ঢাকা: শুক্রবার (২৩ জুলাই) ভোর থেকেই শুরু হবে ১৪ দিনের ‘লকডাউন’। ফলে ঈদ শেষে পুনরায় কর্মস্থলে যোগ দিতে নাড়ির টানে বাড়ি যাওয়া মানুষ পুনরায় রাজধানী ঢাকায় ফিরছেন।
কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভোরে দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে যেসব লঞ্চ ঢাকায় এসেছে প্রতিটি লঞ্চে যাত্রী ছিল হাতেগোনা কয়েকজন। তবে বৃহস্পতিবার রাতের লঞ্চগুলোতে যাত্রীদের চাপ বাড়বে। কারণ শুক্রবার থেকে কঠোর ‘লকডাউন’ শুরু হচ্ছে। যাদের শনিবার থেকে অফিস করতে হবে তারা যেভাবেই হোক ঢাকায় ফিরবে।
বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের পল্টুনগুলোতে নেই যাত্রীদের ভিড়। লঞ্চ স্টাফদেরও নেই হাকডাক। তুলনামুল কিছুটা নিরব ছিল টার্মিনাল। ভোর ৬টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত মাত্র ৪৬টি লঞ্চ সদরঘাটে এসেছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। লঞ্চগুলোতে যাত্রী সংখ্যাও ছিল কম। কোনো লঞ্চে ১০০, কোনটায় ২০০, আবার কোনটায় ১৫ থেকে ২০ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকায় এসেছে। তবে আজ রাতের লঞ্চগুলোতে যাত্রী বেশি পাওয়া যাবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এবিষয়ে বরিশাল রুটের সুন্দরবন-১০ লঞ্চের মাস্টার মো. কামাল বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের পরদিন কখনোই যাত্রী থাকে না। আজ ভোর সাড়ে ৫টায় লঞ্চ ঢাকায় এসেছে। যাত্রী ছিল মাত্র ২০০ জন। যা দিয়ে তেলের খরচও উঠে না। আবার আগামীকাল থেকে ১৪ দিনে কঠোর ‘লকডাউন’ শুরু হবে। তাই যাদের শনিবার থেকে অফিস করতে হবে তারাই শুধু ঢাকাতে আসবে। আশা করছি আজ রাতের লঞ্চগুলোতে যাত্রী কিছুটা বৃদ্ধি পাবে।
পটুয়াখালীর রুটের ইয়াদ-৭ লঞ্চের স্টাফ মো. শিপন বাংলানিউজকে বলেন, গতকাল রাতে পটুয়াখালীর দুমকী থেকে মাত্র ১৫-২০ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকায় আসছি। ঈদের দিন থাকায় যাত্রী কম ছিল। আজ রাত থেকে বাড়তে পারে যাত্রীর সংখ্যা। শুক্রবার থেকে শুরু হবে ১৪ দিনের কঠোর ‘লকডাউন’। তাই যাদের প্রয়োজন তারাই চলে আসবে।
সুন্দরবন-১০ লঞ্চে বরিশাল থেকে এসেছেন হারুণ বিশ্বাস। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, একটি সরকারি ব্যাংকে চাকরি করি। প্রায় এক বছর হয়েছে বাড়ি যাই না। কোরবনির ঈদ গরু কোরবানি দিয়েছি বাড়িতে তাই এক দিনের জন্য বাড়ি গিয়েছিলাম। অন্য সময় হলে শনিবার রাতের লঞ্চে এসে রোববার থেকে অফিস করতাম। কিন্তু কাল থেকে কঠোর ‘লকডাউন’ শুরু তাই কষ্ট হলেও চলে আসলাম। লঞ্চ একেবারে ফাঁকা ছিল। যাদের প্রয়োজন আছে শুধু তারাই এসেছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের ট্রাফিক বিভাগ থেকে বাংলানিউজকে জানান, দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হলো নৌপথ। ভোর ৬টা থেকে দেশের বিভিন্ন রুটে ২২টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে। এমধ্যে চাঁদপুর রুটে গেছে ১৬টি, শরিয়াতপুর রুটে ৪টি এবং ভোলা ও বরিশাল রুটে ২টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে। আর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছে মাত্র ৪৬টি লঞ্চ। এলঞ্চগুলোতে যাত্রী সংখ্যা ছিল কম। তবে রাতের লঞ্চগুলোতে যাত্রী বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে কঠোর ‘বিধি-নিষেধ’ শিথিল করায় ১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে নৌযান পরিচালনার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ। তবে, যাত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। এরপর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী ২৩ জুলাই সকাল থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ নৌপথে সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান (লঞ্চ, স্পিডবোট, ট্রলার ও অন্যান্য) চলাচল বন্ধ থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৫ ঘণ্টা, ২২ জুলাই, ২০২১
জিসিজি/কেএআর