ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ক্ষুধার জ্বালা বড় জ্বালা, সে জ্বালা ঘরে থাকতে দেয় না

সোলায়মান ডালিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২১
ক্ষুধার জ্বালা বড় জ্বালা, সে জ্বালা ঘরে থাকতে দেয় না

ফেনী: সারা দেশব্যাপী চলমান লকডাউনের ষষ্ঠতম দিন সোমবার (১৯ এপ্রিল)। এদিন দুপুর ১টার দিকে শহরের ট্রাংক রোড় শহীদ মিনারের সামনে রাখা হয়েছে আর্মাড পার্সোনাল ক্যারিয়ার (এপিসি)।

কিছুদূরে শহরের দোয়েল চত্বর ও খেজুর চত্বরে মানুষের আনাগোনা। চলছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মাইক্রোবাস ও রিকশা। ভ্যানে চলছে সবজি ও বিভিন্ন ধরনের ফলমূলের বিকিকিনি। চারদিকে চিত্র দেখে কোনোভাবেই মনে হবে না লকডাউন চলছে।  প্রথম দিকে জেলায় কঠোর লকডাউন পালিত হলেও শেষ দিকে এসে মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছে চরম অনীহা।  

পুলিশ বাধা দিচ্ছে, মাঝেমধ্যে মানুষের সঙ্গে বাকবিতণ্ডাও হচ্ছে, বাধা উপেক্ষা করে তবুও মানুষ রাস্তায় বের হচ্ছে। কবির আহম্মদ নামের মাঝ বয়সী এক শ্রমজীবী বলছেন আর ঘরে বসে থাকতে পারছি না, ক্ষুধার জ্বালা বড় জ্বালা, সে জ্বালা ঘর থেকে বাইরে টেনে এনছে। বাইরে বের না হলে ঘরে চুলা জ্বলবে না সবাই উপোস মরবে।  শহরের কলেজ রোড়, মডেল স্কুলের সামনে, এসএসকে সড়ক ও মহিপালসহ বিভিন্ন পয়েন্টে অটোরিকশা চলতে দেখা গেছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নজরদারি থাকলেও দুপুরের পর আনাগোনা বাড়তে থাকে মানুষের। শহরের বড় বাজার, হকার্স মার্কেট ও বিভিন্ন এলকায় নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়াও বিভিন্ন দোকান পাট খুলতে দেখা গেছে।

এদিকে কাচাবাজরগুলো ক্রেতা কম দেখা গেলেও সবজির দাম বাড়তি রয়েছে। শহরের ব্যবসায়ীরা বলছেন তাদের পিট দেওয়ালে ঠেকে গেছে, গত একটি বছর তারা ব্যবসা করতে পারেননি। এবার রমজান ও ঈদকে ঘিরে ব্যবসা করার স্বপ্ন থাকলেও সে স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ হতে চলেছে। ছেলে সন্তান নিয়ে না খেয়ে মরার অবস্থা ব্যবসায়ীদের।

তবে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া অপ্রয়োজনে বের হওয়া মানুষ পুলিশের চেকপোস্টের মুখোমুখি হচ্ছেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে পড়ে জরিমানাও গুনছেন কেউ কেউ। শহর ঘুরে দেখা গেছে, সকালে শহরের বড় বাজার, সুলতান মাহমুদ পৌর হকার্স মার্কেট, মুক্ত বাজারে সবজি কেনাবেচা চললেও ক্রেতার সংখ্যা কমে গেছে। শহরের গ্রিন টাওয়ার, শহীদ হোসেন উদ্দিন বিপণিবিতান ও গ্র্যান্ড হক টাওয়ারসহ বিভিন্ন মার্কেট বন্ধ থাকলেও রাস্তায় ভ্যানে করে বিক্রি হচ্ছে সবজি। জীবিকার তাগিদে দিনমজুররা বের হলেও কাজ না পেয়ে বাসায় ফিরে যান। জরুরি কাজে বের হওয়া মানুষ রিকশা কিংবা মোটরসাইকেলে করে গন্তব্যে যাচ্ছেন। তবে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যান ও লরি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। মাইক্রোবাসে করে বিদেশ যাত্রীসহ অনেককে ঢাকা-চট্টগ্রামের যেতেও দেখা গেছে। বিনা প্রয়োজনে মানুষের চলাচল কমাতে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করছে।

ফেনী জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজ্জামান জানান, লকডাউন মানতে মানুষ সচেতন করা হচ্ছে। যারা নিয়ম লঙ্ঘন করে বিনা প্রয়োজনে বের হচ্ছেন এমন লোকজন ও প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হচ্ছে। গত ছয় দিনে পুরো জেলায় প্রায় দেড় শতাধিক ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। লকডাউনে পুলিশ সার্বক্ষণিক নজরদারি করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২১
এসএইচডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।