ঢাকা: কঠোর বিধি-নিষেধ বা ‘লকডাউনে’ রাজধানীর মিরপুর ১৩ নম্বর বিআরটিএ বন্ধ রয়েছে। তবুও অনেকে যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন কিংবা অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের বিষয়ে বিআরটিএতে আসেন।
মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন স্লিপের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য গেলে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় সে কাজ করে দিচ্ছেন আনসার সদস্য ও দালাল চক্রের সদস্যরা। মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন স্লিপের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য প্রতি সিলের জন্য এ চক্রকে দিতে হচ্ছে ৫০০ টাকা।
বুধবার (০৪ আগস্ট) সরেজমিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মিরপুর ১৩ নম্বর বিআরটিএর সামনে অবস্থানকালে টাকা লেনদেন করতে দেখা গেছে।
বুধবার সকাল ১০টায় দেখা যায়, বিআরটিএর গেটের সামনে মানুষের জটলা। মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশেনর সিল নিয়ে গেটের বাইরে আনসার সদস্যদের সঙ্গে অনেককে দরদাম করতে দেখা যায়। আনসার সদস্যরা সিল দেখে রেট বলেন। এরপর সিল পকেটে নিয়ে ভেতরে চলে যান। আবার অনেককে সিলের অপেক্ষায় গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। সুযোগ বুঝে দালালরাও কাস্টমার ঠিক করেন। তারা কমিশন ভিত্তিতে আনসার সদস্যদের সঙ্গে কাজ করেন।
পাঠাও চালক আবরার হোসন আফিফ বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স ডেলিভারি স্লিপের মেয়াদ শেষ। রাস্তায় খালি সার্জেন্ট ধরে। ধরলেই করে জরিমানা। তাই ডেলিভারি স্লিপের মেয়াদ ৩ মাস বাড়ানোর জন্য এখানে আসি। আনসার আরিফ ভাইয়ের কাছে স্লিপ জমা দিয়েছি। তিনি স্লিপের ওপর একটি গোল সিল মেরেছেন। ৫০০ টাকা লাগছে। দালালেরা বলেছেন, সিল থাকলেই হবে। সিল দেখলে সার্জেন্টরা মোটরসাইকেল আটকাবে না।
একটি বেসরকারি হাসপাতালের মার্কেটিং অফিসার ফারুক হোসেন মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন প্লেটের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আনসার সদস্য আলমগীরের কাছে স্লিপ জমা দেন। এ জন্য চুক্তি করেন ৫০০ টাকা। আধা ঘণ্টার মধ্যে কাজ শেষ করে স্লিপ ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও তা হাতে পাননি। রেজিস্ট্রেশন স্লিপের মেয়াদ বাড়াতে হলে তাতে শুধু একটি সিল দিতে হয়। একটা সিল দিলেই ৫০০ টাকা। দেশটার যে কী হবে। সব জায়গায়ই দুর্নীতিতে ভরে গেছে। এখানে বেশি দুর্নীতি হয়।
আনসার সদস্য বায়জীদ, আলমগীর ও আরিফকে তিন দিন ধরে বিআরটিএর গেটে দায়িত্বরত অবস্থায় দেখা গেছে। এই তিনজেই সিল দেওয়ার সঙ্গে জড়িত বলে জানা যায়। বিআরটিএর গেটে প্রতিদিনই শতাধিক মোটরসাইকেল চালক এ কাজের জন্য আসেন।
বৃহস্পতিবার (০৫ আগস্ট) সকাল ১১টায় মিরপুর বিআরটিএর উপপরিচালক শফিকুজ্জামান ভুঁইয়া ঘটনা স্থলে আসেন। তিনি বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে ঘটনার সত্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
বিআরটিএর পরিচালক মাহবুব ই রাব্বানি বলেন, অফিস তো এখন বন্ধ। এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারছি না, খোঁজ নেব।
বাংলাদেশ সময় ঘণ্টা: ১৮৩০, আগস্ট ০৫, ২০২১
এমএমআই/এসআইএস