ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মধ্যরাত থেকে মেঘনায় নৌকা ভাসাবে জেলেরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২১
মধ্যরাত থেকে মেঘনায় নৌকা ভাসাবে জেলেরা

লক্ষ্মীপুর: ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে মা ইলিশ রক্ষায় মাছ শিকারের টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ সোমবার (২৫ অক্টোবর) মধ্যরাতে নদীতে জাল ফেলবে জেলেরা।  

৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত নদীতে সব রকম মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে মৎস্য বিভাগ।

 

এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন তারা। জাল এবং নৌকা মেরামত করে তারা প্রস্তুতি নিয়েছেন নদীতে নৌকা ভাসানোর। তবে শীত মৌসুম কাছাকাছি চলে আসায় নদীতে মাছের অকাল থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেক জেলে। ফলে মেঘনায় মাছ শিকারে নিয়োজিত কিছু জেলে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকবেন বলেও জানা গেছে।  

সদর উপজেলার চর আলী হাসান গ্রামের জেলে মো. সাদ্দাম হোসেন বলেন, আজ রাত ১২টার পর নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে আমরা নদীতে নামবো। এরই মধ্যে জাল এবং নৌকা মেরামত করে নিয়েছি। একটি ট্রলারে আমরা আটজন মাছ শিকার করি।  

সাদ্দম জানান, রোববার (২৪ অক্টোবর) তিনি খাদ্য সহায়তার চাল পেয়েছেন। এ কয়েকদিন পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করেছেন তিনি। মাছ ধরা শুরু হলে কষ্ট কিছুটা কমবে।   

চররমনী মোহন এলাকার জেলে এবং ট্রলার মালিক মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পর জাল গুটিয়ে নদী থেকে উঠে পড়েছি। সামনে শীত চলে আসতেছে। এ সময়টাতে মাছ কম ধরা পড়ে। নৌকার জ্বালানি এবং আনুষঙ্গিক খরচ বাদ গেলে তেমন পোষাবে না। তাই নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও এ মৌসুমে নদীতে মাছ শিকারে যাবো না।  

কমলনগর উপজেলার মতির হাট মাছঘাটের সভাপতি মো. আবদুল খালেক বলেন, নদীতে নামার জন্য জেলেরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আমরাও মাছঘাটের বাক্সগুলোকে ধুয়েমুছে পরিষ্কার করে নিয়েছি। আশাকরি মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) সকাল থেকে ঘাটে মাছ বিক্রি শুরু হবে।  

তিনি বলেন, আমার ঘাটে ৫শ থেকে ৬শ মাছ শিকারের নৌকা আছে। তবে এ মৌসুমে সবগুলো নৌকা নদীতে যাবে না। প্রায় দুই শতাধিক নৌকার মাঝি ও জেলে জাল এবং নৌকা উঠিয়ে ফেলেছে। তারা ইটভাটাসহ অন্য পেশায় ঢুকে গেছে।  

চররমনী মোহনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য দুলাল হোসেন বলেন, আমার এলাকায় প্রায় দুইশ জেলে রয়েছে। তারা সাগর বা গভীর নদীতে মাছ শিকার করে। মেঘনা নদীর লক্ষ্মীপুর অংশ অগভীর হওয়ায় ইলিশ মাছ তেমন একটা ধরা পড়ে না। তাই জেলেরা নোয়াখালীর সুবর্ণচর এবং হাতিয়া এলাকার দিকে মাছ শিকার করতে চলে যাবে।  

সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সারোয়ার জামান বাংলানিউজকে বলেন, ২২ দিনে নিষেধাজ্ঞার সময় প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে মৎস্য বিভাগ নিয়মিত নদীতে অভিযান পরিচালনা করেছে। আমরা জেলেদের নিষিদ্ধ সময়ে মাছ শিকার না করতে সচেতন করেছি। তাই এবার অভিযান অনেকটা সফল হয়েছে। আশাকরি মা ইলিশ নির্বিঘ্নে ডিম ছাড়তে পেরেছে।      

জেলা মৎস্য জরিপ কর্মকর্তা মো. কাইয়ুম তালুকদার বাংলানিউজকে বলেন, লক্ষ্মীপুরে ৪৯ হাজার ৯৩৩ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। তাদের মধ্যে তালিকাভূক্ত ৩৮ হাজার ৭৩৬ জন জেলেকে ভিজিএফ এর আওতায় ২০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে।   

এদিকে বেসরকারি একটি এনজিও সংস্থার হিসেবে লক্ষ্মীপুরে প্রায় ৫৪ হাজারের বেশি জেলে মেঘনা নদীতে মাছ শিকারে নিয়োজিত রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।