ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কাটাখালিতে ১৭ জনের মৃত্যু: হানিফ বাসের চালক আটক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২১
কাটাখালিতে ১৭ জনের মৃত্যু: হানিফ বাসের চালক আটক

রাজশাহী: রাজশাহীর কাটাখালিতে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ১৭ জনের প্রাণহানির ঘটনায় হানিফ পরিবহনের বাস চালক আব্দুর রহিমকে (৩৫) আটক করেছে পুলিশ।  

শনিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে পুলিশ বেলপুকুর থানার মাহিন্দ্র বাইপাস এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (সদর) গোলাম রুহুল কুদ্দুস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বাস চালক আব্দুর রহিম পুঠিয়া উপজেলার বাড়ইপাড়া এলাকার ফজলুল হকের ছেলে।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (সদর) গোলাম রুহুল কুদ্দুস বাংলানিউজকে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় পর শুক্রবার (২৬ মার্চ) বাসচালক আব্দুর রহিমকে একমাত্র আসামি করে কাটাখালি থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ঘটনার পর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। শনিবার দুপুরে বেলপুকুর থানার মাহিন্দ্র বাইপাস এলাকায় লুকিয়ে আছেন সংবাদ পেয়ে কাটাখালি থানা পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। দুর্ঘটনার পর হানিফ পরিবহনের বাসটি জব্দ করা হয়েছে।

জানা যায়, শুক্রবার (২৭ মার্চ) দুপুরে রাজশাহী কাটাখালির কাপাশিয়া এলাকায় বাস-মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে অগ্নিকাণ্ডে ১৭ জন নিহত হন। দুর্ঘটনায় নিহতরা সবাই রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। তারা রাজশাহীতে শহীদ জিয়া শিশু পার্কে পিকনিক করতে আসছিলেন। তাদের বহনকারী মাইক্রোবাস মহানগরীর কাপাশিয়া এলাকায় পৌঁছালে ঢাকাগামী হানিফ পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে মাইক্রোবাসে গ্যাস সিলিন্ডার লিক হয়ে আগুন ধরে যায়।  

মাইক্রোবাসে চালকসহ মোট ১৮ জন ছিলেন। দুর্ঘটনার পর ৭ জনকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে নিয়ে যান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা। এদের মধ্যে ৬ জনকেই মৃত ঘোষণা করা হয়। পরে মাইক্রোবাসের ভেতর থেকে পুড়ে যাওয়া আরও ১১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।  

নিহতরা হলেন- পীরগঞ্জের রাঙ্গামাটি গ্রামের মো. সালাহউদ্দিন (৩৬), তার স্ত্রী শামসুন্নাহার (২৫), তাদের ছেলে সাজিদ (৮), মেয়ে সাফা (২), শামসুন্নাহারের বড় বোন কামরুন্নাহার (৩৭), উপজেলা সদরের মো. ভুট্টু (৪০), তার স্ত্রী মুক্তা বেগম (৪০), ছেলে ইয়ামিন (১৫), বড় মজিদপুরের ফুলমিয়া (৪০), তার স্ত্রী নাজমা বেগম (৩৫), ছেলে ফয়সাল (১৫) এবং মেয়ে সুমাইয়া (৮), সাবিহা (৩), দুরামিঠিপুরের ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলাম (৪৬) এবং মাইক্রোবাসের চালক মো. হানিফ (৩০)। হানিফের বাড়ি পীরগঞ্জ উপজেলার পঁচাকান্দ গ্রামে।

মাইক্রোবাসে যাত্রীদের মধ্যে বেঁচে আছেন শুধু পাভেল (২৭) নামে একজন। তিনি এখন রামেক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)। দুর্ঘটনায় তার বাবা মোখলেসুর রহমান (৪৫) ও মা পারভীন বেগম (৪০) নিহত হয়েছেন। তাদের বাড়ি পীরগঞ্জের ডারিকাপাড়া গ্রামে।

এদিকে, শনিবার দুপুরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আরএমপির মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) গোলাম রুহুল কুদ্দুস। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মরদেহের ডিএনএর সঙ্গে স্বজনদের ডিএনএ মিলিয়ে পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। সরকারি খরচে মরদেহগুলো বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২২ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২১
এসএস/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।