ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

‘সারাদিন জাল বাইয়া ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে’

ছোটন সাহা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০২০
‘সারাদিন জাল বাইয়া ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে’ ছবি: বাংলানিউজ

ভোলা: ভাবছিলাম অভিযানের পর ইলিশ মিলবে ভালো, কিন্তু নদীতে মাছ নাই। সারাদিন জাল বাইয়া ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে।

গত এক সপ্তাহে জাল বাইয়া মাত্র চার হাজার টাকার মাছ পাইছি। নদীতে মাছ না পাওয়ায় অভাব-অনটনের মধ্যে আছি।  

মেঘনায় ইলিশ না পাওয়া নিয়ে বাংলানিউজের কাছে কথাগুলো বলছিলেন বশির মাঝি।

জেলে হারুন মাঝি বাংলানিউজকে বলেন, নদীতে মাছ নাই, তাই মাছ ধরতে যাওয়ারও আগ্রহ কুইমা (কমে) গেছে। গত দুইদিন নদীতে যাইয়া ৮শ থেকে ১ হাজার টাকার মাছ পাইছি। গত কয়েকদিনে অনেক টাকা দেনা হইয়া গেছি। এমন হইলে কীভাবে দিন কাটবো?।

নদীতে ইলিশ সংকট নিয়ে এমন সমস্যা শুধু বশির ও হারুন মাঝির নয়, এমন সমস্যা এখন ভোলার বেশির ভাগ জেলের।

ভোলার মেঘনায় মিলছে না ইলিশ। সারাদিন জাল বেয়ে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ মাছ পাচ্ছেন না জেলেরা। এতে অভাব আর অনিশ্চয়তার মধ্যদিয়ে দিন কাটছে তাদের। পরিবার-পরিজন নিয়েও পড়েছেন দুশ্চিন্তায়।

জেলেরা বাংলানিউজকে জানান, প্রতি বছরই অভিযানের পর নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়তো। কিন্তু এবার ভরা মৌসুমে ইলিশ ধরা পড়ছে না। এতে দুর্দিন চলছে জেলেদের।  
 
এদিকে মাছ না পাওয়ায় ইলিশের ঘাটগুলোতেও কোলাহল কমে গেছে। জেলে, পাইকার ও আড়তদারদের হাক-ডাকে যেসব ঘাট মুখরিত থাকতো, সে সব ঘাট এখন অনকেটাই নিস্তব্ধ। ইলিশ না পাওয়ায় ও দাদনের দায়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত জেলেদের এখন মলিন মুখ।  

ভোলা সদরের তুলাতলী এলাকার কাসেম মাঝি বাংলানিউজকে বলেন, নদীত মাছ খুবই কম, তেল খরচও ওঠে না। মাছ পাওয়ার আশায় ৫ জেলে নিয়ে নদীতে গিয়ে পেয়েছি মাত্র ৭শ টাকার মাছ, এতে আমাদের পুষছে না। পরিবার নিয়ে অভাবে দিন কাটছে।

ইলিশা বিশ্বরোড এলাকার মৎস্য আড়তদার মো. সামসুদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, গত এমন দিনে আমাদের এখানকার আড়তগুলোতে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকার মাছ কেনা-বেচা হতো। কিন্তু এখন হচ্ছে মাত্র ১ লাখ টাকার। এতে আমাদের মতো জেলেরাও লোকসানের মুখে পড়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভোলার জেলেদের ধরা মাছ স্থানীয় আড়তে বিক্রি হয়। সেখান থেকে ঢাকা, বরিশাল ও চাঁদপুরের পাইকারি বাজারে চলে যায়। কিন্তু ইলিশ সংকটের কারণে লোকসানের মুখে মৎস্যজীবীরা। স্থানীয় বাজারেও ইলিশ মিলছে না।

এ ব্যাপারে ভোলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, নভেম্বর মাসের শেষ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এক মাস সাধারণত তেমন মাছের ধরা পড়ে না, তবে জানুয়ারি থেকে মাছ ধরার পড়বে বলে আমরা মনে করছি।  

তিনি বলেন, এবার আমাদের ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন। জানুয়ারি থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরার পড়লে, আশা করি ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র অর্জিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০২০
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।