ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সবহারা মীম ঈদ উপহার পেয়েছে ২০ পোশাক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২২ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২১
সবহারা মীম ঈদ উপহার পেয়েছে ২০ পোশাক

খুলনা: গত ঈদেও মা-বাবা ও দুই বোনের সঙ্গে আনন্দে ঈদ কাটিয়েছিল মীম। মা-বাবার দেওয়া পোশাক পরে কাটিয়েছে ঈদের দিনটি।

৯ বছরের সেই আদরের দুলালী মীমের আজ পৃথিবীজুড়ে অন্ধকার।

মাদারীপুরের শিবচরে পদ্মা নদীতে স্পিডবোট দুর্ঘটনায় বাবা-মা ও দুই বোন হারানো মীম এবারের ঈদে ২০টি পোশাক উপহার পেয়েছে। খুলনার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসানসহ স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান তাকে এ পোশাকগুলো উপহার দিয়েছে। মীম এখন খুলনার তেরখাদার বারাসাত ইউনিয়নের পানতিতা গ্রামে তার নানা-নানির বাড়িতে থাকে।

মাদারীপুর জেলার শিবচর নামে একটি স্থানে বালুবাহী বাল্কহেডের সঙ্গে স্পিডবোটের সংঘর্ষে খুলনার তেরখাদা উপজেলার পারখালী গ্রামের একই পরিবারের চারজন নিহত হলেও অলৌকিকভাবে বেঁচে যায় শিশু মীম। দুর্ঘটনায় বাবা মনির হোসেন, মা হেনা বেগম ও মীমের ছোট দু’টি বোন সুমি ও রুমি মারা যায়। অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া মীম পদ্মা নদীর তীরে এসে ওঠে। ওই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ২৬ জন। অল্পের জন্যে প্রাণে বেঁচে যান পাঁচজন। তার মধ্যে একজন মীম।

মীমের নানা সবুর মিনা ঈদের দিন শুক্রবার (১৪ মে) সকালে বাংলানিউজকে বলেন, ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন ব্যক্তি ২০টির বেশি পোশাক উপহার দিয়েছে মীমকে। এত জামা দিয়ে কি করবো? এত জামা কি পরতে পারবে?

ঈদ মীম কেমন কাটাচ্ছে জানতে চাইলে সবুর মিনা বলেন, সাংবাদিক এনায়েত ফেরদৌসের বাড়িতে ঈদের দাওয়াত খেতে গেছে মীম। মীমের সঙ্গে ওর নানীসহ দুই খালা গেছে। আমি একা শুধু বাড়িতে আছি। আজ মীম বাবার বাড়ি যাবে না। আগামী শনিবার (১৫ মে) যাবে।

জানা গেছে, এনায়েত ফেরদৌসের বাড়ি খুলনার তেরখাদার ছাগলাদহ ইউনিয়নের ইছামতি গ্রামে। বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টার দায়িত্বে আছেন তিনি। অবুঝ শিশু মীমের অনিশ্চিত জীবনের অন্ধকার ঘোচাতে আর্থিকসহ যাবতীয় সহযোগিতা করছেন তিনি।

ঢাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন মনির শিকদার। তিন মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন মিরপুরে। গত ২ মে দিনগত রাত ৮টায় খুলনার তেরখাদার বাড়িতে মারা যান মনির শিকদারের মা। মায়ের মরদেহ দেখতে পরিবারের সবাইকে নিয়েই খুলনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন তিনি। ৩ মে মাদারীপুরের শিবচরে পুরাতন কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাট এলাকায় পদ্মা নদীতে স্পিডবোটের সঙ্গে বালুভর্তি বাল্কহেডের সংঘর্ষে নিহত হন তেরখাদার পারোখালী এলাকার মনির শিকদার, তার স্ত্রী হেনা বেগম, শিশু কন্যা সুমি ও রুমি খাতুন। পাঁচ সদস্যের পরিবারটির একমাত্র সন্তান হিসেবে জীবিত আছে বড় মেয়ে ৯ বছরের শিশু মীম। দুর্ঘটনার পর নদীতে একটি ব্যাগ ধরে ভাসছিল মীম। এ সময় নৌপুলিশের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে।

বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২১
এমআরএম/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।