ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘৫০টি গাছ কাটা হয়েছে, আরো ৫০টি কাটা হতে পারে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১১ ঘণ্টা, মে ১১, ২০২১
‘৫০টি গাছ কাটা হয়েছে, আরো ৫০টি কাটা হতে পারে’ সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণের ৩য় পর্যায়ের কাজ করার জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইতোমধ্যে ৫০টি কাটা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। আরো ৫০টি গাছ কাটা লাগতে পারে বলেও জানান তিনি।

মঙ্গলবার (১১ মে) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গাছ কাটা আপাতত বন্ধ, সরেজমিন পরিদর্শন শেষে পরিবেশবিদদের পরামর্শ নিয়ে, প্রয়োজনে নকশা পরিবর্তিত হবে !  বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খাবারের দোকান বা ভাতের হোটেল বানানোর জন্য গাছ হচ্ছে বলে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে তা সত্যিই দুঃখজনক। প্রকৃতপক্ষে মুক্তিসংগ্রাম এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সম্পর্কিত স্থানসমূহ সংরক্ষণে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার জাতির কাছে অঙ্গীকারাবদ্ধ। সেই আলোকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্থানসমূহ সংরক্ষণ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গৃহীত মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছোট-বড় কিছু সংখ্যক গাছ কাটা হলেও প্রথম পর্যায়ে প্রায় এক হাজার গাছ লাগানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষে দেশের উদ্যানতত্ত্ববিদদের সমন্বয়ে একটি কমিটি করা হচ্ছে।

'বর্তমান সরকার যে কোনো ধরনের গঠনমূলক সমালোচনাকে স্বাগত জানায়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নিয়ে পরিবেশবিদসহ সর্বসাধারণের উদ্বেগকে আমরা শ্রদ্ধা করি। বঙ্গবন্ধুর রক্তের ও আদর্শের উত্তরাধিকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার উন্নয়নের পাশাপাশি পরিবেশকেও সমান গুরুত্ব দেয়। আমরা পরিবেশের বিষয়টি মাথায় রেখেই কাজ করছি। উদ্যানের যে গাছগুলো না কাটলেই নয় কেবল সেগুলোই কাটা হয়েছে এবং এর ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অন্তত ১০ গুণ বেশি গাছ লাগানো হচ্ছে। এরপরও আমরা পরিবেশবিদসহ সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডার ও নগর পরিকল্পনাবিদদের সঙ্গে আলোচনা করবো এবং পরিবেশের ক্ষতি না করে কিভাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কাজ চলমান রাখা যায় তার উপায় বের করার চেষ্টা করবো। তবে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণের স্বার্থে মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তি সংগ্রামের সঙ্গে সম্পর্কিত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সকল ঐতিহাসিক স্থান যথাযোগ্য মর্যাদায় সংরক্ষণ করা হবে। '

প্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা অর্জনে বিভিন্ন সময়ের আন্দোলন ও ঘটনাসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরার উদ্দেশ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইতোমধ্যে শিখা চিরন্তন, স্বাধীনতা স্তম্ভ ও ভূগর্ভস্থ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নির্মাণ করা হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণ, আধুনিক নগর উপযোগী সবুজের দৃষ্টিনন্দন ও আন্তর্জাতিক মানে গড়ে তোলা ও দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করার লক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ (৩য় পর্যায়)' শীর্ষক মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে বর্তমানে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্মাণ কাজ যেমন পাকিস্তানি শাসনবিরোধী ২৩ বছরের মুক্তিসংগ্রাম, নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্বলিত ভাস্কর্য স্থাপন, ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের স্থানে ভাস্কর্য স্থাপন, ইন্দিরা মঞ্চ নির্মাণ, ওয়াটার বড়ি ও ফাউন্টেইন নির্মাণ, ভূগর্ভস্থ ৫০০ গাড়ির কার পার্কিং, ৭টি ফুড কোর্ট (মহিলা, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের পৃথক টলেট ফ্যাসিলিটিসহ) ও শিশুপার্ক নির্মাণসহ বিভিন্ন নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এত বড় এলাকায় এত মানুষের সমাগম হয় তাতে কোনো টয়লেট ফ্যাসিলিটিজ এবং রিফ্রেশমেন্টের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। পরিবারসহ দর্শনার্থীরা উদ্যানে যাতে ভ্রমণ করতে পারে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার পাশাপাশি নিরাপদ ও মানসম্পন্ন পরিবেশে কয়েক ঘণ্টা সময় কাটাতে পারে তার সকল ব্যবস্থা এখানে করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১১ ঘণ্টা, মে ১১, ২০২১
ডিএন/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।