ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সায়েদাবাদে নেই দূরপাল্লার বাস, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৬ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২১
সায়েদাবাদে নেই দূরপাল্লার বাস, ভোগান্তিতে যাত্রীরা সায়েদাবাদ বাস। ছবি: ডি এইচ বাদল

ঢাকা: দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সার্বিক কার্যাবলী ও চলাচলের বিধিনিষেধ আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করায় রাজধানীর ব্যস্ততম বাস টার্মিনাল সায়েদাবাদ থেকে কোনো ধরনের দূরপাল্লার যানবাহন ছাড়ছে না।

মঙ্গলবার (২২ জুন) ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত এ টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

হঠাৎ করে যানবাহন বন্ধ থাকার কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।

ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিনে রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সার্বিক কার্যাবলী/চলাচলের বিধিনিষেধ আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সোমবার (২১ জুন)। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ জেলাগুলোতে সার্বিক কার্যাবলী (জনসাধারণের চলাচলসহ) ২২ জুন সকাল ৬টা থেকে আগামী ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ঢাকা থেকে কোনো দূরপাল্লার বাস ছাড়ছে না এবং কোনো দূরপাল্লার বাস ঢাকায় প্রবেশও করতে পারছে না।  

কুমিল্লার চান্দিনা থেকে পরিবারের ছয় সদস্য নিয়ে ঢাকায় চিকিৎসক দেখাতে এসেছিলেন গৌতম নাগ। সকাল থেকে কুমিল্লায় যাওয়ার জন্য টার্মিনালে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি।  

তিনি বলেন, আমার ছেলের বউ ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা অসুস্থ থাকার কারণে সোমবার (২১ জুন) চিকিৎসক দেখাতে ঢাকায় এসেছিলাম। আমরা রাতে ভেবে ছিলাম সকালে সায়েদাবাদ টার্মিনাল থেকে বাস ছাড়বে। কিন্তু এখানে এসে দেখি দূরপাল্লার কোনো বাস নেই। হঠাৎ করে ‘লকডাউন’ ঘোষণা করায় আমরা বিপদে পড়ে গেছি। কুমিল্লার লাকসামের বাসিন্দা আফসার উদ্দিনের ঘটনাটিও একই রকম।

তিনি বলেন, সোমবার (২১ জুন) রাতে আমি বাস কাউন্টারের নম্বরে কল করেছিলাম, তারা বলেছিলো সকালে বাস ছাড়বে। কিন্তু এখানে এসে দেখি কাউন্টার বন্ধ। এখন কীভাবে বাড়ি ফিরবো, সেটি নিয়ে টেনশন করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে ঢাকায় চিকিৎসক দেখাতে এসেছিলেন আহমেদ আলম।  

তিনি বলেন, জানি না কীভাবে চট্টগ্রাম যাবো। সেখানে গেলে না হয় কক্সবাজারের কোনো বাস পাবো। হঠাৎ করে ‘লকডাউন’ দেবে আগে জানলে তো ঢাকাতেই আসতাম না।

এদিকে, মঙ্গলবার ভোরের দিকে বেশকয়েকটি বাস ঢাকা থেকে সিলেট ও চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলো। কিন্তু পথিমধ্যেই তাদের আটকে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের লাইন ম্যান মো. শাহীন বাংলানিউজকে বলেন, ভোরে অন্ধকারের মধ্যে টার্মিনাল থেকে দুই-তিনটা বাস ছাড়তে চেয়েছিলো। কিন্তু পুলিশ বাঁধা দেওয়ায় সেগুলোকে আবার টার্মিনালের ভেতরে নিয়ে আসা হয়েছে।  
সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে কর্তব্যরত পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. জাহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা  টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যেতে দিচ্ছি না। এ বিষয়ে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি।

অন্যদিকে, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে যাতে কোনো দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যেতে না পারে এজন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সেখান যৌথভাবে কাজ করছে বাস মালিক সমিতি।

সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা ও নগর বাস টার্মিনাল মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর মান্নান বারী বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত কোনো দূরপাল্লার বাস ছাড়ার খবর আসেনি। পুলিশের পাশাপাশি আমরাও তৎপর রয়েছি। কোনোভাবেই টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার বাস ছাড়তে দিচ্ছি না। কারণ, সরকার লকডাউন দিয়েছে। আমরা সরকারের সিদ্ধান্তের বাইরে যাবো না।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৩ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২১
ডিএন/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।