ঢাকা: ‘একটি চক্র দীর্ঘ সাত-আট বছর ধরে অবৈধভাবে ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রোটোকলের (ভিওআইপি) ব্যবসা করে আসছিল। দীর্ঘদিন ব্যবসায় চক্রটি হাতিয়ে নিয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ।
বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১০ এর অধিনায়ক, অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মাহফুজুর রহমান এসব তথ্য জানান।

আটকরা হলেন- আমির হামজা (৩৩), আলমগীর হোসেন (৪৫), শামীম মিয়া (২৯) ও সাগর মিয়া (২৭)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডিওআইপি ব্যবসায় ব্যবহৃত ২টি সিপিইউ, ২টি মনিটর, ১টি মাউস, ১টি কি-বোর্ড, ২টি প্রিন্টার, ২টি জেনারেটর, ১টি পেপার কাটার মেশিন, ১টি ডিজিটাল ওজন মেশিন ও ৪টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান বলেন, অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়ীরা বিটিআরসি থেকে লাইসেন্স গ্রহণ ছাড়াই অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। প্রিন্টিং প্রেসে যে বিপুল পরিমাণ আন্তর্জাতিক কলিংকার্ড পাওয়া গেছে তা যদি ব্যবহার হতো তাহলে বাংলাদেশ সরকার আনুমানিক ১৯ কোটি ৪৭ লাখ ৪৭ হাজার ৭৫০ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হতো।


সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ভিওআইপির ব্যবসা করে আসছিল। তারা ১৯ কোটি টাকার রাজস্ব থেকে সরকারকে বঞ্চিত করতে চেয়েছিল। তবে তার আগেই আমরা তাদেরকে আটক করি। তারা হুন্ডির মাধ্যমে ও অসাধু ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে এসব ব্যবসা পরিচালনা করতো। তাদেরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে পরে বলা যাবে তারা কত টাকার ব্যবসা করেছে।
বিটিআরসির এনফোর্সমেন্ট অ্যান্ড ইনস্পেকশন বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর এস এম গোলাম সারওয়ার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, এই চক্রটি সফটওয়্যার ভিত্তিক সুইচের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন করে অবৈধভাবে আন্তর্জাতিক কল রাউট করতো। তারা টেলিযোগাযোগ সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের রাজস্ব ও চার্জ ফাঁকি দেওয়ার উদ্দেশ্যে যান্ত্রিক, ভার্চ্যুয়াল ও সফটওয়্যার ভিত্তিক কৌশল অবলম্বন করে অবৈধভাবে আন্তর্জাতিক পেমেন্ট ও রিচার্জ সেবা দিয়ে আসছিল।
তিনি বলেন, অবৈধ ভিওআইপির চক্রটি বিটিআরসির চোখ ফাঁকি দিয়ে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ টেলিযোগাযোগ সেবা দিয়ে যাচ্ছিল। অনেক সময় বিটিআরসির গ্যাপের কারণেও তারা সাময়িক ব্যবসা করেছে। তবে শেষ পর্যন্ত তারা ধরা পড়েছে। বিটিআরসির টেকনোলজি আরও আপডেট ও লজিক পরিবর্তন করতে হবে।
গোলাম সারওয়ার বলেন, প্রতি ১২ ঘণ্টা পর বিটিআরসির সেটআপ লজিক আছে, সেগুলো আমরা প্রয়োগ করি। এর মধ্যে যেসব সিমে সন্দেহজনক মনে হয় সেই সিমগুলো ব্লক করে দেওয়া হয়। অবৈধ ব্যবসায়ীদের সিম ব্লক করার পরে তারা নতুন নতুন সিমের স্টক আনে। এভাবে তারা তাদের অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে আসছে। অবৈধ এসব ব্যবসায়ীরা দেশের বাইরে থেকে টেকনিক্যাল জ্ঞান অর্জন করে। তাদের মাস্টারমাইন্ড থাকে এবং তারা টেকনিক্যাল সাপোর্ট দেয়। তারা সব সময় আপডেট থাকে এবং বিটিআরসি মডুয়েলকে কীভাবে ফাঁকি দেওয়া যায় তা এনালাইসিস করে তা ইমপ্লিমেন্ট করার চেষ্টা করে তারা। অবৈধ ভিওআইপি নিয়ে বিটিআরসির যেসব কর্মকর্তারা কাজ করেন তাদের মনিটরিং করতেও আমাদের একটি গ্রুপ কাজ করে।
বাংলাদেশ সময়: ০২০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২১
এমএমআই/এএটি