ঢাকা, সোমবার, ৪ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ জুন ২০২৪, ০৯ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

বই পড়ার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের নাম ‘বই বৃক্ষ’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২২
বই পড়ার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের নাম ‘বই বৃক্ষ’

নওগাঁ: অনলাইন গেম আর মাদক থেকে দূরে রাখতে  তরুণ সমাজকে বই পড়ার প্রতি আকৃষ্ট করেছে  ‘বই বৃক্ষ’নামে একটি অনলাইন গ্রুপ। যেখানে নেই অফিস ঘর বা বই পড়ার চেয়ার- টেবিল।

বই বৃক্ষের গ্রুপে লিস্টে দেওয়া রয়েছে তাদের সংগ্রহে থাকা বইয়ের তালিকা। কেউ যদি ঘরে বসে বই পড়তে চায়, তাহলে প্রথমে তাকে বই বৃক্ষের ফেসবুক গ্রুপে এড হতে হয়। এরপর পাঠককে পছন্দের বইটা বিনামূল্যে সংগ্রহ করতে কমেন্ট করতে হয়। এরপর এক দিনের মধ্যে বই বৃক্ষের সমন্বয়করা পাঠকের বাসায় পৌঁছে দেন বই। আর চমৎকার এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের নাম ‘বই বৃক্ষ’।

বই বৃক্ষের উদ্যোক্তা রমজান আলী ইমন বাংলানিউজকে জানান, ঢাকা কলেজের আবাসিক ছাত্র থাকা সময় থেকেই বই পড়া এবং বই সংগ্রহ করা ছিল আমার নেশা। ছাত্রাবাসের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় ঘোষণা দেন তার কাছে ৩০টি বই আছে। কেউ পড়তে চাইলে তিনি দিতে চান তবে ফেরত দিতে হবে। শুরু হলো বই নিয়ে আলোচনা। এরপর বন্ধুরা উপহার দিল ৫০টি বই। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ সাল থেকে বই বৃক্ষের যাত্রা শুরু। এরপর কেটেছে প্রায় ৩ বছর।   এরইমধ্যে তাদের স্থায়ী সদস্য সংখ্যা ৩ শ'র বেশি। আর এই উদ্যোগে সাড়া দিয়ে এখন পর্যন্ত বই পড়েছেন ৫ হাজার ১৬১ জন পাঠক।

উদ্যোক্তা রমজান আলী আরও জানান, সবার সহযোগিতায় গড়ে উঠেছে বই বৃক্ষ। সংগঠনটি দাঁড় করানোর জন্য শুধু রাজশাহী শহরে তারা সশরীরে কাজ করেছেন। এরপর ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বইপড়ার আন্দোলন এক শহর থেকে গ্রামে ছড়িয়ে গেছে। এরপর পাঠক চাহিদার জন্য একে একে আশড়ন্দ, নজিপুর, ধামইরহাট, নওগাঁ জেলা সদর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর ও সবশেষে দিনাজপুরে তাদের শাখা চালু হয়েছে।

এছাড়াও আগামী বছর আরও ২৮ টি শাখা চালু করবে বই বৃক্ষ। প্রতি মাসে পাঠক সংখ্যা ৩৫০ জনেরও বেশি। এখন এই সংগঠনের নিজস্ব বইয়ের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫৭৯ টি। শিশুদের জন্য রয়েছে ৭ টি শাখায় শিশু কর্নার। যে শিশুরা বই পড়তে চায় না তাদের জন্য রির্সাস করে বই পড়ার প্রতি আগ্রহ করাতে চান তারা।

বই বৃক্ষের এক সদস্য সাকিব হোসেন বাংলানিউজকে জানান, পড়াশোনার পাশাপাশি এই সংগঠনের সঙ্গে কাজ করছি। এটি ভাল লাগা ও অনুপ্রেরণাদায়ক একটি কাজ। আমরা পড়াশোনার পাশাপাশি সময় করে বই প্রেমীদের কাছে তাদের পছন্দের বই পৌঁছে দেই। এরপর তাদের পড়া হয়ে গেলে আবার সে বইটি ফেরত নিয়ে আসি। কাজটি করতে আমাদের অনেক ভালো লাগে।

আরেক বইপ্রেমী সদস্য নুসাইবা জান্নাত গত বছরের আগস্ট থেকে সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। এরই মধ্যে তাঁর মাধ্যমে তৈরি হয়েছে ১৫ জন নতুন পাঠক।

তিনি বলেন, প্রথমে আমি ভাবতেই পারিনি আইডিয়াটা মানুষকে এভাবে উদ্বুদ্ধ করবে, এত তাড়াতাড়ি সংগঠনের শাখা এতগুলো জেলার এতগুলো শহরে ছড়িয়ে পড়বে। আমি এই সংগঠনের হয়ে কাজ করে যেতে চাই।

আগামী বছর ওয়েবসাইট চালু করার ইচ্ছে তাদের। সাইটে সব শাখা আলাদা থাকবে যে শাখায় যে বই থাকবে সব বইয়ের তালিকা দেখা যাবে। বই বৃক্ষে যোগ করা হবে দেশের বাইরে ২টি শাখা চায়না ও অস্ট্রেলিয়া। এভাবেই ডালপালা মেলতে থাকবে বইপ্রেমীদের এই সংগঠন।

বাংলাদেশ সময়: ১০২৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২২
এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।