেন, ঘটনার ফরিদকে হত্যায় তারা ৩ গ্রুপে বিভক্ত হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী নিজাম মেম্বার এবং মোস্তাক নিজেদের ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ না রাখতে সিলেট শহরে চলে আসে। মূলত সিলেট শহরে বসে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বাকি দু'টি টিমের কার্যক্রম সমন্বয় করে তারা দু’জনে। দ্বিতীয় গ্রুপটি ফরিদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছিল। তৃতীয় গ্রুপটি আগে থেকে ঘটনাস্থল এফআইভিডিবি স্কুলের পাশে জঙ্গলপূর্ণ একটি টিলায় ওৎ পেতে ছিল। আর সুযোগ কাজে লাগিয়ে তারা ফরিদকে কুপিয়ে খুন করে। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদেরও গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এর আগে গত সোমবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের বড়খেওড় এলাকায় প্রকাশ্যে ফরিদকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, হত্যাকারীরা ফরিদের ডান পা কেটে বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহত ফরিদ উদ্দিনের বাবা মো. রফিকুল হক গত ২ ফেব্রুয়ারি ৭ জনের নামোল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২২
এনইউ/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।