ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

পরীমনির বাসা থেকে উদ্ধারকৃত মদের দাম ১ লাখ ৬৬ হাজার টাকা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০২১
পরীমনির বাসা থেকে উদ্ধারকৃত মদের দাম ১ লাখ ৬৬ হাজার টাকা

ঢাকা: পিরোজপুরের শামসুন্নাহার স্মৃতি ২০১৪ সালে চলচ্চিত্র জগতে পা রেখে নাম পাল্টে বনে যান পরীমনি। শুধু নামই নয়, এর সঙ্গে পাল্টে যেতে থাকে তার জীবনযাত্রার ধরণ।

 

সিনেমার রঙ্গিন জগতে জনপ্রিয়তার পাশাপাশি জীবনযাপনেও বেপরোয়া হয়ে উঠতে থাকেন এই অভিনেত্রী।

২০১৬ সাল থেকেই নিয়মিত অ্যালকোহল অর্থাৎ মদে আসক্ত হয়ে পড়েন পরী। উচ্চ মাত্রায় আসক্তির কারণে বাসায়ই গড়ে তুলেন ‘মিনি বার’। যেখানে থরে থরে সাজানো ছিল বিদেশি দামী ব্র্যান্ডের মদ। মদ ছাড়াও বিভিন্ন সময় নতুন ধরনের মাদক ব্যবহারেও ছিলেন তিনি অভ্যস্ত।

বুধবার (০৪ আগস্ট) বিকেলে সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে পরীমনির বাসায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদসহ উদ্ধার করা হয় ভয়ংকর মাদক লাইসার্জিক অ্যাসিড ডাইইথ্যালামাইড (এলএসডি) এবং আইস।

এ ঘটনায় গ্রেফতার পরীমনি ও তার সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপুর বিরুদ্ধে বনানী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেছে র‍্যাব। যে মামলায় আদালত চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিকে, মামলার তদন্তভার পাওয়ায় পরীমনিসহ অন্যান্য আসামিদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

পরীমনির বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার এজাহার অনুযায়ী, তার বাসা থেকে সর্বমোট প্রায় ২ লাখ ১১ হাজার ৫০০ টাকার মাদকদ্রব্য জব্দ করেছে র‍্যাব। এর মধ্যে শুধুমাত্র মদই উদ্ধার করা হয়েছে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের।

এজাহারে বলা হয়, বনানীর ১৯/এ সড়কের ওই বাড়ির ৫ম তলায় বিপুল পরিমাণ মাদক মজুদ আছে এমন গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযানে যায় র‍্যাব। এরপর ওই বাসা থেকে পরীমনি ও দীপুকে আটক করা হয়। পরে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য ও দেখানো মতে ১৯ বিভিন্ন বিদেশি ব্র্যান্ডের বিদেশি মদ জব্দ করা হয়। যার পরিমাণ ১৮ দশমিক ৫ লিটার। প্রতি লিটার বিদেশি মদের আনুমানিক মূল্য ৯ হাজার টাকা হিসেবে এসব মদের মোট দাম ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫০০ টাকা।

এছাড়া, ৪০ হাজার টাকা মূল্যের মাদক আইস ও ৫ হাজার টাকা মূল্যের এলএসডি জব্দ করা হয়। এ সময় বাসা থেকে আরও বিদেশি মদের খালি বোতল ও মাদক সেবনের অন্যান্য সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়।

এ সময় পরীমনি ও দীপু কেউই এসব মাদকের বৈধ কাজপত্র প্রদর্শনে ব্যর্থ হয় এবং এ বিষয়ে তারা সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেনি। জিজ্ঞাসাবাদে পরীমনি জানায়, তিনি প্রায় সময়ই রাজ মাল্টিমিডিয়ার সত্ত্বাধিকারী নজরুল ইসলাম রাজের কাছ থেকে বিদেশি মদ সংগ্রহ করতেন। এরপর রাতে রাজের বাসায় অভিযানে যায় র‍্যাব।

পরীমনির বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় জনৈক কবির নামে একজন এই মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করা হয়। তবে তার বিস্তারিত পরিচয় নিশ্চিত না হওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

বুধবার (০৪ আগস্ট) বিকেলে সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে পরীমনির বাসায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদসহ অন্যান্য মাদক উদ্ধার করা হয়। এরপর প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজের বাসা থেকেও মাদক ও সিসার সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।

অভিযানের প্রথম দিকে পরীমনি র‍্যাবকে কোনো সহযোগিতা করেননি। তবে পরে তার ঘর তল্লাশি করে ফ্ল্যাটের কেবিনেট থেকে বিদেশি মদ, লাইসার্জিক অ্যাসিড ডাইইথ্যালামাইড (এলএসডি) এবং আইস উদ্ধার করা হয়।

অভিযানে অংশ নেওয়া র‍্যাব কর্মকর্তারা জানান, পরীমনির বাসার এমন কোনো জায়গা নেই, যেখানে মদ নেই। তার কাছে দেশি-বিদেশি নামীদামী ব্র্যান্ডের মদ ছিল, যা বাংলাদেশে খুব কমই আমদানি হয়।

বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) বিকেলে র‍্যাব সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ র‍্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈন জানান, শামসুন্নাহার স্মৃতি ওরফে স্মৃতিমনি ওরফে পরীমনি ২০১৪ সালে সিনেমা জগতে আসেন। এ পর্যন্ত ৩০টি সিনেমা ও ৫/৭ টি টিভিসিতে অভিনয় করেছেন। ২০১৬ থেকে তিনি নিয়মিত অ্যালকোহল সেবন করেন। মাত্রাতিরিক্ত চাহিদা মেটাতে তিনি বাসায় একটি মিনিবার করেছেন। মিনিবার থাকায় তার বাসায় পার্টির আয়োজন করা হতো। সেই পার্টিতে বিভিন্ন প্রকার মাদক সরবরাহ করতেন রাজ।

বাংলাদেশ সময়: ০১০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০২১
পিএম/জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।