ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দুপুরের মধ্যেই দৃশ্যমান হতে যাচ্ছে পদ্মা সেতুর ৬ কিলোমিটার

সাজ্জাদ হোসেন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০২০
দুপুরের মধ্যেই দৃশ্যমান হতে যাচ্ছে পদ্মা সেতুর ৬ কিলোমিটার চলছে ৪০তম স্প্যান বসানোর কাজ, ছবি: বাংলানিউজ

পদ্মাসেতু এলাকা থেকে (মুন্সিগঞ্জ): পদ্মা সেতুতে ৪০তম স্প্যান 'টু-ই' বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে সেতুর ১১ ও ১২ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হচ্ছে এ স্প্যানটি।

  আর এর মাধ্যমে দৃশ্যমান হতে যাচ্ছে পদ্মা সেতুর ৬ কিলোমিটার (৬ হাজার মিটার)।

পদ্মার মূল নদীতে অবস্থিত এ দুই পিলারে বসানোর মাধ্যমে দৃশ্যমান হবে সেতুর ছয় কিলোমিটার। তখন ৬ হাজার ১৫০ মিটার সেতুর মাত্র ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি স্প্যান বসানো বাকি থাকবে। ৩৯তম স্প্যান বসানোর সাতদিনের মাথায় এ স্প্যান বসানোর কার্যক্রম শুরু করেছেন দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীরা।

শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে ভাসমান ক্রেনটি স্প্যানটি পিলারের উচ্চতায় তোলার কাজটি শুরু করেছে। এরপর পিলারের মধ্যবর্তী স্থানে নেওয়া হবে।

এদিকে, বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে 'তিয়ান-ই' নামের ভাসমান ক্রেনটি ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের স্প্যানটি নিয়ে রওনা দেয়। এরপর ৪০ মিনিট সময় নিয়ে ১১ ও ১২ নম্বর পিলারের কাছে এসে পৌঁছায়। ওই দিনই ছয়টি ক্যাবলের (তার) মাধ্যমে নোঙর করা হয় ক্রেনটি। শুক্রবার শুধু পিলারের ওপরে স্প্যানটি বসানো হচ্ছে।

পদ্মাসেতুর প্রকৌশলী সূত্র জানিয়েছে, পজিশনিং, এরপর পিলারের উচ্চতায় স্প্যানটি তোলা ও বেয়ারিংয়ের ওপর রাখার ধাপগুলো শুরু হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে দুপুরের আগেই দৃশ্যমান হবে সেতুর ৬ কিলোমিটার (৬ হাজার মিটার)। স্প্যানটি বসানোর জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি আগেই সম্পন্ন করে রাখা হয়েছিল। সকাল থেকে খুঁটিনাটি বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই ও শেষ ধাপের পরীক্ষা-নিরীক্ষাও হয়েছে।

এদিকে, ১১ ও ১২ নম্বর পিলারের আশেপাশে চলাচলকারী নৌযানগুলো যাতে স্প্যান বসানোর কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত না করে, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর জন্য সেনাবাহিনীর বোট সারাক্ষণ সেখানে নজরদারি করছে। নৌযাগুলোকে নিরাপদ দূরত্ব রেখে চলাচলের নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।

প্রকৌশলী সূত্রে জানা গেছে, গেল দুই মাসে টার্গেট অনুযায়ী আটটি স্প্যান বসানো হয়েছে সেতুতে। আর ৪০তম স্প্যানটি বসানো গেলে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে বাকি থাকা ৪১তম স্প্যানও বসিয়ে দেওয়া হবে।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারে প্রথম স্প্যান বসানো হয়। পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রয়োজন হবে ২ হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাব। এছাড়া ২ হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে। মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে বসানো স্প্যানগুলোতে এসব স্ল্যাব বসানো হচ্ছে।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে পদ্মা সেতুর কাঠামো। সেতুর ওপরের অংশে যানবাহন ও নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০২০
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।