সাতক্ষীরা: করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সপ্তাহব্যাপী ‘কঠোর লকডাউন’ ঘোষণা করা হলেও সাতক্ষীরা জেলায় কমছে না করোনা সংক্রমণের হার।
মঙ্গলবার (৮ জুন) সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৮৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১০৩ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এর আগের দিন ৯৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫০ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। যা প্রায় ৫৩ শতাংশ।
সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়াত জানান, সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ১০৭ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে ২৮ জন করোনা পজেটিভ। ২৮ জনের মধ্যে দু’জন রয়েছেন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)।
সিভিল সার্জন আরও জানান, সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ২৫ জন করোনা আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে একজন রয়েছেন আইসিইউতে।
করোনা রোগী বৃদ্ধি পাওয়াতে বেড সংকটের কথা উল্লেখ করে সিভিল সার্জন জানান, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১২০টি বেড রয়েছে। আর সদর হাসপাতালে রয়েছে ৩৫টি বেড। প্রয়োজনে সদর হাসপাতালের ১০০ বেড পুরোটাই করোনা ইউনিটে পরিণত করা হবে। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা চালু রয়েছে। সদর হাসপাতালেও সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
সাতক্ষীরা সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় এখানকার ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টা কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সিভিল সার্জন বলেন, সীমান্ত এলাকাগুলোতে প্রচুর মানুষ সর্দি-জ্বর-কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। ওই এলাকাগুলোতে স্বাস্থ্য কর্মীদের মাধ্যমে র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট করা হবে। ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স করা হয় আইইডিসিআরে। ভারত থেকে সাতক্ষীরায় হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা ৩৩৭ জনের মধ্যে ১৭ জন করোনা পজেটিভ হয়েছিলেন। তাদের জেনেটিক স্যাম্পল পাঠানো হয়েছিল আইইডিসিআরে। তবে সেখান থেকে সরাসরি কোনো উত্তর এখনো পাওয়া যায়নি।
তবে সীমান্ত এলাকাগুলোতে র্যাপিড এন্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে প্রাপ্ত স্যাম্পল জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য আইইডিসিআরে পাঠানো হবে।
এদিকে, প্রশাসনের কড়া নজরদারির মধ্যে সাতক্ষীরায় ‘লকডাউনে’র চতুর্থ দিন অতিবাহিত হয়েছে। যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে চেকপোস্টগুলোতে পুলিশের কড়াকড়ি ছিল লক্ষ্য করার মত। বিভিন্ন সড়কের প্রবেশদ্বারে বাঁশ দিয়ে আটকানো হয় পুরো রাস্তা।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সাতক্ষীরায় করোনা সংক্রমণ উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। সে জন্য ‘লকডাউন’ সফল করতে হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে জনগণকে সচেতন করার পাশাপাশি তাদের বেপরোয়া আচরণ রুখে দেওয়া হচ্ছে। অপ্রয়োজনে যাতে কেউ ঘরের বাইরে না আসতে পারেন, সেজন্য পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
এদিকে, গত তিনদিনে ৪১টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের ২১৭টি অভিযানে এক লাখ ৬৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা।
সাতক্ষীরায় উদ্বেগজনকভাবে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ৫ জুন থেকে সপ্তাহব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন।
এ পর্যন্ত সাতক্ষীরায় করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ২৩২ জন। আর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪৮ জন।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৩ ঘণ্টা, জুন ৮, ২০২১
এসআই