ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ২ মাস মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২১
চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ২ মাস মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ২ মাস মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা। ছবি: বাংলানিউজ

চাঁদপুর: জাটকা রক্ষায় চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে সোমবার (০১ মার্চ) থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সব ধরনের মাছ ধরা, ক্রয়-বিক্রয়, মওজুদ ও পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

নদীর অভয়াশ্রম এলাকা চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত প্রায় ৯০ কিলোমিটার এলাকায় এ নিষেধাজ্ঞা।

এদিকে মাছ ধরায় বিরত থাকা জেলেদের জন্য বিপরীতে ফেব্রুয়ারি থেকে মে এই চার মাস ৪০ কেজি চাল খাদ্য সহায়তা হিসাবে দেওয়া হবে। জেলার ৫১ হাজার নিবন্ধিত জেলে এ সহায়তার আওতায় আসবেন।  

চাঁদপুর জেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে জেলা টাস্কফোর্স, মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, সদর ও হাইমচর উপজেলা টাস্কফোর্স জনপ্রতিনিধি, জেলে নেতা ও জেলেদের নিয়ে প্রস্তুতিমূলক সভা করেছেন।  

এছাড়াও নদী উপকূলীয় জেলেপাড়া ও মৎস্য আড়তগুলোতে জাটকা না ধরার জন্য সচেতনতামূলক সভা, লিফলেট বিতরণ ও ব্যানার সাঁটানো হয়েছে।  

হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী এলাকার জেলে বিল্লাল গাজী বাংলানিউজকে বলেন, জাটকা ধরায় সরকার নিষেধাজ্ঞায় হাইমচরের জেলেরা তাদের নৌকা ও জাল ডাঙায় উঠিয়ে রাখেন। কিন্তু শরীয়তপুর, বরিশালের হিজড়া ও মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর থেকে এক শ্রেণীর মৌসুমী অসাধু জেলে এসে জাটকার অন্যতম বিচরণ ক্ষেত্রে হাইমচর থেকে জাটকা ধরে নিয়ে যান। তাই, মেঘনা নদীর এই এলাকাটি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে কড়া নজরদারির দাবি জানাচ্ছি।

একই এলাকার জেলে মো. নোয়াব মিজি বাংলানিউজকে বলেন, দু’মাসের জন্য সরকার আমাদের যে খাদ্য সহায়তা দেয়, তা দিয়ে সংসার চলে না। খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি যদি কিছু নগদ অর্থ দেয়, তবে কোনো রকম সংসার চলবে।  

হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ আ. জলিল বাংলানিউজকে বলেন, জাটকার অভয়াশ্রম হিসেবে চরভৈরবী অন্যতম পয়েন্ট। আমরা স্থানীয় জেলেদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভা করেছি। তাদের মাছ না ধরার জন্য নিষেধ করা হয়েছে। তারপরও কেউ নদীতে নামলে আইনানুগ ব্যবস্থা করা হবে।

হাইমচর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, জাটকা রক্ষার জন্য মার্চ-এপ্রিল দু’মাস নির্ধারিত। এই দু’মাস উপজেলা টাস্কফোর্স রুটিন অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টা নদীতে দায়িত্ব পালন করবেন।

মতলবউ উত্তর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনোয়ারা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, জাটকা সংরক্ষণের জন্য জেলেপাড়া ও আড়তগুলোতে মাইকিং করে, লিফলেট বিতরণ ও ব্যানার সাঁটিয়ে প্রচারণা করা হচ্ছে এবং ২৪ ঘণ্টা অভিযান চলবে। মাছ ধরায় বিরত থাকা নিবন্ধিত জেলেদের মধ্যে ০১ মার্চ থেকে খাদ্য সহায়তার চাল বিতরণ করা হবে।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকি বাংলানিউজকে বলেন, রোববার ভোর থেকে মতলব উত্তর ও হাইমচরে কোস্টগার্ড এবং নৌ-পুলিশের সহায়তায় মৎস্য বিভাগ দু’টি টিম কাজ করবে। আমাদের এই কাজে রাতে ও দিনে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা নদীতে অবস্থান করবেন। আইন অমান্যকারী জেলেদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ভ্রাম্যমাণ আদালতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) অনঞ্জনা খান মজলিশ বাংলানিউজকে বলেন, দু’মাস জেলার ৫১ হাজার ১৯০ জন নিবন্ধিত জেলে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকবেন। তাদের আমরা চার মাস ৪০ কেজি করে ১৬০ কেজি করে চাল দেব। যেন তাদের কোনো ধরনের অসুবিধা না হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২১
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।