ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

৪ জন নারী পেলেন রাঁধুনী কীর্তিমতী সম্মাননা-২০২০

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৬ ঘণ্টা, মার্চ ৭, ২০২১
৪ জন নারী পেলেন রাঁধুনী কীর্তিমতী সম্মাননা-২০২০ চার কৃতি নারী পেলেন 'রাঁধুনী কীর্তিমতী সম্মাননা-২০২০'। ছবি: রাজীন চৌধুরী

ঢাকা: চার কৃতি নারী পেলেন 'রাঁধুনী কীর্তিমতী সম্মাননা-২০২০'। সাংবাদিকতা, সমাজকল্যাণ, ব্যবসায় উদ্যোগ এবং ক্রীড়াক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্যের কারণেই তাদের এই সম্মাননা দিয়েছে স্কয়ার গ্রুপ।

কীর্তিমতি সাংবাদিক সম্মাননা পেয়েছেন ঢাকার সাংবাদিক (দৈনিক প্রথম আলো) শেখ সাবিহা আলম, কীর্তিমতি হিতৈষি সম্মাননা পেয়েছেন চট্টগ্রামের জেসমিন সুলতানা পারু, কীর্তিমতি উদ্যোক্তা সম্মাননা পেয়েছেন খুলনার শামীমা সুলতানা শীলু এবং কীর্তিমতি ক্রীড়াবিদ সম্মাননা পেয়েছেন ময়মনসিংহের ফিরোজা খাতুন।

শনিবার (০৬ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর গুলশান-২ এর লেকশোর হোটেলে এব অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চার ক্যাটাগরিতে কীর্তি নারীদের দেওয়া হয় ‘রাঁধুনী কীর্তিমতি সম্মাননা-২০২০। স্কয়ার গ্রুপের উদ্যোগে রাঁধুনী কীর্তিমতি সম্মাননা-২০২০ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়।

রাঁধুনী কীর্তিমতি সম্মাননা-২০২০ এর ক্রেস ও চেক তুলে দেন দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক গাজী আশরাফ হোসেন লীপু, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান কিশোর কুমার দাস, রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সহযোগী অধ্যাপক ডা. এন কে নাতাশা এবং স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের বিজনেস ডেভলপমেন্ট বিভাগের ডিরেক্টর আনিকা চৌধুরী।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের বিজনেস ডেভলপমেন্ট বিভাগের ডিরেক্টর আনিকা চৌধুরী। তিনি সমাজের নানা অসংগতির ভিড়ে অকুতোভয় কণ্ঠস্বরের প্রতীক সম্মাননা পাওয়া চার কীর্তিমতি নারী ভূমিকার প্রশংসা করে তাদের এই সাফল্য ভবিষ্যতে আরো কীর্তিমতী তৈরিতে প্রেরণা যোগাবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন এর সম্পাদক নঈম নিজাম বলেন, একটি দিবস কেন নারীর জন্য হবে। প্রতিদিনই নারীদের দিবস। আমি ছোট বেলা থেকে ভিন্ন পরিবেশে বড় হয়েছিলাম। আমার মা, তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধার মা। আমার ভাই মুক্তিযোদ্ধা। আমার মা নিজে তার ছেলেকে মুক্তিযুদ্ধে পাঠিয়েছিল, তার ভাইকে পাঠিয়েছিল। সবসময় মারের একটা কমান্ডিং ভয়েস আমাদের প্রতি থাকে। আমি যার সঙ্গে সংসার জীবন পার করছি, তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবের প্রথম সাধারণ সম্পাদক ও পরে নির্বাচিত সভাপতি। দক্ষিণ এশিয়াতে প্রথম কোনো নারী সভাপতি হয়েছেন। আমার সন্তান (মেয়ে) বোস্টনে একটি বিশ্ববিদ্যালযে পড়ে। সেও আমার প্রতি আরও বেশি কমান্ডিং ভয়েজ। সে বলে রাত ৯টা বাজে তুমি অফিসে কি করো? বাসায় যাও। আমি একটি কমান্ডিং ভয়েজের মধ্যেই আছি। তাই প্রতিদিনই আমি নারী দিবস বলে মনে করি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অনেকগুলো প্রেক্ষাপট। হিসেব করে দেখা যাবে সর্বস্তরেই নারীর একটা অবদান রয়েছে। নারীকেই তার জায়গা তৈরি করে নিতে হবে। নারীকে তার জায়গা প্রসারিত করতে হবে।

বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক গাজী আশরাফ হোসেন লীপু বলেন, ২০২০ সালে করোনাকালে আমি আমার মাকে হারিয়েছি। জীবনের এক-দুই বছর খেলার জন্য আমি দেশের বাইরে ছিলাম। আর জীবনের পুরো সময়টি আমি আমার মায়ের সঙ্গেই ছিলাম।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সহযোগী অধ্যাপক ডা. এন কে নাতাশা বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি নারী-পুরুষ সমান নয়। নারী, আরও বড়। প্রকৃতি মা, বসুন্ধরা মা, বিশ্বভ্রমন্ডলি মা। যেখান থেকেই শক্তির উংস সেখানেই মা। সুতরাং মা যখন নারী সে কেন দুর্বল হবে। মাঝে মাঝে মনে হয়, আমরা নারীরা নিজেদের দুর্বলতা প্রকাশ করি বলেই আমাদের চোখে জল আসে। আমাদের বুকের ভেতরে অসীম ভালোবাসা। আমাদের এই ভালোবাসা একটা শক্তি। আগুনে মত। কিন্তু এই বুক ভরা ভালোবাসার আগুনকে চোখের জলে নিভিয়ে দিচ্ছি। এই আগুনটাকে কখনই নিভতে দেওয়া যাবে না। আজকাল মেয়েরা খুব চ্যালেঞ্জিং পেশায় যাচ্ছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে। কখনই নারী নিজেকে দুর্বল ভাবা যাবে না। চোখের জ্বলে ভেতরের আগুন নিভতে দেওয়া যাবে না। চোখে জ্বল আসবে, কিন্তু সেটা আনন্দে। নারীর জয় হোক।

সারাদেশের সাংবাদকর্মীদের মনোনয়নের ভিত্তিতে একটি নির্বাচক প্যানেল রাঁধুনী কীর্তিমতী সম্মাননা প্রাপ্তদের নির্বাচন করেন। এই নির্বাচন প্যানেলের সদস্য ছিলেন- একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা  অজয় দাশ গুপ্ত, ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান লেদারিনা লিমিটেডের ব্যবস্থাপান পরিচালক তাসলিমা মিজি, ইনোভেশন ফর ওয়েলবিয়িং ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক মনিরা রহমান, দৈনিক কালের কণ্ঠের উপ-সম্পাদক মোস্তফা মামুন, এবং প্রযুক্তি সেবা প্রতিষ্ঠান ডিক্যাস্টালিয়ার পরিচালক ও প্রধান কমউনিকেশনস সাবিলা ইনুন।

অনুষ্ঠানে পুরস্কার বিতরণী শেষে জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী তাহসান খানের  সংগীত পরিবেশিত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০১২০ ঘন্টা, মার্চ ০৭, ২০২১
এসজেএ/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad