ফেনী: ফেনীতে পুলিশ-যুবক হাতাহাতির ঘটনায় পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) যশমন্ত মজুমদারকে ক্লোজড করা হয়েছে।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাইনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ওই যুবক মানসিকভাবে অসুস্থ।
সোমবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে ফেনী শহরের মডেল স্কুলের সামনে পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে এক রিকশা আরোহী যুবকের। পুলিশ তখন যুবকটির কলার ধরে পাঁকড়াও করে, যুবকটিও পুলিশকে আঘাত করে।
লকডাউন ভেঙে বের হওয়া এক রিকশাযাত্রীর সঙ্গে পুলিশ সদস্যদের হাতাহাতির এ ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। তিন মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একজন রিকশাযাত্রী হঠাৎ করেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন লকডাউনে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে।
রিকশায় বসে থাকা এক যাত্রীর সঙ্গে কথা বলছেন একাধিক পুলিশ সদস্য। চলমান লকডাউনে মাস্ক পরা ও বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে চলাচল করতে বাধা দিচ্ছিলেন তারা। এ সময় ওই যাত্রীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় এবং তাকে রিকশা থেকে নামতে বলেন পুলিশ সদস্যরা। একপর্যায়ে রিকশায় থাকা ওই ব্যক্তি উচ্চস্বরে দায়িত্বরত পুলিশদের উদ্দেশে বলে ওঠেন, ‘এই দেশে পুলিশের অনেক ক্ষমতা, না!’
এ সময় এক পুলিশ সদস্য তাকে জোর করে রিকশা থেকে নামাতে চাইলে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। রিকশা থেকে নামিয়ে ফেলা ওই ব্যক্তি বলতে থাকেন, তুই অন্য রিকশা ছাড়ছিস, আমারটা ধরলি ক্যান? একাধারে তিনি পুলিশদের গালাগালি করতে থাকেন।
>>>লকডাউনে পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি, মুচলেকা দিয়ে রেহাই
ওই ব্যক্তি আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠলে পুলিশ সদস্যরা তাকে আঘাত করেন। এ সময় ওই ব্যক্তিও পুলিশদের পাল্টা আঘাত করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় একপর্যায়ে একাধিক পুলিশ সদস্য তাকে জাপটে ধরে এবং হ্যান্ডকাফ পরানোর চেষ্টা করেন।
ঘটনাস্থলে উচ্ছুক জনতার ভিড় জমতে শুরু করলে ওই ব্যক্তি সবার উদ্দেশে বলেন, মসজিদে কোরআন পড়তে যাচ্ছিলাম, বলছি আমাকে ছেড়ে দেন। এ সময় ওই হ্যান্ডকাফ পরতে অস্বীকৃতি জানান এবং গালাগালিসহ এলোপাথাড়ি হাত-পা ছুড়তে থাকেন। একই সময় তিনি উপস্থিত জনতার উদ্দেশে চিৎকার করে ভিডিও করতে বলেন।
পরে একপর্যায়ে ৪-৫ জন পুলিশ সদস্য তাকে হ্যান্ডকাফ পরানোর জন্য জোরপূর্বক মাটিতে ফেলে চাপ প্রয়োগ করেন। তারা চিৎকার করে বলতে থাকেন, হ্যান্ডকাফ লাগা, ধর। এ সময় উপস্থিত জনতার তোপের মুখে তারা আবার ওই ব্যক্তিকে ধরে উঠান এবং হ্যান্ডকাফ পরান। এ সময় ওই ব্যক্তি এটা আওয়ামী লীগের দেশ বলে চিৎকার করতে থাকেন। পরে তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
পুলিশের সঙ্গে মারামারিতে লিপ্ত হওয়া ওই যুবকের নাম শহিদ। তিনি ফেনী সদর উপজেলার মোটবী ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং যুবলীগের সক্রিয় কর্মী। এ ঘটনায় আটক করে তাকে হাজতে রাখা হয়। পরে তার স্বজনদের ডেকে আনলে তারা তার মানসিক সমস্যার কথা জানান। পরে মুচলেকা নিয়ে তাকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০০৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২১
এসএইচডি/এনটি