ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বাংলাদেশে অ্যারোমা ফ্লেভারের নতুন ‘হানি টি’

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১০ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২১
বাংলাদেশে অ্যারোমা ফ্লেভারের নতুন ‘হানি টি’

মৌলভীবাজার: চা জনপ্রিয় পানীয়। অতিথি আপ্যায়ন থেকে শুরু করে শারীরিক ক্লান্তি দূরীকরণের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক সতেজতা আনতে চা অতুলনীয়।

সময়ের পরিক্রমায় চায়ের রকমে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। যা এখন সৌখিন অভিজাত্যের প্রতীক হয়ে উঠছে।
 
বিষয়টিকে মাথায় রেখেই চা সংশ্লিষ্ট গবেষকরা বসে নেই। তারা তৈরি করে চলেছেন নানা জাতের নানা প্রকারের চা। যার খাদ্যগুণ, উপকার ও বৈশিষ্ট্য আলাদা আলাদা ধরনের।
 
সম্প্রতি শ্রীমঙ্গলের চতুর্থ চা নিলাম থেকে সাবাজপুর চা বাগানের উৎপাদিত ‘হানি টি’ প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার একশ টাকায়। শ্রীমঙ্গল টি ব্রোকার্স তাদের ১৩৩ নম্বর তালিকভুক্ত এই বিশেষ ধরনের চা নিলামের জন্য উত্থাপন করে এবং অকশন থেকে এই চা কিনেছে শ্রীমঙ্গলের আলমগীর টি হাউজ। সাবাজপুর চা বাগানই দেশে সর্বপ্রথম হানি টি তৈরি করে বিক্রি করেছে।
                                      
এ ব্যাপারে সাবাজপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক মো. রাশেদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ২৩ জুনের শ্রীমঙ্গলের টি অকশনে আমাদের হানি টি ৩১শ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এই চা ‘ওয়ান লিপ অ্যান্ড বাড্’ (একটি পাতা এবং কুঁড়ি) দিয়ে তৈরি। যারা প্লাকিং করে (চা উত্তোলন) তারা নির্দেশনা অনুযায়ী শুধু ওয়ান লিপ অ্যান্ড বাড্ তুলে নিয়ে আসে। এটা কস্টলি (ব্যয়বহুল) চা। শুধু কস্টলি না, স্পেশাল টি’র ভেতর যতগুলো চা আছে তারমধ্যে হানি টি ‘ওয়ান অব দ্য বেস্ট’ (অন্যতম সেরা)।
 
এই চায়ের স্পেশালিটি সম্পর্কে এই সিনিয়র ব্যবস্থাপক বলেন, এখন তো কোভিড নাইটিনের সময়। প্রেক্ষাপট ও পরিস্থিতি বিবেচনায় মানুষের ইমিউনিটি বেশি দরকার, বেশি বুস্টআপ হওয়া দরকার। এক্ষেত্রে আমাদের চা বাগানের উৎপাদিত ‘হানি টি’ ভাইরাস বা ব্যাটেরিয়ার বিরুদ্ধে খুব ভালো কাজ করে। তো এই ইমিউনিটির বিষয়টি মাথায় রেখেই কিন্তু এই চা তৈরি করা।  

‘যারা এই চা পান করবেন চায়ের যে এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে তার সঙ্গে ন্যাচারাল হানি (প্রাকৃতিক মধু) ব্লেইম (যুক্ত) করার কারণে ইমিউনিটি বুস্টআপ হয় অর্থাৎ সে আরো একটু বেশি শক্তিশালী হয়। যারা এটা খাবেন স্বাভাবিকভাবে তাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।
 
আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় প্রসঙ্গে তিনি জানান, হানি টি’র মধ্যে আমরা যে মধু ইউজ (ইউজ) করেছি সেটা সুন্দরবনের মধু। আমরা সুন্দরবন থেকেই ওই মধুগুলো কালেকশন (সংগ্রহ) করেছি। এই মধুটা হতে হয় গাঢ়। পাতলা মধু হলে হয় না। লিচু গাছ বা অন্যগাছের যে মধু সেগুলো একেবারে পাতলা। হানি টি’র জন্য ঘন বা গাঢ় মধু প্রয়োজন হয় বলে সুন্দরবনে প্রাকৃতিক মধু ব্যবহার করি।  
 
স্বাদ ও ঘ্রাণ সম্পর্কে তিনি বলেন, আপনি যখন চা খাবেন তখন চা খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনার মনে হবে যে আপনি কিছু মধু খাচ্ছেন। কারণে এখানে প্রাকৃতিক মধু দেওয়া আছে। চা পান করার সঙ্গে সঙ্গে লিকারের সাথে খুব সুইট একটা অ্যারোমা ফ্লেভার থাকবে। এটা খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই খুব সুমিষ্ট একটা ঘ্রাণ পাবেন। মুহূর্তেই আপনার মন চাঙা হয়ে উঠবে এবং তৈরি হবে ভালোলাগার অনুভূতি।
 
লিকার সম্পর্কে রাশেদুল জানান, এটার লিকার কিছুটা গ্রিনটির মতো হবে। কারণ এটার তৈরি প্রসেস (প্রক্রিয়া) গ্রিনটির কাছাকাছি চা। তবে হানি টি-কে একেবারে গ্রিন টি বলা যাবে না। গ্রিন টির মতোই এই হানি টি।  
 
এবছর আমরা হানি টি ছাড়াও লেমন টি, হোয়াইট টি, ইয়েলো টি, আলগ্রে টি (অর্থডক্স টি এবং সিটিসি), জাপানি সেনসা, মাচা গ্রিন টিসহ প্রায় দশ প্রকারের স্পেশাল টি উৎপাদন করেছি। যেগুলো টি অকশনে বিক্রি হয়ে গেছে বলে জানান সাবাজপুর চা বাগানের সিনিয়র ব্যবস্থাপক রাশেদুল ইসলাম।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৭১০ ঘণ্টা,  জুন ২৫, ২০২১
বিবিবি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।