ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ মে ২০২৪, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

‘ছুটি কাটাতে’ জেলে গিয়েছিলেন তিনি!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০২২
‘ছুটি কাটাতে’ জেলে গিয়েছিলেন তিনি!

রাজশাহী: ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) রাজশাহী শাখার প্রধান আব্দুল মোত্তালিব ছুটি নিয়ে দুর্নীতির মামলায় গিয়েছিলেন জেলে। ঘটনাটি তিনি বেমালুম গোপন করে দিলেও পরে তা ফাঁস হয়ে যায়।

এ ঘটনায় তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে আইসিবি কর্তৃপক্ষ।

আইসিবির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কামাল হোসেন গাজী সাক্ষরিত এক অফিস আদেশে রোববার (২ জানুয়ারি) তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।  

আদেশে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। সাময়িকভাবে বরখাস্তকালীন তিনি শুধু খোরাকি ভাতা পাবেন। আদেশে আব্দুল মোত্তালিবকে প্রধান আইসিবির কার্যালয়ের ডিসিপ্লিন, প্রিভেন্স ও আপিল বিভাগে অবিলম্বে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  

এর আগে আইসিবির উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) সম্প্রতি অর্জিত ছুটি (ইএল) নিয়ে জেলে গিয়েছিলেন। পরে উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে বের হন। তবে তিনি দুর্নীতির মামলায় জেলে গেলেও বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন। পরে বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়।

তবে দুর্নীতির মামলায় অর্জিত ছুটি নিয়ে জেলে যাওয়া এবং সাময়িকভাবে বরখাস্তের বিষয়ে তিনি গণমাধ্যমে কোনো কথা বলবেন না বলে জানিয়েছেন। এটি তার পরিচালনা পরিষদ দেখবে বলেও জানান।  

এর আগে ২০১১ সালে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার কানোপাড়া সাজুরিয়া গ্রামের মৎস্যচাষি আব্দুল বারিক মণ্ডলের নামে ৯৩ লাখ ২০ হাজার টাকা ঋণ মঞ্জুর করে আইসিবি। তবে নথি জাল করে প্রথম কিস্তির ২৭ লাখ টাকা উঠিয়ে নেন পুঠিয়ার মঙ্গলপাড়া গোবিন্দপাড়া গ্রামের গোলাম মোর্শেদ হক।

ওই কাজে সহায়তার জন্য রাজশাহী শাখার প্রধান আব্দুল মোত্তালিব ও প্রধান কার্যালয়ের এজিএম আহম্মদ হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে ভুক্তভোগী বারিক মণ্ডল তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।  

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাশেদুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করেন। তদন্ত শেষে তিনি ২০১৯ সালের ২৮ অক্টোবর অভিযোগপত্র দেন আদালতে। পরে আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এরপর দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত মোত্তালিব।

অবশেষে অর্জিত ছুটি নিয়ে ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর মামলার নির্ধারিত দিন তিনি রাজশাহী বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় আদালতে তার জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী। কিন্তু শুনানি শেষে আদালত তার জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এরপর ২৮ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালত থেকে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন পান তিনি। ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি জামিনে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের হন। এরপর তিনি আবারও দিব্যি অফিস শুরু করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০২২
এসএস/জেএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।