ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শেষ রমজানে যানজটে স্থবির রাজশাহী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৩ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২১
শেষ রমজানে যানজটে স্থবির রাজশাহী

রাজশাহী: ঈদুল ফিতর সামনে রেখে শেষ রমজানে রাজশাহী মহানগরীতে অসহনীয় যানজটে চরম জনদুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন ঈদ উদযাপন করতে বাড়ি ফিরেছেন।

এ কারণ হঠাৎই রাজশাহী মহানগরীতে মানুষের আনাগোনা বেড়ে গেছে। এতে শহরের প্রধান সড়কে ক্রমেই তীব্র হচ্ছে যানজট।

শুক্রবার (১৪ মে) পবিত্র ঈদুল ফিতর। তাই বৃহস্পতিবার (১৩ মে) সকাল থেকেই বাজারমুখী হয়েছে মানুষ। সড়কে বেরিয়েই তীব্র যানজটের কবলে পড়েছেন নগরবাসী। বেলা যত বাড়ছে মহানগরীর প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে সংযোগ সড়কগুলোতে যানজট ততই বাড়ছে।

ঈদ সামনে রেখে একসঙ্গে মানুষের মার্কেটমুখী হওয়ায় প্রকট আকার ধারণ করেছে যানজট। ফলে ঈদ উপলক্ষে মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা লোকজন যানজটের দুর্ভোগের মধ্যে পড়ছেন। রিকশা-অটোরিকশা নিয়ে বর্তমানে মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট থেকে রাজশাহী কলেজ পর্যন্ত প্রায় আধাকিলোমিটার পথ পাড়ি দিতেই কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫ মিনিট সময় লাগছে।

আর এ সড়কটির একপাশে রয়েছে জনবহুল আরডিএ মার্কেট। এই মার্কেটের সামনে ফুটপাতে বসেছে টুপি, আতর-সুরমা, কসমেটিকস, ইমিটেশন, ছেলেদের বেল্টসহ অন্য জিনিসপত্রের দোকান। রাস্তার অপর পাশে ফুটপাতেই বসেছে শাড়ি-লুঙ্গিসহ হকারদের অস্থায়ী দোকানপাট। এসবের ভেতর দিয়েই রাস্তার ওপর দিয়ে ব্যাগ হাতে হেঁটে যাচ্ছেন মানুষ।  

রাস্তা পারাপারেও বেশিরভাগ মানুষ ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করছেন না। বাজার করতে আসা বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের রাস্তা দিয়েই চলাচলের কারণে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। মহানগরীর ব্যস্ততম ও গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে দেখা যাচ্ছে যানবাহনের লম্বা সারি। সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট, বড় রাস্তাসহ আশপাশের ব্যস্ততম সড়কেও যানজট বেড়েছে কয়েকগুণ। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অটোরিকশার অবাধ চলাচলও।

মহানগরীর ব্যস্ততম মালোপাড়া-কাদিরগঞ্জ ও গৌরহাঙ্গা রেলগেট থেকে সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত সড়কে যানজট এখন প্রকট আকার ধারণ করেছে। কাদিরগঞ্জের ব্যস্ততম এই রাস্তাটি উপশহর মোড় থেকে মহিলা কলেজ হয়ে সোনাদীঘির মোড়ে গিয়ে ঠেঁকেছে। এ রাস্তাটি দিয়ে প্রতি মূহূর্তে হাজার হাজার চলাচল করছে রিকশা-অটোরিকশা। চলছে প্রাইভেটকারসহ মাঝারি যানবাহনও।  

এছাড়া রেলগেট-সাহেববাজার সড়কটি ফোরলেন হলেও কাজে আসছে না। বিশেষ করে বেলা ১১টা থেকে ইফতারের আগ পর্যন্ত প্রধান ব্যস্ততম এ সড়কটি যানবাহনের চাপে প্রায় অচল হয়ে পড়ছে। রিকশা আর দেড় হাজার হিউম্যান হলারের সঙ্গে যোগ হওয়া দশ সহস্রাধিক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও মৌসুমী রিকশা চালকদের চাপে এখন নাকাল হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবযাত্রা। মহানগরীকে যানজটমুক্ত রাখতে পুলিশের নেওয়া ছোটখাটো উদ্যোগও তাই সফল হচ্ছে না।

অটোরিকশাগুলো বড় সড়ক ছেড়ে প্রবেশ করছে অলিগলিতে। ফলে যানজটের প্রভাব গিয়ে পড়ছে বাসা-বাড়ির সামনেও। সাহেববাজার সোনাদীঘি থেকে জিরোপয়েন্ট ২০০ মিটার রাস্তা অটোরিকশায় যেতে ৩০ মিনিটের বেশি অপেক্ষা করতে হচ্ছে। যানজট ঠেকাতে নাভিশ্বাস উঠছে ট্রাফিক পুলিশের।

এদিকে, ঈদ উপলক্ষে মহানগরীকে যানজট মুক্ত রাখতে সাহেববাজার আরডিএ মার্কেট ও নিউমার্কেটসহ অন্য এলাকায় দিনে ভারী যানবাহন অর্থাৎ বাস ও ট্রাক প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে রাজশাহী মহানগর পুলিশ। এছাড়া যানজট এড়াতে মহানগরীর সাহেব বাজার জিরোপয়েন্ট ও মণিচত্বর মোড়ে ইউটার্ন এবং রাইটটার্ন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।  

জিরোপয়েন্ট থেকে মণিচত্বর পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে সব ধরনের যানবাহন পার্কিং নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু এরপরও তা কেউ মানছে না। রাস্তার পাশের ফুটপাতজুড়েই বসেছে বিভিন্ন দোকান। তার সামনে থাকছে যানবাহেনের অবৈধ পার্কিং। ফলে যানবাহনের গতি থমকে যাচ্ছে ওই সড়কে।

রাজশাহী মহানগর ট্রাফিক পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) অনির্বাণ চাকমা জানান, ঈদুল ফিতর সামনে রেখে বিশেষ ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। মার্কেটগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলেও ট্রাফিকিংয়ের ক্ষেত্রে বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছে। পুলিশের উদ্যোগে সচেতনতামূলক মাইকিং করেও লাভ লাভ হচ্ছে না। নিরবচ্ছিন্ন যান চলাচল নিশ্চিত করার জন্য মহানগরীর ইন্টার সেকশনের রাস্তাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ফুটপাত দখলের কারণে যানজট লেগেই থাকছে।  

এরপরও অবৈধ পার্কিং, ট্রাফিক আইন ভঙ্গ এবং উল্টোপথে গাড়ি চালানোর জন্য যানবাহন চালকদের জরিমানা করা হচ্ছে বলে জানান- ট্রাফিক পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩২ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২১
এসএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।