ঢাকা, সোমবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

‘মানবপাচার’ আধুনিক কালের দাসত্ব: আর্ল মিলার

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২২
‘মানবপাচার’ আধুনিক কালের দাসত্ব: আর্ল মিলার

ঢাকা: ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার বলেছেন, মানবপাচার হলো আধুনিক কালের দাসত্ব। আমাদের পৃথিবীতে এর কোনো স্থান নেই।

বুধবার (১২ জানুয়ারি) রাজধানীর হোটেল সোনারগাওঁয়ে মানবপাচার বিরোধী এক কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক ঢাকার ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের জন্য আয়োজিত এ কর্মশালার উদ্বোধন করেন। ফাইট স্লেভারি অ্যান্ড ট্রাফিকিং ইন-পারসন্স (এফএসটিআইপি) প্রকল্প আয়োজিত এই কর্মশালায় অর্থায়ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি)।

যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে জোরদার সহযোগিতার ফলে মানবপাচারের (টিআইপি) বিচারের জন্য সাতটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়েছে এবং মানবপাচার প্রতিরোধে পাঁচ বছরের একটি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে।

বাংলাদেশের মানবপাচার প্রতিরোধ কর্মসূচিতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার বিষয়টি তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, মানবপাচার প্রতিরোধে আপনাদের সঙ্গে সামিল হওয়া যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের অন্যতম অগ্রাধিকার। এই কর্মশালার মাধ্যমে মানবপাচার বন্ধে বাংলাদেশ সরকার, সুশীল সমাজ, বেসরকারি খাত ও পাচারের কবল থেকে মুক্ত হওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে অংশীদারিত্বের প্রতি আমাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত হয়েছে।

২০১২ সালের মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন থাকলেও যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী ও বিচার বিভাগীয় অংশীজনেরা স্বীকার করেন যে, মানবপাচারের বিচার ও অপরাধ প্রমাণের হার বাড়ানো প্রয়োজন। ইউএসএআইডি’র ১০ মিলিয়ন ডলার অর্থায়নপুষ্ট এফএসটিআইপি প্রকল্পের আওতায় বিচার বিভাগের কর্মকর্তা, সরকারী আইনজীবী ও বিচারকদের জন্য আয়োজিত এ সপ্তাহের কর্মশালার ন্যায় বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আরো কার্যকরভাবে মানবপাচারকারীদের বিচার ও অপরাধ প্রমাণে বাংলাদেশকে সহায়তা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট’র টিআইপি প্রতিবেদনে পরপর দুই বছর বাংলাদেশ ‘পর্যায়-২’ এ অবস্থান করছে। এর মাধ্যমে মানবপাচার বিরোধী লড়াইয়ে দুই দেশের অংশীদারত্বের ক্রমবর্ধমান সাফল্যের বিষয়টিই ওঠে এসেছে।  

যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় বাংলাদেশ সরকার পাচারকাজে জড়িত অপরাধীদের বিচারের জন্য বিচার বিভাগের সক্ষমতা জোরদার করেছে। গত পাঁচ বছরে ইউএসএআইডি পাচারকাজে জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতার, বিচার ও শাস্তি দেওয়ার লক্ষ্যে ৫৬৯ জন বিচারক ও এক হাজারের বেশি পুলিশ, সরকারি  আইনজীবী ও উকিলকে মানবপাচার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মসূচি ও তহবিলের আওতায় পাচারের কবল থেকে মুক্ত হওয়া তিন হাজারের বেশি মানুষকে আশ্রয়, স্বাস্থ্যসেবা, পরামর্শ, জীবন-দক্ষতা ও ব্যবসা-উদ্যোগ বিষয়ক প্রশিক্ষণ এবং চাকরি দেওয়ার জন্য স্থানীয় পর্যায়ের সংস্থাগুলোকেও সহায়তা করা হয়।  

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রদূত মিলার, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব গোলাম সারওয়ার, বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (জেএটিআই) মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, জেএটিআইয়ের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা বিচারক গোলাম কিবরিয়া।

আরও পড়ুন: মানবপাচার রোধে সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২২
টিআর/এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।