ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘প্রাপ্তবয়স্ক টয়’ বাণিজ্য

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২১
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘প্রাপ্তবয়স্ক টয়’ বাণিজ্য

ঢাকা: ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের যৌন উদ্দীপক টয়ের বিজ্ঞাপন। এরপর ক্রেতারা আকৃষ্ট হলে উচ্চমূল্যে এসব সামগ্রী বিক্রি করতো একটি চক্র।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন কিছু পেজ ও গ্রুপকেন্দ্রিক অনুসন্ধানের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর পল্লবী এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের মূল হোতাসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডির সাইবার ইনভেস্টিগেশন টিম।

গ্রেফতাররা হলেন- রেজাউল আমিন হৃদয় (২৭), মীর হিসামউদ্দিন বায়েজিদ (৩৮), মো. সিয়াম আহমেদ ওরফে রবিন (২১), মো. ইউনুস আলী (৩০), আরজু ইসলাম জিম (২২) ও চক্রের মূল হোতা মো. মেহেদী হাসান ভূইয়া ওরফে সানি (২৮)।

এসময় তাদের কাছ থেকে ১২ লাখ টাকার টয়, ৫টি মোবাইল ফোন, ১টি ল্যাপটপ ও ৯টি সিম কার্ড জব্দ করা হয়। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির সদরদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান সিআইডির সাইবার ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. কামরুল আহসান।

তিনি বলেন, গত ৭ জানুয়ারি রাজধানীর মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ও লেভেলের ছাত্রী আনুশকার ধর্ষণের ফলে মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তে জানা যায়, বিকৃত যৌনাচার ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যায় সে। বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুসারে আনুশকাকে নির্যাতনের সময় এক ধরনের ফরেন বডি ব্যবহার করেছিল। আনুশকার মৃত্যুর বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।

বিষয়টি সিআইডির সাইবার মনিটরিং এবং সাইবার ইনভেস্টিগেশন টিমের নজরে আসে। বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে জানা যায়, কয়েকটি সংঘবদ্ধচক্র নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজে দেশে বিক্রি নিষিদ্ধ যৌন উদ্দীপক বিভিন্ন পণ্যের ছবি এবং ভিডিওসহ বিক্রির বিজ্ঞাপন দিচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, সংঘবদ্ধ চক্রটি বিদেশ থেকে অবৈধ পণ্য আমদানির আড়ালে এসব নিষিদ্ধ পণ্য বাংলাদেশ নিয়ে আসছে। পরবর্তীসময়ে ফেসবুক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লোভনীয় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে উচ্চমূল্যে বিক্রি করছে। আর এসব পণ্য বিক্রির আর্থিক লেনদেন হয় মোবাইল ওয়ালেটে।

ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম লাইকি, টিকটক ব্যবহার করে একটি ক্লোজ গ্রুপ তৈরি, হোটেল-রেস্টুরেন্ট, ডিজে পার্টির আড়ালে এ ধরনের কর্মকাণ্ড চলছিল।  

দারাজ এসব টয় খোলামেলাভাবে বিক্রি করছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা মাত্র তদন্ত শুরু করেছি। ওয়েবসাইটে যারা এসব বিক্রি করছে তাদের ফুটপ্রিন্ট আছে। বিষয়গুলো আমরা ধরে ধরে কাজ করবো।

এক প্রশ্নের জবাবে সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, এই চক্রের কয়েকটি ওয়েবসাইট আছে। ওই ওয়েবসাইটে যে কেউ প্রবেশ করলেই প্রলুব্ধ হবে। তবে তারা বিশেষ করে ত্রিশোর্ধ্ব গ্রুপকে টার্গেট করে এসব নিষিদ্ধ পণ্য বিক্রি করতো। তাছাড়া একাকিত্ব জীবনযাপন করছে যারা তাদেরও টার্গেট করতো চক্রটি।

আমদানি নিষিদ্ধ এসব পণ্য দেশে আসার ক্ষেত্রে কাস্টমসের দায়ভার এড়াতে পারে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২১
পিএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।