ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ঋণচুক্তি প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনায় বাংলাদেশ-ভারত

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২১
ঋণচুক্তি প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনায় বাংলাদেশ-ভারত

ঢাকা: ঋণচুক্তির অধীনে গৃহীত ৪৩টি প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেছে বাংলাদেশ ও ভারত। ১৯তম বাংলাদেশ-ভারত ঋণচুক্তি পর্যালোচনা সভায় এই পর্যালোচনা করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য জানায়।

সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ইআরডি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী। আর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শ্রীধরন মধুসূদন ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। বাংলাদেশে ঋণচুক্তির অধীনে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী ভারতীয় কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিরাও বৈঠকে অংশ নেন।

বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশ-ভারত উন্নয়ন অংশীদারিত্ব উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ ভারতের বৃহত্তম উন্নয়ন সহযোগী এবং বিভিন্ন খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের জন্য ভারতের ঋণচুক্তি প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশকে ৭ দশমিক ৮৬২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের চারটি ঋণ প্রদান করা হয়েছে। ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট বিতরণ করা হয়েছে প্রায় ৮৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ৮৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রথম ঋণচুক্তির অধীনে, ১৫টি প্রকল্পের মধ্যে ১২টি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে এবং ৩টি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন। দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলারের দ্বিতীয় ঋণচুক্তির অধীনে ২টি প্রকল্প ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে এবং অন্যান্য প্রকল্পগুলি বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তৃতীয় ঋণচুক্তির অধীনে ১টি প্রকল্প বাস্তবায়ন পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং অন্য প্রকল্পগুলি ডিপিপি চূড়ান্তকরণ এবং টেন্ডারিংয়ের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে।

প্রকল্প বাস্তবায়নের গতিতে যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে যা উভয় পক্ষের প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থার সক্রিয় সহযোগিতা এবং ইআরডি ও হাই কমিশনের মধ্যকার ব্যাপক সমন্বয় প্রচেষ্টার মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। গত তিন বছরে ভারতের ঋণচুক্তি প্রকল্পের অধীনে ৯৯০ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি মূল্যের চুক্তি প্রদানের পাশাপাশি পরবর্তী কয়েক মাসের মধ্যে আরও ৩২৫ দশমিক ৫৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি চূড়ান্ত করা হচ্ছে, যাতে করে ঋণচুক্তির ব্যবহারের হার অদূর ভবিষ্যতে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে।

ঋণচুক্তি পর্যালোচনা বৈঠকের সময় উভয় পক্ষই ঋণচুক্তি প্রকল্পগুলিতে সক্রিয় সহযোগিতায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। দুই প্রতিনিধিদলের প্রধান ঋণপ্রকল্পগুলির সকল অংশীদারদের ক্রমাগত যোগাযোগ, নিয়মিত ও বিশদ পর্যালোচনা বৈঠক এবং প্রকল্পগুলির দ্রুত বাস্তবায়নের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা করার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ভিত্তিক একটি বিশদ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের সাথে বিদ্যমান সমস্যা এবং সম্ভাব্য সমাধান প্রক্রিয়া চিহ্নিত করা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নে জড়িত সমস্ত পদক্ষেপের জন্য বিস্তারিত সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়।

উভয় পক্ষই ঋণচুক্তি পর্যালোচনা প্রক্রিয়াটিকে প্রকল্পগুলির অগ্রগতি নিরীক্ষণ, প্রক্রিয়াগত বাধা চিহ্নিত/দূর করতে এবং সময়মত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য একটি আদর্শ প্ল্যাটফর্ম বলে মত প্রকাশ করেন। ভারত সরকারের ঋণচুক্তির অধীনে প্রকল্পগুলির সফল বাস্তবায়ন এবং চলমান ও প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলিতে দুই দেশের ক্রমাগত সম্পৃক্ততা এই অঞ্চলের অভিন্ন উন্নয়ন এবং পারস্পরিক সুবিধার জন্য নতুন সুযোগ তৈরির ক্ষেত্রে উভয় পক্ষের প্রতিশ্রুতিরই প্রতিফলন করে। উভয় প্রতিনিধি দলের প্রধান স্মরণ করেন ১৭ ডিসেম্বর ২০২০ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সাথে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল সামিটের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ঋণচুক্তি ব্যবহার করে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরেছিলেন।

ঋণচুক্তি পর্যালোচনা সভার আগে গত ২৫-২৬ অক্টোবর দিল্লীর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ভারতীয় হাই কমিশন এবং এক্সিম ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত ভারতীয় প্রতিনিধিদল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ সঞ্চালনকেন্দ্র, আশুগঞ্জ অভ্যন্তরীণ নদী বন্দর প্রকল্পের পাশাপাশি আশুগঞ্জ-সরাইল-ধরখার-আখাউড়া সড়ক প্রকল্প পরিদর্শন করে। প্রতিনিধিদলটি প্রকল্প বাস্তবায়নের সাথে জড়িত সকল অংশীদারদের সাথে সাক্ষাৎ করে। একই সাথে প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা ও প্রতিবন্ধকতাগুলি সমাধানের জন্য বিশদ আলোচনা করে।

সভায় ২০তম দ্বিপাক্ষিক ঋণচুক্তি পর্যালোচনা সভা আগামী ২০২২ সালের এপ্রিলে দিল্লীতে অনুষ্ঠিত হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

উল্লেখ্য, ২৭- ২৮ অক্টোবর ঢাকায় এই ঋণ পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০০১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২১
টিআর/আরইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।