ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার তদন্ত প্রভাবিত করেছিলেন বাবর ’

রমেন দাশগুপ্ত, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১০

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে চাঞ্চল্যকর দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার তদন্ত ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ বিগত জোট সরকারের ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা প্রভাব সৃষ্টি করেছিলেন। তাদের কারণে সে সময় সঠিক পথে এ চাঞ্চল্যকর ঘটনার তদন্ত হয়নি।



এ বক্তব্য জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) তৎকালীন পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এনামুর রহমান চৌধুরী’র। বৃহস্পতিবার আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দীতে তিনি এ বক্তব্য দেন।

সাবেক এই সেনা কর্মকর্তার দেওয়া চার পৃষ্ঠার জবানবন্দি রেকর্ড করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওসমান গণি।    

জবানবন্দি গ্রহণের সময় উপস্থিত সূত্রের বরাত দিয়ে মহানগর আদালতের সরকারী কৌশুলি কামালউদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘এনামুর রহমান চৌধুরী দশ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনা তদন্তের ক্ষেত্রে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব ওমর ফারুকসহ বিগত জোট সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের প্রভাব সৃষ্টিসহ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। ’

প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল রাতে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সার কারখানা চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) জেটিঘাটে খালাসের সময় দশ ট্রাক অস্ত্র ধরা পড়ে। ঘটনা তদন্তে সেসময় তৎকালীন স্বরাষ্ট্র সচিব ওমর ফারুকের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে সরকার। ওই কমিটির সদস্য হিসেবে এনামুর রহমান চৌধুরী দশ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনার তদন্ত করেন।

জবানবন্দি গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করে সিএমপির সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) নির্মলেন্দু বিকাশ চক্রবর্ত্তী বাংলানিউজকে বলেন, ‘এনএসআই’র সাবেক পরিচালক এনামুর রহমান দুপুর একটা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত টানা দেড়ঘণ্টা জবানবন্দি দিয়েছেন। তার জবানবন্দি চার পৃষ্ঠায় রেকর্ড করা হয়েছে। ’

এদিকে জবানবন্দিতে সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা কি বলেছেন তা জানেন না বলে বাংলানিউজকে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান।

দশ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় অস্ত্র আটক ও চোরাচালান আইনে দায়ের হওয়া দুটি মামলায় পুলিশ এর আগে অভিযোগপত্র দাখিল করলেও বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের ১২ ফেব্র“য়ারি মহানগর দায়রা জজ মামলা অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন।

অধিকতর তদন্ত শুরুর পর থেকে মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডি এ পর্যন্ত গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের সাবেক দুই মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুর রহিম, সাবেক পরিচালক উইং কমান্ডার শাহাবুদ্দিন, উপ-পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর লিয়াকত হোসেন, ফিল্ড অফিসার আকবর হোসেন, সিইউএফএল’র সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহসিন উদ্দিন চৌধুরী, মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) একেএম এনামুল হককে গ্রেপ্তার করে।

এদের মধ্যে কয়েকজন এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ