ঢাকা: কঠোর লকডাউনে শিল্প-কারখানা খোলা রাখাকে এক দেশে দুই নীতির বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার এবং সাধারণ সম্পাদক জুলহাস নাইন বাবু।
রোববার (১১ এপ্রিল) এক যৌথ বিবৃতিতে পোশাক কারখানার মালিকদের আসন্ন কঠোর লকডাউনে কারখানা খোলার প্রস্তাবনায় উদ্বেগ ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা।
শ্রমিক নেতারা বলেন, মালিকপক্ষের এই প্রস্তাব এক দেশে দুই নীতির বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। একইসাথে সমাজে নিষ্ঠুরতম বৈষম্যকে সামনে এনছে। সমাজে মধ্যবিত্ত উচ্চবিত্ত লকডাউনের আওতায় ঘরে থেকে কাজ করবে আর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কারখানায় যাবে শ্রমিকরা— এটা মেনে নেওয়া যায় না। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের এই বিপদকালে শ্রমিকদের সবেতনে লকডাউনের আওতায় রাখলেই সংক্রমণ বৃদ্ধি কম হবে, এটাই বিজ্ঞানসম্মত।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সমাজের বাদবাকিরা ঘরে থাকবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে আর শ্রমিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করবে—এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য প্রস্তাব নয়।
তারা বলেন, শ্রমিকের জীবন ও জীবিকার নিশ্চয়তা না দিলে কোনোভাবেই করোনা মোকাবিলা করা যাবে না। লকডাউনও কার্যকর হবে না।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, করোনা লকডাউনে সকল নাগরিকের জন্য সরকার এক নিয়ম করবে, এটাই কাম্য। সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা কাজে যাবে না, বেতন পাবে কিন্তু শ্রমিকদের বেলায় পাল্টা নীতি বিপদকে ঘনীভূত করবে, যার পরিণতিও হবে ভয়াবহ।
গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির নেতারা বলেন, সাউথ আফ্রিকান ভেরিয়েন্ট এখন পোশাক শ্রমিকদের মধ্যে সংক্রমণ বাড়ার সুযোগ তৈরি করছে। ৪০ লাখ শ্রমিকদের টেস্টিং এর কোনো ব্যবস্থা না রেখে, ভ্যাকসিন দেওয়ার উদ্যোগ না নিয়ে উল্টো গরিবের করোনা হয় না বলে মালিকপক্ষ গত বছর থেকে শ্রমিকের দারিদ্র্য নিয়ে নিষ্ঠুর পরিহাস করে আসছে।
নেতুবৃন্দ বলেন, শ্রমিকরা শিল্পের প্রাণ। তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে ফেললে আসন্ন বিপর্যয়ের দায় মালিক এবং সরকারকেই নিতে হবে। এই বিপদের রেশ সারা দেশের জনগণের টানতে হবে। তাই এখনই সময় শিল্প বাঁচাতে শ্রমিকের জীবন-জীবিকার দায়িত্ব নেওয়া।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২১
এমজেএফ