ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

পাখির ঠোঁটে কাগজে লেখা চিরকুট, বিস্ময় প্রকাশ এলাকাবাসীর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৩ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২১
পাখির ঠোঁটে কাগজে লেখা চিরকুট, বিস্ময় প্রকাশ এলাকাবাসীর

নাটোর: ‘পাখির ঠোঁটে চিঠি দিলাম, তুমি খুলে পড়ো, স্বপ্ন দেখে ভয় পেলে হাতটা চেপে ধরো, একটা সময় এমনিভাবে প্রেমিক-প্রেমিকা তাদের মনের কথা আদান-প্রদান করতে কবুতরের ঠোঁটে করে চিঠি পাঠিয়ে দিতে। আর সিনেমা-নাটকেও এমন চিত্র দেখা যেতো হর-হামেশাই।

কিন্তু তথ্য-প্রযুক্তির যুগে এসে সেটি আর প্রযোজ্যের তালিকায় নেই। ঠিক সেই সময় আবারও পাখির ঠোঁটে দেখা মিললো প্রেমিক যুগলের নাম লেখা একটি টুকরো চিঠি।

সোমবার (৩১ মে) দুপুরে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামের কৃষক সন্তোষ প্রামাণিকের বাড়িতে হঠাৎ করেই এক অচীন পাখির আগমন ঘটে। ওই পাখির ঠোঁটে পাওয়া যায় হাতে লেখা আরবি ও বাংলা অক্ষরে কাগজের চিরকুট। যেখানে লেখা ছিল প্রেমিক-যুগলের নাম। তবে, সেটি ছিল আরবি আর বাংলায় লেখা। তাতে লেখা ছিল নুশরাত জাহান বুলবুলি, মহব্বত হোসেন এবং মোছা. পারুল আক্তার, রিয়াজুল হোসেন জয়।

এমন খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। অচীন পাখিটি এক নজর দেখতে এলাকার শত শত নারী-পুরুষ ও শিশুরা ভিড় জমাতে থাকে ওই বাড়িটিতে। পাখিটি দেখতে কবুতর বা ঘুঘুর মত মনে হলেও প্রাথমিকভাবে পাখিটির নাম সঠিকভাবে বলতে পারেননি কেউ। অচীন পাখি বলেই ছিল মানুষের যত কৌতূহল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রচার হতে থাকে বিষয়টি নিয়ে।  

ওই বাড়ির মালিক সন্তোষ প্রামাণিক বাংলানিউজকে জানান, দুপুরে হঠাৎ করেই ওই পাখিটি তাদের বাড়ির টিনের চালায় এসে বসে। এসময় তার স্ত্রী মানিকজান প্রথমে দেখতে পান এবং পাখিটিকে খাবার দেওয়ার কথা বললে পাখিটি টিনের চালা থেকে মাটিতে নেমে আসে। এসময় খাবার দিয়ে পাখিটিকে ধরে খাঁচায় বন্দি করেন তারা। পাখিটিকে খাঁচায় বন্দি করার সময় দেখতে পান ঠোঁটে হাতে লেখা আরবি ও বাংলা অক্ষরে লেখা কাগজের একটি চিরকুট। চিরকুটের নিচের অংশে বাংলা অক্ষরে লেখা দুই জন মেয়ে ও দুই জন ছেলের নাম রয়েছে। আর আরবি লেখা কেউ পড়তে পারেননি। খবরটি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে আশ-পাশের গ্রামের নারী-পুরুষ ও শিশুরা এক নজর দেখতে ভিড় করেন। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।  

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ জীববৈচিত্র সংরক্ষণ ফেডারেশন (বিবিসিএফ) কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ও স্থানীয় পরিবেশকর্মী মো. ফজলে রাব্বী বাংলানিউজকে জানান, এটি একটি লাল রাজ ঘুঘু (Red collard dove)। এই এলাকায় চিলা ঘুঘু দেখা গেলেও সচারাচর লাল রাজ ঘুঘুর দেখা মিলে না। বিষয়টি বাংলাদেশ জীববৈচিত্র সংরক্ষণ ফেডারেশনকে অবহিত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সাধারণত উঠতি বয়সের তরুণরা তাদের প্রেমিকাকে পাওয়ার আশায় কবিরাজের শরণাপন্ন হয়। তখন কবিরাজরা বিভিন্ন সময় প্রেমিক যুগলের নাম আরবি বা বাংলায় লিখে পাখির ঠোঁটে দিয়ে উড়িয়ে দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, হয়তো এমনটি হয়েছে। আগে পাখির ঠোঁটে চিঠিপত্র আদান-প্রদান করা হলেও, এখন আর এমনটি চোখে পড়ে না।  

মাধনগর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আমজাদ হোসেন দেওয়ান বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি তিনি লোকমুখে শুনেছেন। বিস্তারিত তিনি কিছুই জানেন না। তবে, বিষয়টি কৌতূহলী।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫২ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২১
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।