ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

জমি লিখে না দেওয়ায় বাবাকে পিটিয়ে হাত ভেঙে দিলেন দুই ছেলে!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২১
জমি লিখে না দেওয়ায় বাবাকে পিটিয়ে হাত ভেঙে দিলেন দুই ছেলে! আহত বাবা ইয়াকুব মালিথা। ছবি: বাংলানিউজ

চুয়াডাঙ্গা: জমি লিখে না দেওয়ার জন্মদাতা বাবা ইয়াকুব মালিথাকে (৬০) ঘরে আটকে রেখে ঘণ্টাব্যাপী পিটিয়ে হাত ভেঙে দিয়েছেন দুই ছেলে।  

রোববার (১১ এপ্রিল) রাতে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নবীননগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

গুরুতর আহত ইয়াকুব মালিথাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।  

পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, সড়ক দুর্ঘটনায় ইয়াকুব মালিথার পা ভেঙে যায়। টানা দুই মাস তিনি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল রোববার হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়ে বিকেলে নিজ বাড়িতে ফেরেন।  

স্থানীয় ইউপি সদস্য ওহিদুল ইসলাম জানান, বাড়ি ফেরার কিছুক্ষণ পরই দুই ছেলে জাহিরুল ও সাদিমান জমি-জমা নিজেদের নামে লিখে দিতে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দেওয়ার জন্য বাবাকে চাপ দেন। এতে অস্বীকৃতি জানালে ঘরের মধ্যে বাবাকে আটকে রেখে ঘণ্টাব্যাপী কাঠ দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করেন দুই ছেলে। এতে একটি হাত ভেঙে যায় ইয়াকুব মালিতার।

এদিকে জমি নিয়ে বাবাকে নির্মম পিটুনির খবরে গোটা এলাকায় নিন্দার ঝড় উঠেছে।  

স্থানীয়রা জানান, ইয়াকুব মালিতার চার স্ত্রী। চতুর্থ স্ত্রী ও তার ছেলেকে নিয়ে বসবাস করে আসছেন ইয়াকুব মালিথা। দুই মাস আগে সড়ক দুর্ঘটনায় তার ডান পা ভেঙে যায়। এতে দুই মাস চিকিৎসা শেষে রোববার বিকেলে বাড়ি আসার পর প্রথম পক্ষের স্ত্রীর দুই ছেলে স্ট্যাম্প নিয়ে জমি-জমা ও বসতবাড়ি লিখে দিতে বলেন বাবাকে। ইয়াকুব জমি লিখে দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে দুই ছেলে জাহিরুল ও সাদিমান একটি ঘরে বাবাকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করে। কাঠ ও ধারালো অস্ত্রের উলটো পিঠ দিয়ে বাবাকে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করেন তারা। পরে চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইয়াকুব মালিথা বলেন, নিজেকে ওই দুই ছেলের বাবা বলে পরিচয় দিতেও ঘৃণা করছে আমার। যাদের কষ্ট করে মানুষ করেছি তারাই আজ সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় নির্মম নির্যাতন করেছে আমাকে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সোহানা আহমেদ বলেন, ইয়াকুব মালিতার অবস্থা শঙ্কামুক্ত। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়াও ডান হাত ভেঙে গেছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২১

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।