ঢাকা: খাদ্য রসিক হিসেবে পুরান ঢাকার মানুষের সব সময়ই আলাদা একটা সুনাম রয়েছে। সেই ধারাবাহিকতাতেই পুরান ঢাকার ইফতার বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম।
বুধবার (১৪ এপ্রিল) পুরান ঢাকার চকবাজার এবং বিভিন্ন অলিগলি ঘুরে দেখা যায়, অন্যান্যবার যেখানে সকাল থেকেই ইফতারের প্রস্তুতি চলে, দুপুর গড়ালেই যেখানে ইফতারের বাজার বসতে শুরু হতো, এবার সেখানে একদম নেই জনসমাগম। জনশূন্য হয়ে পড়ে আছে সব মার্কেট, রাস্তাঘাট। বন্ধ রয়েছে দোকান।
হাতেগোনা কয়েকটি খাবারের দোকান ছাড়া এলাকার সব দোকান বন্ধ। ফলে একদিকে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা, তেমনি ঐতিহ্যবাহী বিখ্যাত ইফতারের স্বাদ না পাওয়ায় ক্ষোভ রয়েছে পুরান ঢাকাবাসীদের মধ্যেও।
এ বিষয়ে পুরান ঢাকার একাধিক বাসিন্দারা বাংলানিউজকে জানান, পুরান ঢাকার ইফতার শুধু এই এলাকার নয় বরং সমগ্র ঢাকার একটি অন্যতম আগ্রহের জায়গা। এটি একটি ঐতিহ্যও বটে। তবে এবার রমজানে সেই ঐতিহ্য আর স্বাদ থেকে বঞ্চিত হতে হবে তাদের। সামান্য পরিসরে সারতে হবে ইফতার।
আল-আমিন নামে এক বাসিন্দা বলেন, প্রত্যেকবার পুরান ঢাকার ইফতারের আলাদা একটা জায়গা থাকে ইফতারের সময়। কাজের সূত্রে সহকর্মীদের নিয়ে বসা হয় ইফতারে। সেখানে অন্যতম আয়োজন থাকে পুরান ঢাকার ইফতারের। তবে এবার তা হচ্ছে না। তাই সামান্য ফল দিয়েই ইফতারের প্রস্তুতি সারতে হবে।
ফল বব্যবসায়ী আব্দুর রহিম বলেন, লকডাউনের ফলে এলাকার প্রায় সব দোকানপাট বন্ধ। সামান্য কয়েকটি ফলের দোকান আর খাবারের দোকান ছাড়া কোনো কিছুই খোলা নেই। ফলে এই ফলের দোকানগুলোই এখন এই এলাকার বাসিন্দাদের ইফতার সংগ্রহের মূল জায়গা হিসেবে সামনে এসেছে। এছাড়া অন্যান্য বারের তুলনায় লকডাউনের ফলে লোকজন বাইরে না আসায় ব্যবসাতেও রয়েছে মন্দা।
চকবাজারের আলাউদ্দিন সুইটস এর সাব্বির আহমেদ বলেন, অন্যান্যবার সকাল হতেই পুরান ঢাকার চকবাজারের অলিগলি ইফতারের সমারোহে ভরে ওঠে। কিন্তু এবার তা নেই। তাই সামান্য পরিসরে অল্প কিছু ইফতার আনা হয়েছে। খুব জমজমাট হবে তা বলা যাচ্ছে না, সন্ধ্যায় যদি কিছু লোকজন বাইরে আসে, তবেই হালকা-পাতলা বিক্রি হতে পারে।
এদিকে পুরান ঢাকায় চকবাজার এলাকায় লকডাউনে টহলরত বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জনসমাগম এড়াতে এবার ইফতারের বাজার বসতে দেওয়া হয়নি। বরং সবাইকে সচেতন করতেই তারা এখন বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২১
এইচএমএস/এমআরএ