ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২১ মহররম ১৪৪৭

জাতীয়

চা দোকানিকে ২৫ লাখ টাকার দোকান দিলেন কাদের সিদ্দিকী

সুমন কুমার রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:১৪, জানুয়ারি ২৬, ২০২১
চা দোকানিকে ২৫ লাখ টাকার দোকান দিলেন কাদের সিদ্দিকী চা বানাচ্ছেন চায়না বেগম। ছবি: বাংলানিউজ

টাঙ্গাইল: চায়না বেগম (৪৫)। বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার সহদেবপুর ইউনিয়নের গোপিনাথপুর গ্রামে।

পাঁচ মাসের মেয়ে রেখে তার স্বামী শাহজাহান মারা যান প্রায় ২০ বছর আগে।  

এরপর চায়না বেগমের জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। মেয়েকে লালনপালন করতে শুরু হয় জীবন যুদ্ধ। এ কারণে চায়না বেগম প্রায় ১৫ বছর আগে গ্রামের বাড়ি থেকে চলে আসেন টাঙ্গাইল পৌর এলাকার পশ্চিম আকুরটাকুর পাড়ায়। সেখানে ৮০০ টাকায় ছোট একটি ঘর ভাড়া নেন। এরপর শহরের কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম-এর বাসভবন ‘সোনার বাংলা’ এবং টাঙ্গাইল প্রেসক্লাব ভবনের মাঝখানে শুরু করেন চায়ের দোকান। প্রতিদিন যা আয় হয় তা দিয়েই চলে চায়না বেগমের সংসার। সংসারে অভাব অনটনের কারণে মেয়েকে অপ্রাপ্ত বয়সেই বিয়ে দিয়ে দেন তিনি।  

এক বছর পরেই তার মেয়ে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। এর মধ্যেই মেয়ের জামাই বায়না ধরেন বিদেশ যাবেন। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ধারদেনা করে প্রায় তিন লাখ টাকা এনে দেন মেয়ের জামাইকে দেন বিদেশ যাওয়ার জন্য। টাকা পেয়ে বিদেশে পারি জমান মেয়ের জামাই। এরপর থেকে আর কোনো খোঁজ নেই তার। তবে চায়না বেগম শুনেছেন তার মেয়ের জামাই আরেকটি বিয়ে করেছেন। এরপর আবার নেমে আসে তার জীবনে অন্ধকার। মেয়ে এবং নাতনিকে লালন-পালন করতে আবার শুরু হয় রাত-দিন সংগ্রাম। এরই মধ্যে কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তমের সহধর্মিণী নাসরিন সিদ্দিকীর নজরে পরে চায়নার জীবন সংগ্রাম। তিনি (নাসরিন সিদ্দিকী) দেরি না করে তাৎক্ষণিক তার স্বামীকে বিষয়টি জানান এবং চায়নাকে একটি দোকানের ব্যবস্থা করে দিতে বলেন।  

স্ত্রীর কথা শুনে কাদের সিদ্দিকী তার নিজ বাসভবনের নিচ তলার মার্কেটে একটি দোকান নিজ খরচে টাইলস, লাইটিং, পানির লাইন এবং অন্যান্য আসবাবপত্র দিয়ে সাজিয়ে চায়না বেগমকে উপহার দেন।

এদিকে প্রায় ২৫ লাখ টাকা মূল্যের দোকান উপহার পেয়ে চায়না খুবই খুশি এবং আনন্দিত। তিনি বলেন, স্যার (কাদের সিদ্দিকী) এবং ম্যাডাম (নাসরিন সিদ্দিকী) দোকানটি আমাকে উপহার দিয়েছেন। শুধু দোকানই নয়, আমার মেয়েকেও একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তাদের জন্য দোয়া ছাড়া আর কিছুই করার নেই। আমি এবং আমার মেয়ে যতদিন বেঁচে আছি ততদিন তাদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করে যাবো।

কাদের সিদ্দিকী বাংলানিউজকে জানান, চায়না খুবই অসহায়। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি এবং তার স্ত্রী দেখে আসছেন চায়না বেগম দিন-রাত ফুটপাতে বসে চা বিক্রি করছেন। সে যেন ভালভাবে চলতে পারে এজন্য তার স্ত্রীর পরামর্শে এবং অনুরোধে চায়নাকে দোকানটি উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছে।  

বাংলদেশ সময়; ১৫১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।