ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

তরিকুল খুন: নির্বাচনের আগের রাতেই হামলার পরিকল্পনা হয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২১
তরিকুল খুন: নির্বাচনের আগের রাতেই হামলার পরিকল্পনা হয় পুলিশের সংবাদ সম্মেলন ও গ্রেফতার জাহিদুল। ছবি: বাংলানিউজ

সিরাজগঞ্জ: ভোটে হেরে গেলেই কাউন্সিলর প্রার্থী তরিকুল ইসলামের ওপর হামলা চালানো হবে বলে পরিকল্পনা হয়। নির্বাচনের আগের রাতে আসামিরা গোপন বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেন।

সেইভাবে প্রস্তুতি নিয়েই পরদিন ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হন আসামিরা।  

কাউন্সিলর তরিকুল হত্যায় সরাসরি অংশ নেওয়া জাহিদুল ইসলাম (২০) প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে এমন তথ্য দিয়েছে। বার বার পরাজিত হওয়ায় অপর প্রার্থী ও মামলার প্রধান আসামি শাহাদত হোসেন বুদ্দিন এবং তার সমর্থকরা এ পরিকল্পনা করে বলে জানায় করে জাহিদুল।  

শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জ সদর থানা ক্যাম্পাসে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম এতথ্য জানান।  

এর আগে বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) গভীর রাতে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার ধলপুর এলাকা থেকে জাহিদুলকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার সাহেদনগর ব্যাপারীপাড়া মহল্লার টিক্কা ব্যাপারীর ছেলে।  

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম বলেন, জাহিদুলকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি উটপাখি প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বীতাকারী কাউন্সিলর প্রার্থী শাহাদত হোসেন বুদ্দিনের সমর্থক হিসেবে নির্বাচনের তিন দিন আগে ঢাকা থেকে সিরাজগঞ্জে আসেন। দুদিন তিনি প্রচারণায় অংশ নেন। নির্বাচনের আগের দিন অন্যান্য আসামিরা পরিকল্পনা করে এবং তার হাতে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি দেওয়া হয়। এছাড়াও অপর এক আসামির বাড়িতে রাম দাসহ দেশীয় অস্ত্র মজুদ রাখা হয়।  

ফলাফল ঘোষণার সময় প্রার্থী শাহাদত হোসেন বুদ্দিনসহ ছুরি নিয়ে শহিদগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে উপস্থিত হন জাহিদুল। সন্ধ্যা ৭টার দিকে ডালিম প্রতীকের প্রার্থী তরিকুল ইসলাম খান বিজয়ী হলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তরিকুলের পেটে ছুরিকাঘাত করে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন তিনি। এরপর ছুরিটি নিজ বাড়িতে লুকিয়ে রেখে স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার ধলপুরে চলে যান।  

পুলিশ সুপার আরও বলেন, গ্রেফতার জাহিদুলই সরাসরি এ হত্যার সঙ্গে জড়িত। তার দেওয়া তথ্যমতে ব্যাপারীপাড়া মহল্লার একটি পরিত্যক্ত ডোবা থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার বাকি আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের বিভিন্ন টিম কাজ করছে। আশা করছি অল্পদিনের মধ্যেই আমরা ভাল কিছু করতে পারবো।  

সংবাদ সম্মেলনে সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) স্নিগ্ধ আক্তার, প্রেসক্লাবের সভাপতি হেলাল উদ্দিন, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাহাউদ্দিন ফারুকী ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।  

শনিবার (১৬ জানুয়ারি) সিরাজগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৮৫ ভোটে বিজয়ী হন তারিকুল ইসলাম। ফলাফল ঘোষণার পর প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে আহত হন তিনি। পরে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়ার পরে মারা যান। এ ঘটনায় রোববার (১৭ জানুয়ারি) রাতে নিহতের ছেলে ইকরামুল হাসান হৃদয় বাদী হয়ে পরাজিত প্রার্থী ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসেন বুদ্দিনসহ ৩২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪০/৫০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার ৪ দিন পর মূল হত্যাকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর আগে স্বপন ব্যাপারী নামে মামলার ২৭ নম্বর আসামি গ্রেফতার হয়ে জেলহাজতে রয়েছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।