ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কলেজছাত্র রাহতকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২১
কলেজছাত্র রাহতকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার

সিলেট: সিলেটের দক্ষিণ সুরমা কলেজছাত্র আরিফুল ইসলাম রাহাত হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) পুলিশ।  

বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) সকালে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার সিলাম ইউনিয়নের হাজীপুর এলাকায় একটি ডোবা জমি থেকে ছুরিটি উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার হওয়া ছুরির বাটসহ দৈর্ঘ্য সাড়ে ৭ ইঞ্চি।

এর আগে, ভোরে সামসুদ্দোহা সাদিকে সিআইডি ঢাকা কার্যালয় থেকে সিলেটে আনা হয়। পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে মামলাটির ডকেট সিলেট সিআইডি বুঝে নেয়। মামলাটি তদন্ত করছেন সিলেট সিআইডির উপ পরিদর্শক রিপন দে।  

হত্যাকাণ্ডের পর ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে গ্রেফতার হওয়া সাদিকে সিলেটে আনার হয়। তাকে নিয়ে দুপুরে প্রেসব্রিফিংয়ের আয়োজন করে সিলেট মেট্রো সিআইডি। এসময় রাহাত হত্যার বিস্তারিত বর্ণনা দেন সিআইডি সিলেটের পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা।   

ব্রিফিংকালে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা বলেন, গ্রেফতারের পর সামসুদ্দোহা সাদি হত্যার দায় স্বীকার করেছে।  তিনি বলেন, নিহত রাহাত ও তার হত্যাকারী সাদি একই কলেজের একই শ্রেণিতে পড়তো। আসামি সাদি পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দা হওয়াতে এবং বয়সে রাহাতের চেয়ে বড় হওয়ায় সে নিজেকে সিনিয়র দাবি করতো। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে চলমান বিবাদের জেরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটায়। এছাড়া তাকে সিলেটে নিয়ে আসার পর বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৬টায় তার দেখানো মতে হত্যায় ব্যবহৃত ৭ দশমিক ৫ ইঞ্চি ছুরিটি জমি থেকে উদ্ধার করা হয়। আলোচিত রাহাত হত্যার ঘটনায় আসামিকে দ্রুততম সময়ে গ্রেফতার সিআইডির একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন বলে মনে করেন তিনি।  

মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) রাতে কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের দুর্গম চর এলাকা থেকে রাহাত খুনের প্রধান আসামি সামসুদ্দোহা সাদিকে গ্রেফতার করে সিআইডি। তাকে নিয়ে বুধবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে সংস্থাটি। এর আগে বৃহস্পতিবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে দুপুর সাড়ে ১২টা ১০ মিনিটের দিকে চাচাতো ভাই আশরাফুল ইসলাম রাফিকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে যান রাহাত। সেখানে মোবাইলফোনে বন্ধুদের না পেয়ে সাড়ে ১২টার দিকে কোটিং সেন্টারে যাওয়ার জন্য রওয়ানা দেন। দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে আসার সময় প্রধান ফটকের ভেতরে থাকাবস্থায় আরেকটি মোটরসাইকেলে ক্যাম্পাস ত্যাগকালে অতর্কিতভাবে রাহাতকে উরুতে ছুরিকাঘাত করেন ছাত্রলীগের কর্মী সামসুদ্দোহা সাদি ও তার সহযোগীরা। তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার সময় তার মৃত্যু হয়।

নিহত রাহাতও ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন। এ ঘটনার একদিন পর শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) রাতে রাহাতের চাচা শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে দক্ষিণ সুরমা থানায় সাদিসহ ৩ জনের নামোল্লেখ অজ্ঞাতপরিচয় ৬-৭ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামি হিসেবে নামোল্লেখ করা হয়েছে সিলাম পশ্চিমপাড়া গ্রামের জামাল মিয়ার ছেলে তানভীর এবং আহমদপুর গ্রামের মৃত গৌছ মিয়ার ছেলে সানি।  

ঘটনার পর পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে সিলেট ত্যাগ করা প্রধান অভিযুক্ত সামসুদ্দোহা সাদি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী ফিলিপনগর ইউনিয়নে পাশেই একটি নদী পার হয়ে ভারতে যাওয়ার পরিকল্পনাকালে তাকে গ্রেফতার করা হয়।  

এদিকে রাহাত হত্যায় পলাতক সাদিসহ আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারে দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। একই দাবিতে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন ও মানববন্ধন করেন কলেজ শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।

 

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২১
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।