ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২, ০৩ জুলাই ২০২৫, ০৭ মহররম ১৪৪৭

জাতীয়

ঘরের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর জালনোটের কারখানা 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:০৭, জুলাই ১২, ২০২১
ঘরের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর জালনোটের কারখানা 

ঢাকা: বছরখানেক আগে আব্দুর রহিম শেখ রাজধানীর বাড্ডার নুরেরচালা সাঈদনগর এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। স্বামী-স্ত্রী মিলে ঘরের মধ্যেই গড়ে তুলেন জালনোট ছাপানের মিনি কারখানা।

একাজে আব্দুর রহিমের আরও তিন বন্ধু সহযোগিতা করে আসছিল। মাসে এক কোটি টাকা মূল্যের বেশি জালনোট প্রস্তুত করা হতো এই কারখানায়।  

এদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (গুলশান) বিভাগ গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে ওই দম্পতির মিনি জালনোট তৈরির কারখানার তথ্য।

সোমবার (১২ জুলাই) সকালে অভিযান চালিয়ে আব্দুর রহমান শেখ ও তার স্ত্রী ফাতেমা বেগমসহ তিন সহযোগীকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেফতার বাকি সদস্যরা হলেন- গার্মেন্টস ব্যবসায়ী হেলাল খান, আনোয়ার হোসেন ও ইসরাফিল আমিন।

অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া ডিএমপির গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. মশিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, গত তিন বছর ধরে ওই দম্পতি জালনোট তৈরি করে আসছিল। কেউ যাতে টের না পায় সেজন্য ঘরোয়া পরিবেশে তারা জালনোট প্রস্তুত করতেন। গত এক বছর ধরে বাড্ডার নুরেরচালায় এই বাসা ভাড়া নিয়ে কারখানা তৈরি করেন রহিম।  তিনি বলেন, চক্রের পাঁচ সদস্য রয়েছেন। তাদের মধ্যে আব্দুর রহিম শেখ ও তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম এ চক্রের মূলহোতা। বাকি সদস্যরা আব্দুর রহিমের বন্ধু। তারা সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন।  

ডিসি মশিউর রহমান বলেন, নুরেরচালার সাঈদ নগরের একটি সাততলা ভবনের ষষ্ঠ তলায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণের জালনোট তৈরির কারখানা থেকে এক হাজার টাকা ও ৫০০ টাকা মূল্যমানের প্রায় ৪৩ লাখ টাকা মূল্যের জালনোট, বিপুল পরিমাণ জালনোট তৈরির উপকরণ ও তৈরির সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, চক্রটি আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এসব জালনোট তৈরি করছিলেন। তারা মাসে কোটি কোটি টাকার জালনোট ছাপিয়ে বাজারে ছড়িয়ে দিতেন। তবে ঈদকে কেন্দ্র করে তাদের কার্যক্রম আরও বেড়ে যায়।  

গ্রেফতার আব্দুর রহিম শেখ এর আগে হাতিরঝিল এলাকায় ভাড়া বাসায় জালনোটের কারবার করে আসছিল। সেখানে সুবিধা না হওয়ার তারা গত এক বছর আগে বাড্ডার নুরেরচালা এলাকায় চলে আসেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে।  

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ফাতিমা বেগম জানান, তারা ২০১৯ সালে হাতিরঝিল এলাকার একটি বাসায় জাল টাকার তৈরি করার সময় পুলিশের কাছে গ্রেফতার হয়েছিল। ওই সময় তার স্বামী রহিম পালিয়ে যান। এর আগে তারা বেশ কয়েকবার জাল টাকা ও মাদক ক্রয়-বিক্রয়ের কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিল বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। তাদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা গেলে অনেক তথ্য পাওয়া যাবে বলেও জানান ডিসি মশিউর।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০২১
এসজেএ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।