ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১২ জুন ২০২৫, ১৫ জিলহজ ১৪৪৬

জাতীয়

ন্যায্য দাম নেই, মাটিতে দুধ ঢেলে খামারিদের প্রতিবাদ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪:৫৯, জুন ২৬, ২০২১
ন্যায্য দাম নেই, মাটিতে দুধ ঢেলে খামারিদের প্রতিবাদ মাটিতে দুধ ঢেলে খামারিদের প্রতিবাদ। ছবি: বাংলানিউজ

নাটোর: নাটোরের সিংড়া উপজেলায় ক্রেতা সংকট ও ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় মাটিতে দুধ ঢেলে অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছেন খামারিরা।  

শনিবার (২৬ জুন) সকালে উপজেলার বাহাদুরপুর বটতলা এলাকায় প্রায় ৩০ জন খামারি দুধ ঢেলে দিয়ে বাড়ি ফিরে যান।

বাহাদুরপুর বটতলা এলাকার খামারি সাদ্দাম হোসেন ও আবুল বাশার জানান, সিংড়া সদরে এখনও ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে দুধ বিক্রি হয়। অথচ তাদের এলাকায় প্রতি কেজি দুধ বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজিদরে। তার ওপর রয়েছে ক্রেতা সংকট। ফলে তাদের এলাকার অন্তত শতাধিক খামারি দুধ বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন।  

তারা বলেন, প্রতিদিন বাহাদুরপুর বটতলা বাজারে গড়ে ২ মেট্রিক টন পরিমাণ দুধ আমদানি হয়। কিন্তু ক্রেতা সংকটের কারণে তারা দুধের ন্যায্য মূল্য পান না।

এতে করে লোকসান গুনতে হচ্ছে খামারিদের। তারা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে খড় ও ভূষির দাম বেশি আর সেই তুলনায় দুধের দাম একেবারে কম। এছাড়া দুধ উৎপাদন হলেও তা বাজারজাত করণের ভাল ব্যবস্থা না থাকায় দুধ নিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এতে করে খামারিরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। তবে সরকারি ব্যবস্থাপনায় দুগ্ধ খামার গড়ে তোলা হলে এবং দুধ বাজারজাত করতে পারলে এই সংকট থাকবে না বলে তারা দাবি করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নাটোরের সিংড়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে প্রায় ৬০০টি গরুর খামার রয়েছে। রয়েছে বিভিন্ন বাজার ও হাট। এসব স্থানীয় হাট ও বাজারে প্রতিনিয়ত দুধ বিক্রি হয়। বাড়িতে পুষ্টির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বাজারে প্রতিদিন একেকজন খামারি ৪০ থেকে ৬০ লিটার করে দুধ বিক্রি করতে আসেন। কিন্তু লকডাউনের কারণে একদিকে বাজার মন্দা অন্যদিকে ক্রেতা আসতে না পারায় দুধ কেনার মতো ক্রেতাও থাকে না। ফলে দুধ নিয়ে বাড়ি ফেরাও কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অবশেষে বুক ভরা কষ্ট নিয়ে দুধসহ বাড়ি ফিরে যান আবার  কোনো কোনো সময় পানির দরে দুধ বিক্রি করে হাফ ছেড়ে বাঁচেন। এমন পরিস্থিতিতে দুধ বাজারজাতকরণের ব্যবস্থা সৃষ্টি করা অথবা মিল্ক ভিটা গড়ে তোলার দাবি খামারিদের।

সিংড়া পৌর এলাকায় বসবাসরত স্থানীয় সাংবাদিক রাজু আহম্মেদ জানান, প্রতিদিন সিংড়া বাজারে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজিদরে দুধ ক্রয় করেন। বাহাদুরপুরসহ গ্রামাঞ্চলে দুধের দাম কম এবং ক্রেতা সংকটে ভোগেন। পরিবহনসহ দুধ বাজারজাত করার সুব্যবস্থা করতে পারলে খামারিরা লাভের মুখ দেখতেন এবং উৎসাহিত হতেন। বিষয়টি সরকারিভাবে মনিটরিং করা দরকার।

সিংড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. খুরশিদ আলম বাংলানিউজকে জানান, কলম, চামারী, হাতিয়ান্দহ এলাকায় বহু খামারি আছে। চামারী ও হাতিয়ান্দ থেকে বেসরকারিভাবে প্রাণ ও আড়ং দুধ ক্রয় করে থাকেন। শুক্রবার কিংবা অন্যান্য ছুটির দিন দুধ ক্রয় বন্ধ থাকে। তিনি আরো বলেন, ইটালী, ডাহিয়া ইউনিয়নে সরকারি ব্যবস্থাপনায় দুধ শীতলীকরণ অর্থাৎ ক্রয় কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।