ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

মহামারিতে পথেই ঈদ কাটলো তাদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০১ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২১
মহামারিতে পথেই ঈদ কাটলো তাদের

ঢাকা: মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রভাবে সবকিছুই যেন এখন নিষ্প্রাণ। সময়ের নিয়মে ঈদ এলেও ঠিকঠাক বর্ণিল উদযাপন নেই কোথাও।

পাড়ায়-মহল্লায়-গলিতে চিরাচরিত হইহুল্লোড় হয়নি আগের মতো।

ঈদেও যারা ঢাকায় রয়ে গেছেন তাদের কেউ কেউ খানিক সময়ের জন্য বাইরে বেরিয়েছেন ঠিকই। কিন্তু করোনা ভাইরাস আতঙ্কে বেশিরভাগেরই ঈদ আনন্দ কেটেছে চার দেয়ালে বন্দি পরিবারের সান্নিধ্যেই।

পরিস্থিতি যেমনই হোক অন্যতম ধর্মীয় উৎসবেও কিছু মানুষ ছিলেন বাধ্যতামূলক ঘরের বাইরেই। পথে ঘাটে নিজ দায়িত্ব পালন করেই কাটছে তাদের ঈদ। উৎসবেও যাদের দায়িত্ব পালন চলে অবিরাম। এর মধ্যে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা অন্যতম। তাদের মতে, সবকিছু ছুটির আমেজে চলে গেলেও তাদের সেই সুযোগ নেই। অন্যান্য নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা অর্থাৎ স্বাভাবিক দায়িত্ব পালনেই তাদের ঈদ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদের ছুটিতে অফিস-আদালত, মার্কেট-শপিংমল প্রায় সবকিছুই বন্ধ থাকে। অনেকেই রাজধানী ছেড়ে পাড়ি জমান গ্রামে। এর ফলে ফাঁকা নগরীর নিরাপত্তায় অবসর নয় বরং স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি দায়িত্ব পালন করতে হয় পুলিশ সদস্যদের।

শনিবার (১৫ মে) দুপুরে ঈদের দ্বিতীয় দিন রাজধানীর বিজয় স্মরণি মোড়ে স্বাভাবিক সময়ের মতোই দায়িত্ব পালন করছেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। অন্যতম এ ট্রাফিক সিগনালে অবসর নেই, গাড়ির চাপও আছে বেশ।

দায়িত্বরত থাকা এক ট্রাফিক সার্জেন্ট জানান, স্বাভাবিক সময়ের মতো না হলেও এবারের ঈদের ছুটিতে যান চলাচল কিছুটা বেশি বলেই মনে হচ্ছে। সরকারি বিধিনিষেধের কারণে অনেকেই এবার ঢাকা ছাড়েননি।

নিজেদের ঈদ প্রসঙ্গ আসতেই তিনি বলেন, দুই ঈদের মধ্যে এক ঈদে আমাদের ছুটি হতে পারে আবার নাও হতে পারে। এটাই আমাদের চাকরির নিয়ম। যেহেতু পুলিশের চাকরিতে এসেছি, এটা মেনে নিয়েই এসেছি। আর চাকরির বাইরে গিয়ে চিন্তা করলে একটু খারাপ লাগা কাজ করেই। গ্রামে যেতে না পারলেও সবাই অন্তত ঈদের দুই-একটা দিন পরিবারের সঙ্গে কাটাতে চায়। কিন্তু কিছু করার নেই।

মহাখালী এলাকায় দায়িত্বরত এক ট্রাফিক কনস্টেবল বলেন, আমাদের অল্পকিছু সদস্য প্রতি ঈদে ছুটি পান। তবে এবার যারা ছুটি পেয়েছেন তারাও নির্দেশনা অনুযায়ী গ্রামে যেতে পারেননি। আর আমরাতো পথেই পালন করছি ঈদ। যতকিছুই হোক আমাদের সবারতো আর ছুটি সম্ভব না।

স্বাভাবিক দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়েই ঈদ কাটছে। আমাদের ঈদ আর অন্যান্য দিনের মধ্যে তেমন পার্থক্য নেই। তবে ঈদে গাড়ির চাপ কম থাকায় কিছুটা রিলাক্সে দায়িত্ব পালন করা যায়।

শ্যামলী এলাকায় পুলিশের টহলরত গাড়িতে দায়িত্ব পালন করছিলেন পুলিশ সদস্য আশরাফ। তিনি বলেন, ঈদের ছুটিতে আমাদের টহল ডিউটি বাড়ানো হয়। সবকিছু বন্ধ থাকলে আমাদের কাজ বেড়ে যায়, কমে না। সবার নিরাপদে ঈদ পালনই আমাদের ঈদ।

ঈদের দিন থানাতেই কিছু খাবার-দাবারের আয়োজন ছিল। দায়িত্ব পালনের ফাঁকে আমাদের সদস্যরা ভাগ ভাগ হয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেছি। ঈদ বলতে আমাদের এতটুকুই।

পরিবারের সান্নিধ্যে ঈদ কাটাতে না পারায় সামান্য খারাপ লাগা কাজ করলেও এটাই নিয়ম বলে মেনে নেন সবাই। নগরবাসীকে নিরাপদ রাখতে মহামারির ঈদেও ঘরের বাইরে দায়িত্ব পালন করছেন পুলিশ সদস্যরা। তবুও তাদের প্রত্যাশা মহামারি কেটে যাক, মানুষ স্বাভাবিকভাবে উৎসব পালন করুক।  

বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২১
পিএম/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।