ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

৪৯ মামলার আসামি কাঞ্চনের বিরুদ্ধে মায়ের সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২১
৪৯ মামলার আসামি কাঞ্চনের বিরুদ্ধে মায়ের সংবাদ সম্মেলন সংবাদ সম্মেলনে বৃদ্ধা কমরের নেহার ও তার স্বজনরা

ঢাকা: দান করা সম্পত্তি অক্ষত রাখতে আলোচিত ৪৯ মামলার আসামি একরামুল আহসানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার মা কমরের নেহার ও তার স্বজনরা।

বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মায়ের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মেয়ে ফাতেমা আক্তার।  

সংবাদ সম্মেলনে কমরের নেহার বলেন, ‘আমার বয়স ৮৪ বছর। আর কয়দিন বাঁচবো জানি না। এজন্য ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনিদের অসিয়ত করে যাচ্ছি, মৃত্যুর পরও যেন আমার দান করা সম্পত্তি অক্ষত থাকে এবং তা মাদ্রাসা ও এতিমখানার কাজে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু আমার আশঙ্কা, মৃত্যুর পর আমার মেঝ ছেলে আলোচিত ৪৯ মামলার আসামি একরামুল আহসান কাঞ্চন মাদরাসা-এতিমখানা হতে দেবে না। কারণ এর আগে সে তার বাবার অসিয়ত করে যাওয়া হেফজখানা বন্ধ করে দিয়েছে। এজন্য মিডিয়া ও প্রশাসনের সহায়তা চাই, যাতে আমার অসিয়ত সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয়। ’

লিখিত বক্তব্যে কমরের নেহার বলেন, ‘আমার স্বামী জীবিত থাকতে আমার নামে কিছু সম্পত্তি ক্রয় করেছিলেন। মূলত, সেই জমি নিয়ে ২০০৯ সাল থেকে মেজ পুত্র কাঞ্চনের সঙ্গে বিরোধ শুরু হয়। কারণ স্বামীর মতো আমিও চেয়েছিলাম, ধর্মীয় কাজ করে যাওয়ার জন্য। সে ইচ্ছা থেকেই নিজের কিছু জমি মাদরাসা ও এতিমখানায় দান করার নিয়ত করি। কিন্তু দানের বিষয়টি অন্য সন্তানরা মেনে নিলেও কাঞ্চন মানতে পারেনি। তার কাছে ইহকালের সম্পদের ভাগ পাওয়া অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অথচ কাঞ্চন উত্তরাধিকারসূত্রে পর্যাপ্ত জমিজমা পেয়েছে। ’ 

তিনি বলেন, ‘আমার সকল সন্তানকে বিষয়টি বুঝিয়েছি। সবাই সহজভাবে বুঝলেও স্ত্রীর প্ররোচনায় কাঞ্চন মানতে চায়নি। সে সময়-অসময়ে আমার ওপর চাপ প্রয়োগ করে যেন, আমার সম্পত্তি মাদ্রাসায় দান না করে পুরোটাই তাকে লিখে দেই। আমি কাঞ্চনের কথা মেনে না নেওয়ায়, এক মহিলাকে মা বানিয়ে জমির জাল দলিল তৈরি করে। সেখানে দেখা যায়, প্রায় ১ যুগ আগে সে আমাকে মৃত দেখিয়ে এবং তার একমাত্র বোন ফাতেমাকে বাদ দিয়ে ওয়ারিশনামা তৈরি করেছে। ’ 

কমরের নেহার আরও বলেন, ‌‌‘এই জাল দলিল বাতিল করতে এবং আমার কন্যার উত্তরাধিকার স্বত্ব ফিরিয়ে আনতে আমি আদালতের দারস্থ হই। এতে কাঞ্চন ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে ২টি, তার বড় ভাই আক্তারী কামালের বিরুদ্ধে ৭টি, তার বোনের বিরুদ্ধে ৩টি এবং তার মামাতো ভাই শাকেরুল কবিরের বিরুদ্ধে ৪টি মামলা দায়ের করে। এখানেই থামেনি কাঞ্চন, মাদরাসা কর্তৃপক্ষ যেন আমার জমি গ্রহণ না করে সেজন্য রাজারবাগ দরবার শরীফ ও মুহম্মদীয়া জামিয়া শরীফ মাদরাসা কর্তৃপক্ষের লোকজনের উপর মামলা-হামলা চালায়। মাদ্রাসায় যাওয়া বোরকা পরিহিতা নারীদের সে উত্ত্যক্ত করতো। ’

তিনি আরও বলেন, ‘২০১৪ সালে মুহম্মদীয়া জামিয়া শরীফ মাদরাসা প্রায় ৭৬ শতাংশ জমি দান করি। এরপর কাঞ্চন বলে বেড়ায়, আমাকে নাকি গুম করে সম্পদ লিখে নেওয়া হয়েছে। নতুন করে প্রচার শুরু করছে, পীর সাহেব নাকি আমাকে বাইয়াত করে ভুলভাল বুঝিয়ে সম্পত্তি লিখে নিচ্ছেন। আমি নাকি তাদের বাবার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করে পীর সাহেবকে সব লিখে দিচ্ছি। অথচ আমি ২৮ বছর ধরে দরবার শরীফের বাইয়াত। যে সম্পত্তি দান করেছি সেটা মাদরাসা ও এতিমখানার নামে, পীর বা দরবার শরীফের নামে নয়। ’

এর আগে, ১৫ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন আলোচিত ৪৯ মামলার আসামি একরামুল আহসান কাঞ্চন। সেসময় তিনি অভিযোগ করেন- সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়া, মামলা দিয়ে অর্থ আদায়সহ নানা অভিযোগে তার নামে দেশের বিভিন্ন জেলায় একাধিক মামলা করেছে একটি মহল। তার দাবি, হয়রানি করতেই মামলাগুলো করা হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২১
এমএমআই/এনএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।