ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বাইক চালু রেখেই মন্ত্রিপরিষদে পাঠাওয়ের আবেদন

শাওন সোলায়মান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২১
বাইক চালু রেখেই মন্ত্রিপরিষদে পাঠাওয়ের আবেদন

ঢাকা: মোটরবাইকে রাইড শেয়ারিং সেবা চালু রেখেই মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে এ সেবা চালু রাখার আবেদন করেছে দেশীয় রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ‘পাঠাও’। শুধু পাঠাও’ই নয় বরং সরকারি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করেই টু-হুইলার তথা মোটরবাইকে রাইড শেয়ারিং সেবা চালু রেখেছে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ‘উবার’।

উবার এবং পাঠাও উভয়েই মোটরসাইকেলে রাইড শেয়ারিং অব্যাহত রেখেছে।

গেল ৪ এপ্রিল বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) রাইড শেয়ারিং বন্ধ রেখে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে। বিআরটিএর তৎকালীন উপপরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) বিমলেন্দু চাকমা স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে ৫ এপ্রিল সকাল ৬টা থেকে ১১ এপ্রিল দিনগত রাত ১২টা পর্যন্ত রাইড শেয়ারিং সার্ভিসে অ্যাপসের মাধ্যমে মোটরযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রজ্ঞাপন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পত্র এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের পত্রের আলোকে ওই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

গণপরিবহনের জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলেও সেসময় বিআরটিএ জানায়, দ্বিচক্র যান (টু হুইলার) তথা মোটরবাইকের ক্ষেত্রেও এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। তবে এতসব কর্তৃপক্ষের প্রজ্ঞাপন ও বিধিনিষেধকে একরকম বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সেবা অব্যাহত রেখেছে উবার ও পাঠাও। অবশ্য দেশীয় আরেক রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ‘সহজ’ মোটরবাইকে তাদের সেবা বন্ধ রেখেছে।

উবার বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) দুপুর ১২টা ১৬ মিনিটে ‘উবার মটো’ সেবা তথা মোটরসাইকেলে রাজধানীর বনশ্রী এলাকা থেকে একটি আবাসিক এলাকায় আসেন এক নারী যাত্রী। এর জন্য উবার মটো’তে ভাড়া আসে ১৮৫ টাকা ৯৩ পয়সা।

এ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই নারী যাত্রী বলেন, রাইড শেয়ারিং যে বন্ধ তাই জানি না। আমি এমনিতে অ্যাপে বাইকের জন্য রিকোয়েস্ট দেই। বাইক পাই এবং বাইকে চড়ে চলে আসি। আপনার (প্রতিবেদক) কাছে এ জানলাম যে রাইড শেয়ারিং সেবা বন্ধ আছে। আমি তো দু’দিন আগেও উবার মটো ব্যবহার করেছি।

রাইড শেয়ারিং সেবা কীভাবে চালু আছে এবং এ বিষয়ে উবার কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানার চেষ্টা করে বাংলানিউজ। বাংলাদেশে উবারের জনসংযোগ প্রতিষ্ঠান ‘বেঞ্চমার্ক পি আর’ এর কাছে ই-মেইলে এবিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। ই-মেইলের একটি কপি দেওয়া হয় জনসংযোগ বিষয়ক উবারের কেন্দ্রীয় ইমেইলেও ([email protected])।

পরবর্তীতে বেঞ্চমার্ক পিআরের একজন প্রতিনিধি এ প্রতিবেদকের সঙ্গে যোগাযোগ করে রাইড শেয়ারিং চালু থাকার পক্ষে প্রমাণ চাইলে ওই নারী যাত্রীর ‘রাইড হিস্টোরি’ এর স্ক্রিনশটও দেওয়া হয়। তবে এতকিছু করেও এ প্রতিবেদন লেখার সময় শুক্রবার (৯ এপ্রিল) স্থানীয় সময় রাত ১০টা ৪০ পর্যন্ত বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান উবারের পক্ষ থেকে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।

পাঠাও উবারে মোটরবাইকে রাইড শেয়ারিং চালুর বিষয়টি নজরে আসার পর পাঠাও ও সেবাটি চালু রেখেছে কী না সে বিষয়ে অনুসন্ধান করা হয়। এতেও দেখা যায় পাঠাও তাদের মোটরবাইকে রাইড শেয়ার সেবা চালু রেখেছে।

শুক্রবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে এ প্রতিবেদক পাঠাও’তে রাইড নিয়ে রাজধানীর মিরপুর ১২ নম্বর থেকে ১০ নম্বর যান। এতে পাঠাও অ্যাপে ভাড়া আসে ৫২টাকা। এবিষয়ে বাইকের চালকের মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি (পরিচয় গোপন রাখা হলো) বলেন, আমিও জানতাম যে অ্যাপে রাইড শেয়ার বন্ধ। কিন্তু বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) থেকে দেখছি যে অ্যাপ চালু আছে এবং রাইড পাচ্ছি। তাই রাইড দিতে বের হয়েছি। শনিবারের (১০ এপ্রিল) মধ্যে বাসায় ভাড়া দিতে হবে।

সেবা চালু রেখে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে পাঠাও এর চিঠি মোটরবাইকে রাইড শেয়ারিং সেবা চালু রেখেই উল্টো মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বরাবর একই সেবা চালুর বিষয়ে আবেদন করে পাঠাও। ৮ এপ্রিলের পাঠাওয়ের পাঠানো ওই চিঠির ‘বিষয়’ এ লেখা ছিল– “রাইড শেয়ারিংভিত্তিক মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহনে বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে প্রত্যাহারের আবেদন প্রসঙ্গে”।

এসব বিষয়ে পাঠাওয়ের বক্তব্য জানতে চেয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট ফাহিম আহমেদের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে মোবাইল নম্বরে ক্ষুদেবার্তা এবং হোয়াটস অ্যাপে বার্তা দিয়েও এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৯
এসএইচএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।