ঢাকা: দেশের বেশিরভাগ জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও শরীয়তপুরের অবস্থা কিছুটা অবনতির দিকে। প্রমত্তা পদ্মা উত্তাল হয়ে ওঠায় রাজশাহীর পদ্মানদী তীরবর্তি ও চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
শেরপুর: শেরপুরের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি না বাড়লেও সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে পানি বাড়ছে। চর পমিারী ইউনিয়নের ভাগলগর ও ডাকপড়া গ্রামের নদী ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। জেলায় এ পর্যন্ত ১০ ইউনিয়নের অর্ধশত গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে রয়েছে। সদর উপজেলার চেয়ারম্যান মো: ইলিয়াস উদ্দিন জানান, দুর্গত এলাকায় সরকার থেকে এখনও কোন সাহায্য পাওয়া যায়নি।
শেরপুর জেলা প্রশাসক মো: নাসিরুজ্জামান জানান, নদী ভাঙ্গনের শিকার এমন ব্যক্তিদের বন্যার পরে খাস জমি বন্দোবস্ত করা হবে।
সিরাজগঞ্জঃ সিরাজগঞ্জের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলা পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ৯ সেঃ মিঃ কমে শনিবার দুপুরে বিপদসীমার ২৭ সেঃ মিঃ ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
রাজশাহী: প্রমত্তা পদ্মায় হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পেয়ে রাজশাহীর পদ্মানদীর তীরবর্তি ও চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এরইমধ্যে জেলার পবা উপজেলার কয়েকটি গ্রাম ও নগরীর পদ্মা তীরবর্তি পঞ্চবট্টি, তালাইমারী এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। কমপে দেড়শ বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকে গেছে।
পঞ্চবট্টি এলাকার দিন মোহাম্মদ বাংলানিউজকে জানান, গত কয়েক বছর ধরে পদ্মানদীতে পানি না আসায় তারা নদীতীরের ফাঁকা স্থানে বাড়িঘর তৈরি করে বসবাস করে আসছিলেন। তবে গত দুই দিনে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বাড়ি ঘর প্লাবিত হয়েছে।
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মাহাতাব উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, পদ্মায় পানি বাড়তে শুরু করেছে। তবে উদ্বিঘœ হওয়ার কিছু নেই। রাজশাহীতে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমার অনেক নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রাজশাহী শহর রা বাধও সুরতি রয়েছে।
জামালপুর: যমুনার পানি কমতে শুরু করায় জামালপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় যমুনার পানি ১৭ সেন্টিমিটার কমে শনিবার সকালে বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বিপদসীমার ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি ওঠায় বন্ধ রয়েছে জেলার শতাধিক শিা প্রতিষ্ঠান।
শরীয়তপুর: পদ্মার পানি বিপদসীমার ২১ সেন্টিমিটার ও কীর্তিনাশা নদীর পানি বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় শরীয়তপুরে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হয়েছে। সংযোগ সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় তিনবার স্থানান্তর করা হয়েছে মঙ্গলমাঝির লঞ্চঘাট। শরীয়তপুর পৌর শহরের ৫টি ওয়ার্ডসহ জেলার ৬৫ টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩০ টি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত। পানিবন্দি হয়ে পরেছে জেলার প্রায় ৩৫ হাজার পরিবার। তলিয়ে গেছে প্রায় ১২ হাজার একর জমির ফসল। দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানি ও গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।
জেলায় এখন পর্যন্ত কোন বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়নি। তবে সরকারিভাবে দুর্গতদের মাঝে ৫৫ মেঃ টন চাল বিতরণ করেছে জেলা প্রশাসন।
এদিকে জেলার জাজিরা উপজেলার মঙ্গলমাঝির ঘাট থেকে ভেদরগঞ্জ উপজেলার তারাবুনিয়া পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটিার এলাকাজুড়ে ব্যাপক ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ভাঙ্গনে গত দুই দিনে ৫শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। তারাবুনিয়া নতুন বাজার ও স্টেশন বাজারের আংশিক নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১০