ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সমস্যার আবর্তে হিলি স্থলবন্দর

সালাহউদ্দিন বকুল, হিলি প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১২
সমস্যার আবর্তে হিলি স্থলবন্দর

হিলি (দিনাজপুর): নানা সমস্যায় জর্জরিত হিলি স্থলবন্দর। প্রতিষ্ঠার পর থেকে অর্জিত হয়নি কাক্সিক্ষত রাজস্ব।

বাড়েনি সুযোগ-সুবিধা। সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও প্রসার ঘটেনি ব্যবসা-বণিজ্যে।

দেশের উত্তরাঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যের বিশাল সম্ভাবনার কথা চিন্তা করে সরকার ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠা করে হিলি স্থল বন্দর। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বন্দরটি ব্যবসায়ীদের কাছে অনেক গুরুত্ব বহন করে আসছে।

রেল ও সড়ক পথে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকায় স্থলবন্দরটি ব্যবসায়ীদের কাছে অল্প সময়ে সুনাম অর্জন করে। ফলে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর হিসেবে বন্দরটি পরিচিতি লাভ করে।

সরকার এই বন্দরকে আরও গতিশীল করার লক্ষ্যে ২০০৫ সালে বন্দর পরিচালনার জন্য বেসরকারিখাতে ছেড়ে দেয়। সেই লক্ষ্যে পানামা হিলি পোর্ট লিংক লিমিটেড ২৫ বছরের জন্য বরাদ্দ নিয়ে বন্দর পরিচালনা করে আসছে। ২০০৭ সালের ২৬ নভেম্বর বন্দরটি পুর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হিসেবে কার্যক্রম শুরু করে।

বর্তমানে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমতে থাকায় হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা লেটার অব ক্রেডিট বা এলসি খোলা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে এ বন্দর দিয়ে প্রায় বন্ধই হয়ে গেছে আমদানি-রপ্তানি।

এ বন্দরে আগে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই শ’ পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করতো। দেশে ডলার সঙ্কটের কারণে আমদানিকারকরা পণ্য আমদানিতে এলসি না খোলায় বর্তমানে সেখানে ৫০-৬০টি ট্রাক প্রবেশ করছে।

ডলারের বিপরীতে টাকার দাম কমতে থাকায় আমদানি করা পণ্যের দাম দেশীয় বাজারেও বেড়েছে। ফলে আমদানিকারকরা পণ্য আমদানিতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।

এছাড়াও বন্দরটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গা ও ওপেন ইয়ার্ড শেড না থাকায় খোলা আকাশের নিচে পণ্য লোড-আনলোড করতে হচ্ছে। অন্যদিকে বন্দরের রাস্তাগুলো অপ্রশস্ত হওয়ায় প্রতিনিয়ত যানজট লেগেই থাকে। এ কারণে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা।

স্থানীয় কাচামাল আমদানিকারক সমিতির আহবায়ক হারুনুর রশিদ হারুন বাংলানিউজকে জানান, আমদানি পণ্যের জন্য এক দরে এলসি (ঋণ পত্র) করার পর  ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে পরে তা বেশি টাকায় পরিশোধ করতে হচ্ছে। এতে ডলার প্রতি ৩-৪ টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে। একারণে আমদানি করে গেছে।

এদিকে বন্দরের প্রাণ ভোমরা বা পণ্য আমদানি কমে যাওয়ায় বেকার হয়ে পড়েছে বন্দরের শ্রমিকরা। কাজ না থাকায় তারা পরিবার পরিজন নিয়ে কাটাচ্ছে মানবেতর জীবন। আবার ব্যবসা না থাকায় সিএন্ডএফ এজেন্টরাও কাটাচ্ছেন অলস সময়।

আমদানি কমে যাওয়ার বিষয়ে হিলি স্থলবন্দরের সহকারী কমিশনার পায়েল পাশা বাংলানিউজকে বলেন, ‘ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হওয়ায় পণ্য আমদানি করতে টাকা বেশি লেগে যাচ্ছে। ফলে আমদানি কমে যাওয়ায় এ বন্দর দিয়ে রাজস্ব আদায়ও কম হচ্ছে।

ব্যবসায়ীদের দাবি, এখানকার সমস্যাগুলোর সমাধান করা হলে ব্যবসা বাণিজ্যে আরও প্রসার ঘটবে। পাশাপাশি সরকার আরও বেশি পরিমাণ রাজস্ব পাবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।