ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

প্রত্যেক বিভাগে ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হবে: প্রধানমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০২১
প্রত্যেক বিভাগে ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হবে: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা: খেলাধুলার বিকাশে এবং উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য প্রতিটি বিভাগে একটি করে ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (০৯ ডিসেম্বর) বিকেলে অনুর্ধ্ব-১৭ বালক এবং বালিকাদের দুটি ফুটবল টুর্নামেন্টের চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা এবং পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

ঢাকার কমলাপুরে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, বালক (অনুর্ধ-১৭) ও ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, বালিকা (অনুর্ধ-১৭) ২০২১- এর জাতীয় পর্যায়ে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় এবং পুরস্কার বিতরণ করা হয়।  

প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমাদের দেশের প্রত্যেকটা বিভাগে আমরা একটি করে ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবো (বিকেএসপি- বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান)। ’

তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে আরও দুটোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।  বাকিগুলো আমরা করে দেবো। যাতে করে সেখানে সব ধরনের স্পোর্টসের ব্যাপারে একটা ভালো প্রশিক্ষণ নিতে পারে। আমাদের ছেলে-মেয়েদের জন্য সে ব্যবস্থা আমরা করে দিচ্ছি। খেলাধুলা এবং শরীরচর্চা এটা খুবই প্রয়োজন। ’

প্রতিটি এলাকায় খেলাধুলার সুযোগ সৃষ্টি করার তাগিদ দিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘ক্রীড়ায় খুব প্রয়োজন ফুটবল, ক্রিকেট বা অন্য যেকোন খেলা, সেজন্য জায়গাটা সুনির্দিষ্ট থাকবে। এছাড়া প্রত্যেকটা এলাকায় একেবারে ইউনিয়ন পর্যায়ে আমি একটা নির্দেশনা দিয়েছি। প্রতিটি জায়গায় যেন আমাদের বাচ্চাদের খেলাধুলার একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়। সেদিকে আমরা বিশেষ ভাবে দৃষ্টি দিচ্ছি। ’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘খেলাধুলার চর্চাটা যাতে আমাদের উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত ভালোভাবে হয় সেজন্য ইতোমধ্যে প্রত্যেক উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম, মাঠের খেলার মাঠ উন্নত মানের করে দিচ্ছি। এ কারণে সেখানে ১২ মাসই সবাই খেলাধুলা করতে পারবে, খেলাধুলার প্র্যাকটিস করতে পারবে। ’

খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জানি আমাদের ছেলে-মেয়েদের আমরা যত বেশি খেলাধুলা এবং সংস্কৃতি চর্চার মধ্যে সম্পৃক্ত রাখতে পারবো, এতে তারা বিপথে যাবে না। কখনো মাদকাসক্ত বা জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া বা পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়া, সেগুলো করবে না। মন এবং শারীরিকভাবে সুস্থ থেকে খেলাধুলা করবে, পড়াশোনাও করবে, মানুষের মতো মানুষ হবে সেটাই আমি চাই। ’

ছেলে-মেয়েদের আগামীতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতা করার মতো যোগ্য করে তোলার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা চাই যেসব ছেলে-মেয়েরা আজকে ফুটবল খেলছে সবাইকে আমি বলব তোমরা খুব মনোযোগ দিয়ে খেলাধুলা করবে। তোমাদের মনে রাখতে হবে ধীরে ধীরে তোমাদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতা করতে হবে এবং সেখানে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করবে আমি আশা করি। সেভাবেই তোমাদের আমরা তৈরি করতে চাই।

তিনি বলেন, ‘তরুণ সমাজকে আমরা গড়ে তুলতে চাই উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে। আর সেই ক্ষেত্রে খেলাধুলা, সংস্কৃতি চর্চা বা বিজ্ঞান শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি অর্থাৎ কম্পিউটার ডিজিটাল ডিভাইস সম্পর্কে শিক্ষা সর্বক্ষেত্রে যেন আমাদের ছেলে-মেয়েরা গড়ে উঠে সেদিকে আমরা বিশেষ দৃষ্টি দিচ্ছি। ’

অস্বচ্ছল, অসুস্থ খেলোয়াড়দের আরও ২০ কোটি টাকা দেওয়ার ঘোষণা

অস্বচ্ছল, অসুস্থ খেলোয়াড়দের সহায়তার জন্য বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশনকে  আরও ২০ কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘অনেক সময় আমি দেখেছি আমাদের অনেক ক্রীড়াসেবীরা অসুস্থ হন। অসুস্থ অস্বচ্ছল ক্রীড়াসেবীদের সাহায্য করার জন্য একটা ফাউন্ডেশন করা হয়েছে - বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন। অতি সম্প্রতি সেখানে ১০ কোটি টাকা সিড মানি হিসাবে আমি দিয়েছি।  সেখানে আরও ২০ কোটি টাকা সিড মানি হিসেবে আমি দেবো। ’

‘যাতে কোনো ক্রীড়াবিদ খেলতে গিয়ে অনেক সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন, অনেক সময় আঘাতপ্রাপ্ত হন, তাদের চিকিৎসা লাগে বা যখন একটু বয়স হয়ে যায় তখন আর খেলতে পারে না তখন তাদের খুব কষ্ট হয়। কাজেই এ কষ্টটা দূর করার জন্য বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশনকে আগে ১০ কোটি, সামনে আরও ২০ কোটি টাকা আমরা দিচ্ছি। এটা সিড মানি হিসেবে থাকবে। ’

যারা খেলাধুলার সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদেরও সব ধরনের সহযোগিতা করে যাবেন বলেও জানান সরকার প্রধান।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে খেলোয়াড়দের হাতে ট্রফি ও মেডেল তুলে দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল।

এছাড়াও খেলোয়াড়দের জন্য করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে বরাদ্দ হওয়া বিশেষ অনুদানের চেকও হস্তান্তর করেন প্রতিমন্ত্রী।

কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়াম প্রান্তে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, যুব মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আখতার হোসেন এবং বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী ভার্চ্যুয়ালি রংপুর বিভাগ এবং ময়মনসিংহ বিভাগের বালিকাদের ফুটবল ম্যাচটি উপভোগ করেন।

বালিকাদের ফুটবল ম্যাচের ফাইনালে ময়মনসিংহ বিভাগকে ১-০ গোলে হারিয়ে রংপুর বিভাগ চ্যাম্পিয়ন হয়। অন্যদিকে বালকদের ফুটবলে ট্রাইব্রেকারে রাজশাহী বিভাগকে হারিয়ে শিরোপা অর্জন করে সিলেট বিভাগ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০২১
এমইউএম/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।