ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

ভয়ে পালাতে থাকা শিশুর মাথায় গুলি করেন এএসআই

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫০ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০২১
ভয়ে পালাতে থাকা শিশুর মাথায় গুলি করেন এএসআই

কুষ্টিয়া: মুহূর্তের মধ্যে সৎ বাবাকে প্রথমে মা ও পরে মায়ের বন্ধুর মাথায় গুলি করতে দেখে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করছিল সাত বছরের ছোট্ট রবিন। কিন্তু সে চেষ্টা ব্যর্থ হলো, ছোঁ মেরে তাকেও ধরে ফেলেন সৎ বাবা, শিশুটির ভয়ার্ত চিৎকার উপেক্ষা করে সোজা মাথায় গুলি করেন তিনি।

কয়েক মিনিটের মধ্যে এভাবেই ঝরে গেল তরতাজা তিনটি প্রাণ।    

আরও পড়ুন>কুষ্টিয়ায় প্রকাশ্যে মা-ছেলেসহ তিনজনকে গুলি করে হত্যা

রোববার (১৩ জুন) দিন দুপুরে সবার সামনে এমন হৃদয় বিদারক ঘটনাটি ঘটলো কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের ম.আবদুর রহিম সড়কের (পিটিআই রোড) কাস্টমস মোড়ের ডা. আজাদুর রহমানের চারতলা ভবনের নিচতলার মার্কেটের মধ্যে।  

রাস্তার বিপরীত পাশের চা দোকানি বলেন, হঠাৎ গুলির শব্দ শুনে তাকিয়ে দেখি, মার্কেটের ভেতর থেকে একটা ছোট্ট শিশু ছুটে বের হলো, ওর পেছনে পিস্তল ধরা লোকটি ছুটে এসে শিশুটিকে ধরে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করলো। তখনই শিশুটি মাটিতে পড়ে যায়। প্রকাশ্যে শিশুটিকে যেভাবে গুলি করলো, তাতে মনে হলো কতই না রাগ বাচ্চাটার ওপর।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল তখন ১১টা। কুষ্টিয়ার কাস্টমস মোড়ের মার্কেটে সামনে ছেলে রবিনকে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন কুমারখালীর নাটুরিয়া গ্রামের আসমা (৩৪)। তাদের সঙ্গে ছিলেন একই এলাকার শাকিল খানও (২৮)।  

এমন সময় আকস্মিকভাবে সেখানে আসেন খুলনার ফুলতলা থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সৌমেন কুমার। তিনি আসমার বর্তমান স্বামী। এসেই তিনি প্রথমে আসমার মাথায় গুলি করেন। এরপর গুলি করেন শাকিলের মাথায়। এসময় ভয়ে আসমার ছেলে রবিন দৌড়ে পালাতে গেলে তাকেও ধরে মাথায় গুলি করেন সৌমেন। এমন লোমহর্ষক ও নাটকীয় ঘটনা দেখে ছুটে আসেন আশপাশের লোকজন। চেষ্টা করেন সৌমেনকে ধরার। এসময় সৌমেন দৌড়ে তিনতলা ওই ভবনের ভেতরে ঢুকে পড়েন। সেখান থেকে তাকে ধরে পুলিশে দেন স্থানীয় জনতা। এদিকে, গুলিবিদ্ধ তিনজনকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক আসমাকে মৃত ঘোষণা করেন। আর শাকিল ও রবিনের মৃত্যু হয় অপারেশন থিয়েটারে।  আসমার সাবেক স্বামীর নাম রুবেল। রবিন তাদের ছেলে। বছর দেড়েক আগে আসমা ও সৌমেনের বিয়ে হয়। ছেলেকে নিয়ে কুষ্টিয়া শহরে ভাড়া বাসায় থাকতেন।  এখানকারই মোবাইল ব্যাংকিং এর এজেন্ট শাকিলের সঙ্গে ফোনে কথা হতো আসমার। এনিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে সৌমেন এমনটা করেছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ।  

শাকিলের সঙ্গে ফোনে কথা বলার বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছেন আসমার মা হাসিনা খাতুন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩২ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০২১
এসআই


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।